অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৪৮
‘যাহা আরম্ভ করিয়াছ, সেই কার্য্য সমাপ্ত কর’
‘যাহা আরম্ভ করিয়াছ, সেই কার্য্য সমাপ্ত কর।’—২ করি. ৮:১০, ১১.
গান সংখ্যা ৪২ ‘দুর্ব্বলদিগের সাহায্য কর’
সারাংশ *
১. যিহোবা আমাদের কী করার সুযোগ দেন?
যিহোবা আমাদের সবাইকে জীবনে বাছাই করার সুযোগ দেন। তিনি আমাদের শেখান, কীভাবে উত্তম বাছাইগুলো করা যায় আর আমরা যখন এমন সিদ্ধান্তগুলো নিই, যেগুলো তাঁকে খুশি করে, তখন তিনি আমাদের সফল হতে সাহায্য করেন। (গীত. ১১৯:১৭৩) তাই, আমরা যখন ঈশ্বরের বাক্যে পাওয়া প্রজ্ঞাকে কাজে লাগাই, তখন আমরা আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারি।—ইব্রীয় ৫:১৪.
২. সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আমরা হয়তো কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হই?
২ আমরা এমনকী বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত নিলেও সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করার পর, তা শেষ করা আমাদের জন্য হয়তো কঠিন হতে পারে। কয়েকটা উদাহরণ বিবেচনা করুন: একজন অল্পবয়সি ভাই সম্পূর্ণ বাইবেল পড়ার সিদ্ধান্ত নেন। কয়েক সপ্তাহ তিনি বাইবেল পড়লেও কিছু কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। একজন বোন নিয়মিত অগ্রগামী হিসেবে সেবা করার সিদ্ধান্ত নেন কিন্তু তিনি কবে থেকে তা শুরু করবেন, সেই তারিখ খালি পিছোতে থাকেন। প্রাচীনগোষ্ঠী একতাবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নেন যে, তারা মণ্ডলীতে আরও বেশি করে পালকীয় সাক্ষাৎ করবেন কিন্তু বেশ কয়েক মাস কেটে যাওয়ার পরও তারা তা শুরু করেন না। এই পরিস্থিতিগুলো আলাদা হলেও এগুলোর মধ্যে একটা মিল রয়েছে। তারা সিদ্ধান্ত তো নেন কিন্তু সেই অনুযায়ী সম্পূর্ণরূপে কাজ করেন না। প্রথম শতাব্দীর করিন্থের খ্রিস্টানরা একই ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হয়েছিল। আমরা তাদের কাছ থেকে কী শিখতে পারি, আসুন তা নিয়ে আলোচনা করি।
৩. করিন্থীয়েরা কোন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কিন্তু কী ঘটেছিল?
৩ প্রায় ৫৫ খ্রিস্টাব্দে করিন্থীয়েরা একটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়। তারা জানতে পারে যে, যিরূশালেম ও যিহূদিয়ার ভাইয়েরা কঠিন পরিস্থিতি ও দরিদ্রতার মধ্যে রয়েছে এবং অন্য মণ্ডলীগুলো তাদের সাহায্য করার জন্য অর্থ সংগ্রহ করছে। দয়া ও উদারতার বশবর্তী হয়ে করিন্থীয়েরাও তাদের সাহায্য করতে চায় আর তাই তারা প্রেরিত পৌলের কাছে ১ করি. ১৬:১; ২ করি. ৮:৬) এর কয়েক মাস পর পৌল জানতে পারেন, করিন্থীয়েরা নিজেদের কথা অনুযায়ী দান দেয়নি। এর ফলে, তাদের দান অন্যান্য মণ্ডলীর দানের সঙ্গে যিরূশালেম নিয়ে যাওয়ার জন্য সম্ভবত উপযুক্ত সময়ে সঞ্চিত হয়নি।—২ করি. ৯:৪, ৫.
জানতে চায়, কীভাবে তারা সাহায্য করতে পারে। পৌল মণ্ডলীতে বিভিন্ন নির্দেশনা পাঠান এবং তীতকে দানের অর্থ সংগ্রহ করতে সাহায্য করার জন্য নিযুক্ত করেন। (৪. দ্বিতীয় করিন্থীয় ৮:৭, ১০, ১১ পদে যেমন তুলে ধরা হয়েছে, পৌল করিন্থীয়দের কী করার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন?
