সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ২০

গান ৬০ জীবন ঝুঁকিতে আছে

ভালোবাসার কারণে প্রচার করে চলুন

ভালোবাসার কারণে প্রচার করে চলুন

“কিন্তু, প্রথমে সমস্ত জাতির কাছে সুসমাচার প্রচার করা হবে।”মার্ক ১৩:১০.

আমরা কী শিখব?

আমাদের মধ্যে যদি ভালোবাসা থাকে, তা হলে আমরা উদ্যোগের সঙ্গে এবং মনপ্রাণ দিয়ে প্রচার করতে পারব।

১. ২০২৩ সালের বার্ষিক সভায় আমাদের কী বলা হয়েছিল?

 ২০২৩ সালের বার্ষিক সভা খুবই রোমাঞ্চকর ছিল। a সেখানে বলা হয়েছিল, বাইবেলের কিছু বিষয়ে আগে আমরা যা জানতাম, তাতে রদবদল করা হয়েছে। আর সেখানে প্রচারের বিষয়ে কিছু ঘোষণাও করা হয়েছিল। আমরা জানতে পেরেছিলাম, মহতী বাবিলের ধ্বংসের পরও লোকদের কাছে হয়তো যিহোবা এবং তাঁর লোকদের পক্ষ নেওয়ার সুযোগ থাকবে। আমরা এও জানতে পেরেছিলাম, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে প্রকাশকদের তাদের রিপোর্টে সমস্ত বিষয় লেখার প্রয়োজন হবে না। তাহলে এর মানে কি এই যে, প্রচার কাজের গুরুত্ব কমে গিয়েছে? না, একেবারেই না!

২. সময় গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রচার কাজ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে? (মার্ক ১৩:১০)

সময় গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের প্রচার কাজ আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কেন? কারণ শেষ আসতে বেশি দেরি নেই। মার্ক বইতে যিশু বলেছিলেন, শেষকালে প্রচার করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। (পড়ুন, মার্ক ১৩:১০.) এই বিষয়ে মথি লিখেছিলেন, ‘শেষ আসার’ আগে সমস্ত পৃথিবীতে প্রচার করা হবে। (মথি ২৪:১৪) এখানে কীসের শেষের কথা বলা হয়েছে? এখানে শয়তানের এই দুষ্ট জগতের শেষের কথা বলা হয়েছে। যিহোবা আগে থেকেই সেই ‘দিন এবং সময়’ ঠিক করে রেখেছেন, যখন তিনি শেষ নিয়ে আসবেন। (মথি ২৪:৩৬; ২৫:১৩; প্রেরিত ১:৭) আর দিন যত এগোচ্ছে, শেষ ততই কাছে চলে আসছে। (রোমীয় ১৩:১১) তাই যতদিন না শেষ আসছে, আমাদের প্রচার করে চলতে হবে।

৩. কেন আমরা প্রচার করি?

আমাদের সবাইকে একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন নিয়ে চিন্তা করতে হবে: কেন আমরা প্রচার করি? ভালোবাসার কারণে। আমরা লোকদের যে-সুসমাচার জানাই, সেটাকে আমরা ভালোবাসি, আমরা লোকদের ভালোবাসি আর সবচেয়ে বেশি আমরা যিহোবা এবং তাঁর নামকে ভালোবাসি। তাই আসুন, আমরা এক এক করে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করি।

আমরা সুসমাচার ভালোবাসি

৪. যখন আমরা কোনো ভালো খবর শুনি, তখন আমাদের কেমন লাগে?

কল্পনা করুন, যখন আপনি শুনেছিলেন, আপনার পরিবারে ছোট্ট একটা সন্তান জন্ম নিয়েছে অথবা আপনি একটা চাকরি পেয়েছেন, তখন আপনার কেমন লেগেছিল! এটা শুনে আপনি নিশ্চয়ই অনেক খুশি হয়েছিলেন এবং আপনি দ্রুত আপনার পরিবারের সদস্যদের অথবা আপনার বন্ধুদের বলেছিলেন। এবার কল্পনা করুন, আপনি যখন পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো খবর শুনেছিলেন অর্থাৎ ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার শুনেছিলেন, তখন আপনার কেমন লেগেছিল!

