বিশ্ব নিরীক্ষা
বিশ্ব নিরীক্ষা
হাতিরা “তাদের বন্ধুদেরকে ভোলে না”
নিউ সায়েনটিস্ট পত্রিকা জানায়, “হাতিরা কখনোই ভোলে না অন্তত তারা তাদের বন্ধুদেরকে ভোলে না।” ইংল্যান্ডের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ক্যারেন ম্যাকোম, কেনিয়ার আমবোসেলি ন্যাশনাল পার্কে আফ্রিকার স্ত্রী হাতিদের মধ্যে, কোন্গুলো প্রায়ই একসঙ্গে মিলিত হয় এবং কোন্গুলোকে তারা চেনে না তা দেখার জন্য তাদের নিচু স্বরে “ডাকার আওয়াজ”-কে রেকর্ড করেছিলেন। এরপর তিনি তাদের রেকর্ড করা সেই ডাক ২৭টা হাতি পরিবারগুলোর সামনে বাজিয়ে শোনান এটা পর্যবেক্ষণ করার জন্য যে, তারা কীভাবে সাড়া দেয়। যে হাতিটা ডাকছে তার আওয়াজ অন্য হাতিগুলো যদি ভালভাবে চিনতে পারে, তাহলে তারা সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দেয়। কিন্তু, তারা যদি হাতির ডাক ভালভাবে না চেনে, তবে তাতে তারা সাড়া দেয় না এবং অচেনা ডাক শুনে তাড়াতাড়ি করে আত্মরক্ষা করার চেষ্টা করে। এই প্রবন্ধ জানায়, “তারা অন্তত আরও অন্য ১৪টা পরিবারের সদস্যদের ডাক শুনে তাদেরকে চিনতে পারে, যার মানে প্রত্যেকটা হাতি প্রায় ১০০টা অন্য প্রাপ্তবয়স্ক হাতিকে মনে রাখতে পারে।” হাতিরা মানুষদেরকেও মনে রাখতে পারে। ইংল্যান্ডের ব্রিসটল চিড়িয়াখানার স্তন্যপায়ী প্রাণী বিভাগের প্রধান, জন পারট্রিজ বলেন যে তিনি এশিয়ার একটা হাতির সঙ্গে ১৮ বছর কাজ করেছিলেন। আর তিনি যখন তিন বছর অন্য জায়গায় কাজ করার পর আবার হাতিটার কাছে ফিরে আসেন তখন সে তাকে চিনতে পারে।(g০১ ৫/২২)
দুপুরে খাবারের বিরতি হল ক্লান্তিকর
লন্ডনের ফিন্যানসিয়েল টাইমস রিপোর্ট করে যে, “ব্রিটেনে যেখানে অতিরিক্ত পুরুষালি মনোভাব রয়েছে সেখানকার লোকেরা মনে করেন যে দুপুরের খাবার দুর্বলরাই খেয়ে থাকেন কারণ যে কর্মচারীদের কাছে কাজই ধ্যান-জ্ঞান তারা দুপুরে ভারী খাবার না খেয়ে তাদের টেবিলে বসেই স্যানড্উইচ খান।” সাম্প্রতিক গবেষণা দেখায় যে ব্রিটেনের লোকেদের “দুপুরের খাবারের বিরতি” গড়ে মাত্র ৩৬ মিনিট। চিকিৎসকরা বলেন যে দুপুরে খাবারের বিরতি ক্লান্তি দূর করে। কিন্তু, কিছু কর্মকর্তারা দুপুরের খাবারের বিরতির সময় সভার ব্যবস্থা করেন আর এর ফলে কর্মচারীরা কোন বিরতিই পান না। ডাটামনিটর নামে গবেষণা সংগঠন যে রিপোর্ট জড়ো করে, সেটা বলে: “আমরা এমন এক সমাজে আটকা পড়ে গেছি, যে সমাজ কর্মচারীদের কাছ থেকে বেশি কাজ আদায় করে নিতে চায় এবং সময়কে বহুমূল্য এক জিনিস বলে মনে করে, সেই জন্য অনেকে দুপুরে খাবারের বিরতিকে এক অপ্রয়োজনীয় বিরতি বলে মনে করে।” ডাটামনিটরের বিশেষজ্ঞা সারা ন্যানি আরও বলেন: “আমরা বিশ্বের বাজারে প্রতিযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছি। সেখানে আমাদের এভাবে বলার কোন উপায় নেই যে ‘এটা আমি পরে করব।’ এই কাজটা এখনই করতে হবে।” (g০১ ৫/২২)
রেফ্রিজারেটার ছাড়াই টাটকা খাবার