৪ করিন্থীয়েরা এক উত্তম সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আর পৌল তাদের অসাধারণ বিশ্বাসের এবং উদারতা দেখানোর বিষয়ে আন্তরিক আকাঙ্ক্ষার জন্য তাদের প্রশংসা করেছিলেন। এ ছাড়া, তিনি তাদের এই বিষয়ে উৎসাহিত করেছিলেন যে, তারা যা শুরু করেছে, তা যেন শেষ করে। (পড়ুন, ২ করিন্থীয় ৮:৭, ১০, ১১.) তাদের অভিজ্ঞতা আমাদের শেখায় যে, এমনকী বিশ্বস্ত খ্রিস্টানদের পক্ষেও কোনো উত্তম সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করা কঠিন হতে পারে।
৫. আমরা কোন প্রশ্নগুলোর উত্তর দেব?
৫ করিন্থীয়দের মতো আমরাও আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করাকে কঠিন বলে মনে করতে পারি। কেন? অসিদ্ধতার কারণে আমরা হয়তো গড়িমসি করে থাকি। অথবা অপ্রত্যাশিত ঘটনাগুলো হয়তো আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করাকে অসম্ভব করে তোলে। (উপ. ৯:১১; রোমীয় ৭:১৮) আমরা যদি আমাদের অতীতের কোনো সিদ্ধান্তকে পরীক্ষা করে দেখতে চাই এবং তাতে কোনো পরিবর্তন করার প্রয়োজন আছে কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাই, তা হলে আমাদের অবশ্যই কী করতে হবে? আর কীভাবে আমরা আমাদের কাজ শেষ করার বিষয়ে আরও বেশি কার্যকারী হতে পারি?
সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে
৬. কখন আমাদের সিদ্ধান্তে রদবদল করার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে?
৬ কোনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আমরা কখনো পরিবর্তন করব না। উদাহরণ স্বরূপ, আমরা যিহোবার সেবা করার বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকি এবং আমরা আমাদের বিবাহসাথির প্রতি বিশ্বস্ত থাকার বিষয়ে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ। (মথি ১৬:২৪; ১৯:৬) তবে, অন্যান্য সিদ্ধান্তে আবার রদবদল করার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। কেন? কারণ আমাদের পরিস্থিতি পালটে যায়। কোন পদক্ষেপগুলো সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সাহায্য করতে পারে?
৭. কী চেয়ে আমাদের প্রার্থনা করা উচিত এবং কেন?
৭ প্রজ্ঞা চেয়ে প্রার্থনা করুন। যিহোবা যাকোবকে এই কথাগুলো লিখতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন: “যদি তোমাদের কাহারও জ্ঞানের [“প্রজ্ঞার,” ইজি-টু-রিড ভারশন] অভাব হয়, তবে সে ঈশ্বরের কাছে যাচ্ঞা করুক; তিনি সকলকে অকাতরে দিয়া থাকেন।” (যাকোব ১:৫) কোনো কোনো বিষয়ে আমাদের সবারই “প্রজ্ঞার অভাব” রয়েছে। তাই, উভয় সময়ে অর্থাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার এবং কোনো সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দেখার সময়ে যিহোবার উপর নির্ভর করুন। এমনটা করলে, যিহোবা আপনাকে বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবেন।
৮. কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের কী নিয়ে গবেষণা করা উচিত?
৮ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে গবেষণা করুন। ঈশ্বরের বাক্যের পরামর্শ বিবেচনা করুন, যিহোবার সংগঠনের কাছ থেকে পাওয়া প্রকাশনাগুলো পড়ুন এবং এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলুন, যারা আপনাকে বিজ্ঞ পরামর্শ দেবে। (হিতো. ২০:১৮) চাকরি পরিবর্তন করার, অন্য কোনো এলাকায় গিয়ে বাস করার অথবা আপনার পরিচর্যাকে সমর্থন করার জন্য উপযুক্ত শিক্ষা বাছাই করার আগে এই ধরনের গবেষণা করা গুরুত্বপূর্ণ।
৯. আমরা যদি নিজেদের প্রতি সৎ হই, তা হলে কীভাবে আমরা উপকৃত হতে পারি?