৫. আপনি যখন প্রথম বার সত্য জেনেছিলেন, তখন আপনার কেমন লেগেছিল? (ছবিগুলোও দেখুন।)

আপনি যখন প্রথম বার ঈশ্বরের বাক্য থেকে সত্য জেনেছিলেন, তখন আপনার কেমন লেগেছিল? যখন আপনি শিখেছিলেন, যিহোবা ঈশ্বর আপনাকে কত ভালোবাসেন এবং তাঁর পরিবারের সদস্য হওয়ার সুযোগ দিতে চান, তখন আপনার কেমন লেগেছিল? আর আপনি যখন জেনেছিলেন যে, তিনি সমস্ত দুঃখকষ্ট দূর করে দেবেন এবং আপনার প্রিয়জনদের নতুন জগতে পুনরুত্থিত করবেন, তখন আপনার কেমন লেগেছিল? (মার্ক ১০:২৯, ৩০; যোহন ৫:২৮, ২৯; রোমীয় ৮:৩৮, ৩৯; প্রকা. ২১:৩, ৪) এই সমস্ত বিষয় জেনে আপনি খুবই খুশি হয়েছিলেন এবং এগুলো আপনার হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছিল! (লূক ২৪:৩২) শুধু তা-ই নয়, আপনি অন্যদেরও এই বিষয়ে বলতে শুরু করেছিলেন।—তুলনা করুন, যিরমিয় ২০:৯.

আমরা যখন প্রথম বার সুসমাচারের বিষয়ে জেনেছিলাম, তখন এটা আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছিল এবং আমরা অন্যদেরও তা বলতে শুরু করেছিলাম (৫ অনুচ্ছেদ দেখুন)


৬. আপনি ভাই আর্নেস্ট এবং বোন রোসের অভিজ্ঞতা থেকে কী শিখেছেন?

একটা উদাহরণের উপর মনোযোগ দিন। ভাই আর্নেস্টের বয়স যখন ১০ বছর ছিল, তখন তার বাবা মারা গিয়েছিল। ভাই বলেন, “আমি চিন্তা করতাম: ‘বাবা কি স্বর্গে চলে গিয়েছে? আমি কি আবারও বাবাকে কখনো দেখতে পাব?’ আমি যখন অন্য বাচ্চাদের তাদের বাবাদের সঙ্গে দেখতাম, তখন আমার খুব হিংসা হত।” ভাই আর্নেস্ট প্রায়ই তার বাবার কবরের সামনে হাঁটু গেড়ে এই প্রার্থনা করতেন, “ঈশ্বর, প্লিজ! আমাকে বলো, আমার বাবা কোথায় আছে।” এর প্রায় ১৭ বছর পর একজন ব্যক্তি ভাইকে বলেছিলেন যে, তিনি বাইবেল অধ্যয়ন করতে চান কি না। ভাই দ্রুত রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি যখন জেনেছিলেন, মৃতেরা ঘুমিয়ে রয়েছে এবং তাদের নতুন জগতে পুনরুত্থিত করা হবে, তখন তিনি অনেক খুশি হয়েছিলেন। (উপ. ৯:৫, ১০; প্রেরিত ২৪:১৫) এত বছর ধরে তিনি যে-প্রশ্নগুলো নিয়ে চিন্তিত ছিলেন, সেগুলোর উত্তর অবশেষে তিনি পেয়েছিলেন। তাই, তিনি বাইবেল থেকে এত ভালো বিষয়গুলো শিখছিলেন বলে অনেক খুশি ছিলেন। তারপর তার স্ত্রী রোসে তার সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করতে শুরু করেছিলেন এবং তারও এই বিষয়গুলো শিখতে খুব ভালো লেগেছিল। ১৯৭৮ সালে তারা দু-জনে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন। তারা বাইবেলের সত্যগুলোকে এত ভালোবেসেছিলেন যে, তারা তাদের পরিবারের সদস্য, বন্ধু এবং অন্যদেরও সেই বিষয়ে বলতে শুরু করেছিলেন। ভাই আর্নেস্ট এবং বোন রোসে ৭০ জনেরও বেশি লোককে সত্য শিখিয়েছিলেন, যারা পরে গিয়ে বাপ্তিস্ম নিয়েছিল।