সহজে পচে যায় এমন খাবার রেফ্রিজারেটার ছাড়া ঠাণ্ডা ও টাটকা রাখা সত্যিই কঠিন। কিন্তু উত্তর নাইজেরিয়ায়, যেখানে খুব অল্প বৃষ্টি হয় সেখানে এক সহজ অথচ সস্তা পদ্ধতি উদ্ভাবন করে ভাল ফল পাওয়া যাচ্ছে। একটা মাটির পাত্রের মধ্যে আরেকটা মাটির পাত্র রেখে এগুলোর মধ্যে যে ফাঁকা জায়গা থাকে সেটা ভিজা বালি দিয়ে ভরা হয়। ভিতরের ছোট পাত্রে খাবার রাখা হয় এবং সেই পাত্রটাকে ভিজা কাপড় দিয়ে জড়িয়ে রাখা হয়। নিউ সায়েনটিস্ট পত্রিকা বলে, ‘চারপাশে উষ্ণ বায়ু থাকায় বাইরের পাত্রটার ওপর আর্দ্রভাব তৈরি হয়, যা বাষ্প হয়ে বাতাসে উড়ে যায়। এই জলীয় বাষ্প সঙ্গে করে গরম ভাপকে উড়িয়ে নিয়ে যায়, ফলে যতক্ষণ পর্যন্ত বালি ও কাপড়টা ভিজা থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত এই শুষ্ককরণ প্রক্রিয়ার দ্বারা গরম ভাপ পাত্রের ভিতরে নয় কিন্তু সেটার বাইরে সৃষ্টি হয়।’ এই পদ্ধতিকে কাজে লাগালে টমেটো ও ক্যাপসিকাম তিন সপ্তারও বেশি সময় এবং বেগুন প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় পর্যন্ত টাটকা থাকতে পারে। “পাত্রের মধ্যে পাত্র” পদ্ধতির উদ্ভাবক মুহম্মদ বাহ্ আব্বা বলেন, এখন চাষিরা যখন প্রয়োজন, তখন তাদের শাকসবজি ও ফল বিক্রি করতে পারে এবং তাদের মেয়েরা যারা সাধারণত প্রত্যেক দিন খাবার বিক্রি করার জন্য ঘরে থাকে তারা স্কুলে যেতে পারবে।(g০১ ৬/৮)
সেলুলার ফোনের কারণে দুর্ঘটনাগুলো
সেলুলার ফোন ব্যবহার করার ফলে শুধু রাস্তাতেই নয় কিন্তু অন্য জায়গাতেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জাপানের রেল কর্মকর্তারা বলেন যে, যাত্রীরা প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করার সময় সেলুলার ফোনে কথাবার্তা বলায় এত বেশি মগ্ন হয়ে যান যে তাদের খেয়াল থাকে না তারা কোথায় আছেন। আসাহি ইভনিং নিউজ সাম্প্রতিক যে দুঘর্টনাগুলোর কথা জানিয়েছে সেগুলোর মধ্যে একটা হল যে, একজন যুবক প্ল্যাটফর্মের প্রান্তে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে সেলুলার ফোনে কথা বলছিল। সে যার সঙ্গে কথা বলছিল তার উদ্দেশে যখন অজান্তে নিজের মাথা ঝোঁকায় তখন প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করছে এমন একটা ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তার মাথায় আঘাত লাগে। অল্পের জন্য সে বেঁচে গিয়েছিল শুধু “তার ডান চোখের ওপরটা কেটে যায়।” আরেকটা ঘটনাতে “উচ্চবিদ্যালয়ের একজন ছাত্র সেলুলার ফোনে কথা বলতে বলতে প্ল্যাটফর্মের প্রান্তে হেলান দিয়ে দাঁড়ায় এবং একটা মালগাড়িতে ধাক্কা লেগে মারা যায়।” স্টেশনের একজন কর্মচারী বলেন যে, কখনও কখনও অসাবধানতার কারণে লোকেদের হাত থেকে তাদের সেলুলার ফোনগুলো রেললাইনে পড়ে যায়। একজন ২৬ বছরের যুবক রেললাইন থেকে নিজের সেলুলার ফোন তোলার জন্য সেখানে লাফ দিয়েছিল এবং ট্রেনের তলায় পড়ে “পিষ্ট হয়ে গিয়েছিল।” রেলের কর্মকর্তারা লোকেদেরকে “এটা মনে রাখার জন্য বলেন যে, রেলের প্ল্যাটফর্মগুলো খুব বিপদজনক জায়গা।” (g০১ ৬/২২)