৯ আপনার উদ্দেশ্য যাচাই করুন। আমাদের “আত্মা [‘উদ্দেশ্য,’ বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন]” যিহোবার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। (হিতো. ১৬:২) তিনি চান যেন আমরা সমস্ত বিষয়ে সৎ হই। তাই, আমরা যখন সিদ্ধান্ত নিই, তখন আমরাও চাই যেন আমাদের উদ্দেশ্য সৎ হয়। আমরা যদি সম্পূর্ণরূপে সৎ না হই, তা হলে আমাদের পক্ষে হয়তো সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করা কঠিন হয়ে যাবে। উদাহরণ স্বরূপ, একজন অল্পবয়সি ভাই হয়তো নিয়মিত অগ্রগামী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে, কিছু সময় পর তার পক্ষে হয়তো নিয়মিত অগ্রগামীদের জন্য নির্ধারিত ঘণ্টা পূরণ করা কঠিন হয়ে যায় এবং তিনি হয়তো পরিচর্যায় আনন্দ হারিয়ে ফেলেন। তিনি হয়তো ভাবতে পারেন, অগ্রগামী হিসেবে সেবা করার পিছনে তার প্রধান উদ্দেশ্য হল তিনি যিহোবাকে খুশি করতে চান। কিন্তু, হতে পারে তিনি আসলে তার বাবা-মা অথবা অন্য কাউকে খুশি করতে চাওয়ার কারণে অগ্রগামী হিসেবে সেবা করছিলেন।
১০. পরিবর্তন করার জন্য কীসের প্রয়োজন হয়?
১০ একজন বাইবেল ছাত্রের পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করুন, যিনি ধূমপান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। তার জন্য কঠিন হলেও তিনি এক অথবা দুই সপ্তাহ ধূমপান করেননি। কিন্তু, তারপর তিনি আবারও ধূমপান করেন। তবে, পরিশেষে তিনি সফল হন! যিহোবার প্রতি ভালোবাসা এবং তাঁকে খুশি করার আকাঙ্ক্ষা তাকে এই অভ্যাস কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেছে।—১১. কেন আমাদের অবশ্যই নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থাপন করতে হবে?
১১ নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থাপন করুন। আপনি যদি নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থাপন করেন, তা হলে তা অর্জন করা সম্ভবত আপনার জন্য আরও সহজ হবে। উদাহরণ স্বরূপ, আপনি হয়তো প্রতিদিন বাইবেল পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু, আপনি যদি একটা নির্দিষ্ট তালিকা তৈরি না করেন, তা হলে আপনি হয়তো আপনার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন না। * অথবা মণ্ডলীর প্রাচীনরা হয়তো আরও বেশি করে পালকীয় সাক্ষাৎ করার সিদ্ধান্ত নেন কিন্তু কিছু সময় পর তারা তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করতে ব্যর্থ হন। সফল হওয়ার জন্য তারা এই ধরনের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পারতেন: “আমরা কি সেই ভাই-বোনদের একটা তালিকা তৈরি করেছি, যারা পালকীয় সাক্ষাতের দ্বারা বিশেষভাবে উপকৃত হবে? আমরা কি তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করেছি?”
১২. আমাদের হয়তো কী করার প্রয়োজন হতে পারে এবং কেন?
১২ বাস্তববাদী হোন। আমরা যা-কিছু করতে চাই, সেইসমস্ত কিছু করার মতো সময়, সম্পদ ও শক্তি আমাদের কারো কাছেই নেই। তাই বাস্তববাদী ও যুক্তিবাদী হোন। প্রয়োজনে আপনাকে হয়তো এমন কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হতে পারে, যেটা সম্পাদন করার ক্ষমতা আপনার কাছে নেই। (উপ. ৩:৫, ৬) এভাবে আপনি যখন কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে পুনর্বিবেচনা করেন, প্রয়োজনীয় রদবদল করেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন বলে মনে করেন, তখন কোন পাঁচটা পদক্ষেপ আপনাকে সাহায্য করতে পারে? আসুন, আমরা সেগুলো নিয়ে বিবেচনা করি।
আপনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করার জন্য কিছু পদক্ষেপ
১৩. কোনো সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করার জন্য কীভাবে আপনি প্রয়োজনীয় শক্তি লাভ করতে পারেন?