৭. বাইবেলের সত্যগুলো যখন আমাদের হৃদয়ে গেঁথে যায়, তখন আমরা কী করি? (লূক ৬:৪৫)

বাইবেলের সত্যগুলো যখন আমাদের হৃদয়ে গেঁথে যায়, তখন আমরা চুপ করে থাকতে পারি না, আমরা এই বিষয়ে সবাইকে জানাই। (পড়ুন, লূক ৬:৪৫.) আমরা প্রথম শতাব্দীর সেই শিষ্যদের মতো অনুভব করি, যারা বলেছিল: “আমরা যা দেখেছি ও শুনেছি, তা না বলে থাকতে পারি না।” (প্রেরিত ৪:২০) আমরা সত্যকে অনেক ভালোবাসি, তাই আমরা যতবেশি সম্ভব লোকদের এই বিষয়ে বলতে চাই।

আমরা লোকদের ভালোবাসি

৮. কেন আমরা লোকদের কাছে সুসমাচার জানানোর জন্য এত প্রচেষ্টা করি? ( লোকদের ভালোবাসুন—তাদের শিষ্য করুন বক্স দেখুন।) (ছবিও দেখুন।)

যিহোবা এবং তাঁর পুত্রের মতো আমরাও লোকদের ভালোবাসি। (হিতো. ৮:৩১; যোহন ৩:১৬) যারা ‘ঈশ্বরকে জানে না’ এবং যাদের ‘কোনো প্রত্যাশা নেই,’ তাদের দেখে আমাদের হৃদয় দুঃখে ভরে যায়। (ইফি. ২:১২) সেই লোকেরা সমস্যার জালে জড়িয়ে রয়েছে, কিন্তু আমরা তাদের সেই জাল থেকে উদ্ধার করতে পারি। কীভাবে? আমাদের কাছে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার আছে, যেটার মাধ্যমে আমরা তাদের জীবন রক্ষা করতে পারি। আমরা লোকদের ভালোবাসি, তাদের জন্য চিন্তা করি এবং সুসমাচার জানানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করি। এই সুসমাচার খুবই মূল্যবান। এটা থেকে লোকেরা একটা আশা লাভ করতে পারে। তারা বর্তমানে ভালোভাবে জীবন কাটাতে পারে এবং ভবিষ্যতেও নতুন জগতে “প্রকৃত জীবন” অর্থাৎ অনন্তজীবন লাভ করতে পারে।—১ তীম. ৬:১৯.

আমরা লোকদের ভালোবাসি এবং তাদের জন্য চিন্তা করি, তাই আমরা যখনই সুযোগ পাই, তাদের সুসমাচার জানাই (৮ অনুচ্ছেদ দেখুন)


৯. ভবিষ্যতের বিষয়ে আমরা লোকদের কোন সতর্কবাণী জানাই এবং কেন? (যিহিষ্কেল ৩৩:৭, ৮)

