প্রচুর শস্য!
যিশু ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, শেষের এই সময়ে তাঁর অনুসারীরা প্রচুর শস্য কাটবে। (মথি ৯:৩৭; ২৪:১৪) তাঁর এই কথাগুলো কীভাবে ইউক্রেনের ট্র্যান্সকার্পেথিয়ায় এক অদ্বিতীয় উপায়ে পরিপূর্ণ হয়েছে, তা বিবেচনা করুন। সেই এলাকায় মাত্র তিনটে কাছাকাছি শহরে ৫০টা মণ্ডলী ও ৫,৪০০ জনেরও বেশি প্রকাশক রয়েছে। * অবাক হওয়ার মতো বিষয়টা হল, এই তিনটে শহরের মোট জনসংখ্যার প্রতি ৪ জনের মধ্যে ১ জন যিহোবার সাক্ষি!
এই এলাকায় বসবাসরত লোকেরা কেমন? ভাসিলে নামে একজন স্থানীয় ভাই বলেন, “এখানকার লোকেরা বাইবেলকে সম্মান করে, ন্যায়বিচারকে মূল্য দেয়, পরিবারের সঙ্গে দৃঢ় বন্ধন বজায় রাখে এবং একে অন্যকে আন্তরিকভাবে সাহায্য করতে চায়।” তিনি আরও বলেন: “তারা সবসময় আমাদের বিশ্বাসের সঙ্গে একমত হয় না। কিন্তু, আপনি যখন বাইবেল থেকে তাদের কিছু দেখাবেন, তখন তারা মন দিয়ে তা শুনবে।”
অবশ্য, যেহেতু সেখানকার ভাই-বোনেরা এমন এলাকায় প্রচার করে, যেখানে প্রকাশকদের সংখ্যা অনেক বেশি, তাই তাদের কিছু অদ্ভুত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হয়। উদাহরণ স্বরূপ, একটা মণ্ডলীতে ১৩৪ জন প্রকাশক রয়েছে কিন্তু তাদের এলাকায় মাত্র ৫০টা বাড়ি রয়েছে! কীভাবে প্রকাশকরা এই পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেয়?
অনেক ভাই ও বোন এমন এলাকায় প্রচার করার জন্য এগিয়ে আসে, যেখানে বেশি প্রকাশকের প্রয়োজন রয়েছে। ইয়নাশ নামে ৯০ বছর বয়সি একজন ভাই বলেন, ‘আমাদের মণ্ডলীর এলাকায় একজন প্রকাশক পিছু ২টো বাড়ি রয়েছে। আমি আমার গ্রামে প্রচার করি কিন্তু সম্প্রতি আমার শরীর খারাপ হওয়ার আগে পর্যন্ত, আমিও প্রায় ১৬০ কিলোমিটার (১০০ মাইল) পথ পাড়ি দিয়ে মণ্ডলীর নির্ধারিত এলাকার বাইরে একটা এলাকায় গিয়ে হাঙ্গারিয়ান ভাষায় প্রচার করতাম।’ অবশ্য, প্রকাশকদের অন্যান্য এলাকায় সাহায্য করার জন্য ত্যাগস্বীকার করতে হয়। ভাই ইয়নাশ বলেন, “ট্রেন ধরার জন্য আমি ভোর ৪টের সময়ে উঠতাম এবং সন্ধ্যা ৬টার সময়ে ট্রেন বাড়ির দিকে রওনা না দেওয়া পর্যন্ত প্রচার করতাম। আমি সপ্তাহে দুই অথবা তিন বার এমনটা করতাম।” তিনি কি মনে করেন যে, তার প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছিল? তিনি বলেন, ‘আমি এই ধরনের পরিচর্যায় প্রচুর আনন্দ লাভ করেছিলাম। আমি একটা পরিবারকে সত্য শেখানোর সুযোগ পেয়েছিলাম, যারা এমন এলাকায় বাস করত, যেখানে কোনো মণ্ডলী ছিল না।’
এটা ঠিক যে, এই এলাকার মণ্ডলীগুলোর প্রত্যেকে প্রচার করার জন্য অনেক দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারে না। কিন্তু সকলে, এমনকী বয়স্ক প্রকাশকরাও, স্থানীয় এলাকায় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্রচার করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। ফল স্বরূপ, ২০১৭ সালে এই তিনটে শহরে আয়োজিত স্মরণার্থ সভার সর্বমোট উপস্থিতির সংখ্যা ছিল প্রকাশকদের সংখ্যার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ—অথবা বলা যায়, মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, আমরা যেখানেই সেবা করি না কেন, আমাদের ‘প্রভুর কার্য্যে উপচিয়া পড়িবার’ সুযোগ রয়েছে।—১ করি. ১৫:৫৮.
^ অনু. 2 এই শহরগুলোর নাম হল হালিবকি পতিক, সারাড্নিয়া ভডিয়ানা ও নজ্নিয়া আপশা।