১৩ কাজ করার শক্তি চেয়ে প্রার্থনা করুন। ঈশ্বর আপনাকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘কার্য্য সাধন’ করার ক্ষমতা প্রদান করতে পারেন। (ফিলি. ২:১৩) তাই, প্রয়োজনীয় শক্তি লাভ করার জন্য পবিত্র আত্মা চেয়ে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করুন। আপনি যদি এমনকী মনে করেন যে, আপনার কোনো প্রার্থনার উত্তর এখনও দেওয়া হয়নি, তারপরও ক্রমাগত প্রার্থনা করুন। যিশু যেমন বলেছিলেন, ক্রমাগত “যাচ্ঞা কর, তোমাদিগকে [পবিত্র আত্মা] দেওয়া যাইবে।”—লূক ১১:৯, ১৩.
১৪. লূক ১৪:২৮ পদে পাওয়া নীতি কীভাবে আপনাকে আপনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করার জন্য সাহায্য করতে পারে?
১৪ পরিকল্পনা করুন। (পড়ুন, লূক ১৪:২৮.) কোনো কাজ শুরু করার পর তা শেষ করার জন্য আপনাকে পরিকল্পনা করতে হবে। তারপর, আপনাকে সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। একইভাবে, আপনি যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেন, তখন সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করার জন্য আপনি যে-নির্দিষ্ট পদক্ষেপগুলো নিতে চান, সেগুলোর একটা তালিকা তৈরি করুন। আপনাকে যখন কোনো জটিল কাজ করতে হয়, তখন সেই কাজকে এক বারে করার পরিবর্তে একটু একটু করে তা করুন। এভাবে আপনি যখন কাজ করেন, তখন আপনি দেখতে পাবেন যে, আপনি ধীরে ধীরে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। পৌল করিন্থীয়দের উৎসাহিত করেছিলেন যেন তারা দান দেওয়ার জন্য “সপ্তাহের প্রথম দিনে” কিছু অর্থ আলাদা করে রাখে, যাতে তিনি আসার পর তাদের অর্থ সংগ্রহ করতে না হয়। (১ করি. ১৬:২) এ ছাড়া, জটিল কাজগুলো এক বারে করার পরিবর্তে একটু একটু করে করা আপনাকে চাপগ্রস্ত হয়ে পড়ার হাত থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারে।
১৫. কী আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করতে সাহায্য করবে?
১৫ আপনি যা করতে চান, তা যদি লিখে রাখেন, তা হলে আপনার জন্য সেটা করা আরও সহজ হবে। (১ করি. ১৪:৪০) উদাহরণ স্বরূপ, প্রাচীনগোষ্ঠী একজন প্রাচীনকে নিযুক্ত করেন, যিনি প্রাচীনগোষ্ঠীর নেওয়া প্রতিটা সিদ্ধান্ত লিখে রাখেন, যার অন্তর্ভুক্ত হল কাকে কার্যভার দেওয়া হয়েছে এবং কখন সেই কার্যভার শেষ করতে হবে। প্রাচীনরা যখন এই নির্দেশনা অনুসরণ করেন, তখন তাদের জন্য সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করা আরও সহজ হয়ে যায়। (১ করি. ৯:২৬) আপনার দৈনন্দিন জীবনেও আপনি এই পরামর্শ কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে পারেন। উদাহরণ স্বরূপ, আপনাকে প্রতিদিন যা যা করতে হয়, সেগুলোর একটা তালিকা তৈরি করতে পারেন এবং কার পর কোনটা করতে চান, সেই অনুযায়ী তালিকা সাজাতে পারেন। আপনি যদি এমনটা করেন, তা হলে আপনি যা শুরু করেছেন, তা আরও সহজে শেষ করতে পারবেন এবং আপনার হাতে অন্যান্য কাজ করার জন্য সময় থাকবে।
১৬. আপনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করার জন্য কী করা গুরুত্বপূর্ণ এবং কীভাবে রোমীয় ১২:১১ পদ এটাকে সমর্থন করে?
১৬ আপ্রাণ চেষ্টা করুন। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা এবং যা শুরু করেছেন, তা শেষ করার জন্য প্রচেষ্টার প্রয়োজন হয়। (পড়ুন, রোমীয় ১২:১১.) পৌল তীমথিয়কে বলেছিলেন যেন তিনি আরও ভালো শিক্ষক হয়ে ওঠার প্রচেষ্টায় “নিবিষ্ট” থাকেন এবং “স্থির” থাকেন। এই পরামর্শ অন্যান্য আধ্যাত্মিক লক্ষ্যের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রযোজ্য।—১ তীম. ৪:১৩, ১৬.