আমরা লোকদের ভালোবাসি, তাই আমরা তাদের এটাও বলি যে, খুব শীঘ্রই শয়তানের এই দুষ্ট জগৎ ধ্বংস হতে চলেছে। (পড়ুন, যিহিষ্কেল ৩৩:৭, ৮.) আমরা যখন দেখি, আমাদের আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীরা তাদের জীবন নিয়ে খুবই ব্যস্ত রয়েছে, তখন আমাদের তাদের প্রতি খুবই মায়া হয়। তারা জানেই না যে, খুব শীঘ্রই এমন মহাক্লেশ হবে, “যা এই জগতের শুরু থেকে এই পর্যন্ত কখনো হয়নি এবং আর কখনো হবেও না।” (মথি ২৪:২১) আমরা তাদের জানাতে চাই, সেই বিচারের সময়ে কী কী হবে। মিথ্যা ধর্মগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে আর তারপর আরমাগিদোনের যুদ্ধে শয়তানের এই জগৎকে শেষ করে দেওয়া হবে। (প্রকা. ১৬:১৪, ১৬; ১৭:১৬, ১৭; ১৯:১১, ১৯, ২০) আমরা প্রার্থনা করি, লোকেরা যাতে এই সতর্কবাণীর প্রতি মনোযোগ দেয় এবং আমাদের সঙ্গে মিলে যিহোবার উপাসনা করতে শুরু করে। তবে, আমাদের আত্মীয়স্বজন আর সেই লোকদের কী হবে, যারা এই সতর্কবাণীর প্রতি মনোযোগ দেয় না?

১০. কেন লোকদের এটা জানানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, ভবিষ্যতে কোন কোন ঘটনা ঘটবে?

১০ আগের প্রবন্ধে আমরা দেখেছিলাম, মহতী বাবিলের ধ্বংস দেখে কিছু লোক হয়তো যিহোবার উপর বিশ্বাস করতে শুরু করবে এবং আরমাগিদোন যুদ্ধে রক্ষা পাবে। তাই চিন্তা করুন, বর্তমানে লোকদের মহাক্লেশ আসার বিষয়ে সতর্কবাণী দেওয়া কতই-না গুরুত্বপূর্ণ! মনে রাখুন, আমরা যদি এখন তাদের এই বার্তা জানাই, তা হলে মহাক্লেশের সময়ে তাদের হয়তো এগুলো মনে পড়বে। (তুলনা করুন, যিহিষ্কেল ৩৩:৩৩.) তাদের হয়তো মনে পড়বে, যিহোবার সাক্ষিরা তাদের বলত যে, ভবিষ্যতে কোন ঘটনাগুলো ঘটবে। এর ফলে, তারা হয়তো শেষ আসার আগে আমাদের সঙ্গে যিহোবার উপাসনা করতে শুরু করবে। মনে করে দেখুন, ফিলিপীর একজন কারারক্ষী একটা “মহাভূমিকম্প” দেখে যিহোবার উপর বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন। ঠিক একইভাবে, আজ যে-সমস্ত লোক আমাদের সুসমাচারের প্রতি মনোযোগ দিচ্ছে না, তারা হয়তো জগৎকে কাঁপিয়ে তোলার মতো ঘটনা দেখে অর্থাৎ মহতী বাবিলের ধ্বংস দেখে যিহোবার উপর বিশ্বাস করতে শুরু করবে।—প্রেরিত ১৬:২৫-৩৪.

আমরা যিহোবা এবং তাঁর নামকে ভালোবাসি

১১. কীভাবে আমরা যিহোবার গৌরব ও সমাদর করি এবং আমাদের ক্ষমতা দিয়ে তাঁর সেবা করি? (প্রকাশিত বাক্য ৪:১১) (ছবিগুলোও দেখুন।)

১১ সুসমাচার জানানোর সবচেয়ে বড়ো কারণ হচ্ছে, আমরা যিহোবা ঈশ্বর এবং তাঁর পবিত্র নামকে খুবই ভালোবাসি। প্রচার করার মাধ্যমে আমরা দেখাই যে, আমরা যিহোবাকে ভালোবাসি আর তাঁর নামের প্রশংসা করতে চাই। (পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ৪:১১.) আমরা এই বিষয়টা স্বীকার করি যে, যিহোবা তাঁর উপাসকদের কাছ থেকে গৌরব, সমাদর ও ক্ষমতা পাওয়ার যোগ্য। যখন আমরা লোকদের এই প্রমাণ দিই যে, ঈশ্বর ‘সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন’ এবং তাঁর কারণেই আমরা অস্তিত্বে এসেছি, তখন আমরা যিহোবার গৌরব ও সমাদর করি। যখন আমরা আমাদের সময়, শক্তি ও টাকাপয়সা প্রচার কাজে ব্যয় করি এবং যতটা সম্ভব প্রচার করি, তখন আমরা আমাদের ক্ষমতা দিয়ে তাঁর সেবা করি। (মথি ৬:৩৩; লূক ১৩:২৪; কল. ৩:২৩) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, আমরা আমাদের পিতা যিহোবাকে খুব ভালোবাসি আর সেইজন্য অন্যদের তাঁর বিষয়ে বলতে আমাদের খুব ভালো লাগে। আমরা লোকদের এও জানাই যে, ঈশ্বরের নাম কী এবং তিনি কেমন।

আমরা যখন আমাদের সময়, শক্তি ও টাকাপয়সা প্রচার কাজে ব্যয় করি এবং যতটা সম্ভব প্রচার করি, তখন আমরা আমাদের ক্ষমতা দিয়ে যিহোবার সেবা করি (১১ অনুচ্ছেদ দেখুন)


১২. প্রচার করার মাধ্যমে কীভাবে আমরা যিহোবার নামকে পবিত্র করি?

১২ আমরা যিহোবাকে ভালোবাসি, তাই আমরা তাঁর নামকে পবিত্র করতে চাই। (মথি ৬:৯) শয়তান যিহোবার বিষয়ে মিথ্যা কথা বলেছিল এবং তাঁর নামের উপর নিন্দা নিয়ে এসেছিল। আর আমরা সেই নিন্দা দূর করতে চাই। (আদি. ৩:১-৫; ইয়োব ২:৪; যোহন ৮:৪৪) প্রচার করার মাধ্যমে আমরা লোকদের জানাতে চাই যে, আমাদের ঈশ্বর কেমন। আমরা চাই যেন সমস্ত লোক জানতে পারে, ঈশ্বরের প্রধান গুণ হল প্রেম আর তাঁর শাসন করার পদ্ধতি সবচেয়ে ভালো এবং সঠিক। আমরা সবাইকে এটাও বলতে চাই, যিহোবা খুব শীঘ্রই তাঁর রাজ্যের মাধ্যমে সমস্ত দুঃখকষ্ট দূর করে দেবেন আর মানুষকে এমন একটা জগৎ দেবেন, যেখানে চারিদিকে শান্তি এবং আনন্দ থাকবে। (গীত. ৩৭:১০, ১১, ২৯; ১ যোহন ৪:৮) আমরা যখন লোকদের এই বিষয়গুলো বলি, তখন আমরা যিহোবার পক্ষ নিই আর তাঁর নামকে পবিত্র করি। আমরা এই বিষয়েও খুশি যে, আমরা আমাদের নাম অনুযায়ী কাজ করি। কীভাবে?

১৩. কেন আমরা যিহোবার সাক্ষি হতে পেরে গর্বিত? (যিশাইয় ৪৩:১০-১২)