১৭. ইফিষীয় ৫:১৫, ১৬ পদ কীভাবে আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে সাহায্য করে?
১৭ বিজ্ঞতার সঙ্গে সময় ব্যবহার করুন। (পড়ুন, ইফিষীয় ৫:১৫, ১৬.) আপনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করার জন্য সময় বেছে নিন এবং তাতে স্থির থাকুন। কাজ শুরু করার জন্য একেবারে সঠিক সময়ের অপেক্ষা করা এড়িয়ে চলুন; একেবারে সঠিক সময় সম্ভবত কোনো দিনও আসবে না। (উপ. ১১:৪) শ্রেয় বা বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো করার জন্য প্রয়োজনীয় সময় ও শক্তিকে কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো করার জন্য ব্যয় না করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। (ফিলি. ১:১০, পাদটীকা) সম্ভব হলে এমন সময় বাছাই করুন, যখন অন্যেরা সম্ভবত আপনার কাজে বাধা দেবে না। অন্যদের জানান যে, মনোযোগ দিয়ে কাজ করার জন্য আপনার সময়ের প্রয়োজন রয়েছে। আপনার ফোন বন্ধ করার এবং ই-মেল অথবা সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়গুলো অন্য কোনো সময়ে চেক করার বিষয়টা বিবেচনা করে দেখতে পারেন। *
১৮-১৯. আপনি যখন হতাশার মুখোমুখি হন, তখন কী আপনাকে উত্তম সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করার বিষয়ে হাল ছেড়ে না দেওয়ার জন্য সাহায্য করতে পারে?
১৮ ফলাফলের উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন। আপনার সিদ্ধান্তের ফলাফল হল কোনো যাত্রার গন্তব্যের মতো। আপনি যদি সত্যিই সেই গন্তব্যে পৌঁছাতে চান, তা হলে আপনাকে ক্রমাগত যাত্রা করতে হবে আর তা এমনকী সেইসময়েও, যখন আপনি জানতে পারেন যে, গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে অন্য একটা পথ দিয়ে যাত্রা করতে হবে। একইভাবে, আমরা যদি আমাদের সিদ্ধান্তের ফলাফল নিয়ে চিন্তা করি, তা হলে আমরা হতাশা অথবা বাধার সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও সহজে হাল ছেড়ে দেব না।—গালা. ৬:৯.
১৯ উত্তম সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করা এক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। কিন্তু, যিহোবার সাহায্য আপনি প্রয়োজনীয় প্রজ্ঞা ও শক্তি লাভ করতে পারেন, যাতে আপনি যা শুরু করেছেন, তা শেষ করতে পারেন।
গান সংখ্যা ৪৫ এগিয়ে চলো!
^ অনু. 5 আপনি কি আপনার কিছু সিদ্ধান্তের জন্য আপশোস করেন? অথবা আপনি কি কখনো কখনো উত্তম সিদ্ধান্ত নেওয়াকে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করাকে কঠিন বলে মনে করেন? এই প্রবন্ধ আপনাকে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং আপনি যা শুরু করেছেন, তা শেষ করতে সাহায্য করবে।
^ অনু. 11 ব্যক্তিগত বাইবেল পাঠের জন্য “বাইবেল পাঠের তালিকা” অনুসরণ করতে পারেন, যেটা jw.org® ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে। প্রকাশনাদি > বই এবং ব্রোশার-এর অধীনে দেখুন।
^ অনু. 17 আপনার সময়কে ব্যবহার করার বিষয়ে আরও পরামর্শের জন্য ২০১৪ সালের এপ্রিল-জুন মাসের সচেতন থাক! পত্রিকায় দেওয়া “যেভাবে আপনার সময়কে বিজ্ঞতার সঙ্গে ব্যবহার করবেন” এবং ২০১০ সালের এপ্রিল মাসের সচেতন থাক! (ইংরেজি) পত্রিকায় দেওয়া “সময় বের করার ২০টা উপায়” শিরোনামের প্রবন্ধগুলো দেখুন।