১৩ যিহোবা আমাদের তাঁর “সাক্ষী” হিসেবে বেছে নিয়েছেন। (পড়ুন, যিশাইয় ৪৩:১০-১২.) কিছু বছর আগে পরিচালকগোষ্ঠীর একটা চিঠিতে লেখা ছিল: “আমাদের জন্য এটা কতই-না বড়ো এক সম্মানের বিষয় যে, আমাদের যিহোবার সাক্ষি বলা হয়।” এটা যে কত বড়ো এক সম্মানের বিষয়, তা বোঝার জন্য একটা উদাহরণের উপর মনোযোগ দিন। ধরুন, আপনার উপর একটা মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে আসা হয়েছে এবং তা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। এক্ষেত্রে, আপনি কাকে আপনার সাক্ষি হিসেবে বেছে নেবেন? এতে কোনো সন্দেহ নেই, আপনি এমন কাউকে বেছে নেবেন, যাকে আপনি ভালোভাবে জানেন আর যার উপর আপনার সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আপনি এটাও দেখবেন, সেই ব্যক্তির যেন এক সুনাম থাকে, যাতে সমস্ত লোক তার কথায় বিশ্বাস করে। একইভাবে, যিহোবাও আমাদের তাঁর সাক্ষি হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এটা থেকে বোঝা যায় যে, যিহোবা আমাদের ভালোভাবে জানেন এবং আমাদের উপর তাঁর সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তিনি নিশ্চিত, আমরা সবার কাছে এই বিষয়ে সাক্ষ্য দেব যে, তিনিই হলেন সত্য ঈশ্বর। এটা আমাদের জন্য কতই-না বড়ো এক সম্মানের বিষয়, তাই না? সেইজন্য আমরা প্রতিটা সুযোগে ঈশ্বরের নাম সবাইকে জানাই আর তাঁর বিষয়ে যে-মিথ্যা কথাগুলো ছড়ানো হয়েছে, সেগুলোকে আমরা ভুল প্রমাণ করি। আমাদের যে-নামে ডাকা হয়, আমরা সেই নাম অনুযায়ী কাজ করি। যিহোবার সাক্ষি হতে পেরে আমরা সত্যিই খুবই গর্বিত!—গীত. ৮৩:১৮; রোমীয় ১০:১৩-১৫.

শেষ না আসা পর্যন্ত আমরা প্রচার করে চলব

১৪. আমরা কী দেখার জন্য উৎসুক হয়ে রয়েছি?

১৪ আমরা এটা দেখার জন্য উৎসুক হয়ে রয়েছি যে, ভবিষ্যতে কী ঘটবে! আমরা আশা করতে পারি, মহাক্লেশ শুরু হওয়ার আগে অনেক লোক সত্য শিখবে। সেইসঙ্গে আমরা এটা জেনেও খুবই খুশি যে, ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময়ে অর্থাৎ মহাক্লেশের সময়ে অনেক লোক শয়তানের এই দুষ্ট জগৎ ছেড়ে আমাদের সঙ্গে যিহোবার উপাসনা করতে শুরু করবে।—প্রেরিত ১৩:৪৮.

১৫-১৬. (ক) আমরা কোন কাজ করে চলব? (খ) আমরা কতদিন পর্যন্ত এই কাজ করব?

১৫ মহাক্লেশ আসার আগে আমাদের কাছে অনেক কাজ রয়েছে। আমাদের পুরো পৃথিবীতে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার জানাতে হবে। এই কাজটা আর কখনো করা হবে না। কিন্তু, এর পাশাপাশি আমাদের লোকদের সতর্ক করতে হবে। আমাদের তাদের বলতে হবে যে, খুব শীঘ্রই শয়তানের এই দুষ্ট জগৎকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে। এর ফলে, যখন বিচারের সময় আসবে, তখন তারা বুঝতে পারবে, আমরা তাদের যে-বার্তা জানিয়েছিলাম, সেটা আসলে যিহোবা ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছিল।—যিহি. ৩৮:২৩.

১৬ এই সমস্ত কিছু জেনে আমরা কী করব? আমরা আনন্দের সঙ্গে এবং পুরো উদ্যোগের সঙ্গে প্রচার করব কারণ আমরা সুসমাচার, লোকদের আর সবচেয়ে বেশি যিহোবা ঈশ্বর এবং তাঁর নামকে ভালোবাসি। এই কাজ আমরা ততদিন পর্যন্ত করব, যতদিন না যিহোবা বলছেন, “আর প্রচার করতে হবে না।”

গান ৫৪ “এটাই সেই পথ”

a ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, নিউ ইয়র্ক শহরের যিহোবার সাক্ষিদের নিউবার্গ সম্মেলন হলে বার্ষিক সভা হয়েছিল। এই পুরো প্রোগ্রামটা পরে JW ব্রডকাস্টিং-এ দেখানো হয়েছিল। এর প্রথম ভাগটা ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে এবং দ্বিতীয় ভাগটা ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে দেখানো হয়েছিল।