এক সৈন্যবাহিনী এগিয়ে আসছে!
এক সৈন্যবাহিনী এগিয়ে আসছে!
“আমরা বেলিজের এক উন্নয়নশীল গ্রামে বাস করি, যেটা প্রচুর গাছপালা দিয়ে পরিবেষ্টিত। একদিন সকাল প্রায় নটার সময় আমাদের ঘর এক সৈন্যবাহিনী আক্রমণ করেছিল। পিঁপড়ার দল দরজার নিচ ও প্রত্যেকটা ফাঁক ফোকর দিয়ে শিকারের খোঁজে এসেছিল। পিঁপড়ারা যখন ঘর দখল করেছিল, তখন আমাদের এক বা দুঘন্টার জন্য ঘর ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। আমরা যখন ফিরে এসেছিলাম, তখন আমাদের ঘর পোকামাকড় থেকে একেবারে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল।”
বেলিজের মতো ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে বসবাসরত অনেক লোকেদের জন্য এটা এক সাধারণ ঘটনা এবং তেমন অপ্রীতিকর নয়। এটা হল ঘরকে কীটপতঙ্গ যেমন, তেলাপোকা বা অন্যান্য কীট থেকে মুক্ত করার একটা উপায়। আর এগুলো ঘরকে নোংরা করে রেখে যায় না।
আগ্রহের বিষয়টি হল, এখানে যে-পিঁপড়াদের বিষয় বলা হচ্ছে সেগুলোর জীবনযাত্রা ও কাজগুলো সৈন্যদের মতো বলে এগুলোকে সৈন্য পিঁপড়া বলা হয়। * বাসা বাঁধার বদলে এই ভ্রমণরত লক্ষ লক্ষ সৈন্য অস্থায়ী আশ্রয়গুলো তৈরি করে, পিঁপড়ার দল তাদের পা একে অন্যের সঙ্গে আটকে রানি ও তার বাচ্চাদের চারপাশে এক জীবন্ত পর্দা গঠন করে। এই আশ্রয়গুলো থেকে আক্রমণকারী পিঁপড়ার দলগুলোকে এক লম্বা সারি করে খাদ্যের অন্বেষণে পাঠানো হয়, যে-খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত কীটপতঙ্গ ও টিকটিকির মতো ছোট প্রাণীগুলো। আক্রমণকারী দলের নেতারাও ফ্ল্যাংকিঙ্গ মুভমেন্টের অর্থাৎ পার্শ্বদেশ থেকে আক্রমণ করার মতোন করে শিকারকে ফাঁদে ফেলে। এটা ঘটে যখন নেতৃত্বকারী শ্রমিকরা এগিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো গন্ধযুক্ত পথ খুঁজে না পাওয়ায় দ্বিধা করে ও থেমে যায়। পিছনে থাকা পিঁপড়াগুলো অদম্যভাবে সামনের দিকে এগিয়ে চলে কিন্তু সামনের সারির পিঁপড়াগুলো যেহেতু থেমে থাকে তাই সেখানে পিঁপড়ার এক বড় দল সৃষ্টি হয় যার ফলে পিঁপড়াগুলো সোজা না গিয়ে দুপাশ দিয়ে এগিয়ে যায় যা ফ্ল্যাংকিঙ্গ মুভমেন্ট অর্থাৎ পার্শ্বদেশ থেকে আক্রমণ করার মতোন দেখায়।
সৈন্য পিঁপড়ারা ৩৬ দিনের এক চক্রের মধ্যে কাজ করে, ১৬ দিন এগিয়ে চলে আর এরপর ২০ দিনের জন্য স্থির হয়ে যায়, সেই সময় রানি ডিম পাড়ে। এরপর, ক্ষুধা আবারও দলকে এগিয়ে যেতে চালিত করে। তাদের প্রায় দশ মিটার চওড়া এগিয়ে চলা সারিগুলোর সামনের দিক দিয়ে মাকড়সা, বিছা, গুবরে-পোকা, ব্যাঙ ও টিকটিকিগুলো পালাতে থাকে আর এগুলোর পিছনে থাকে পাখিরা, যারা স্পষ্টত এই পলায়নরত প্রাণীগুলোকে শিকার করে কিন্তু পিঁপড়াদের নয়।
বাইবেলের হিতোপদেশ ৩০:২৪, ২৫ পদে “বড় বুদ্ধি ধরে” হিসেবে বর্ণিত পিঁপড়ারা সৃষ্টির বিস্ময়গুলোর মধ্যে একটা। (g০৩ ৬/৮)
[পাদটীকা]
^ এই প্রবন্ধটিতে মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার ইকিটন প্রজাতির বিষয় আলোচনা করা হচ্ছে।
[২৯ পৃষ্ঠার চিত্র]
সৈন্য পিঁপড়া
[সৌজন্যে]
© Frederick D. Atwood
[২৯ পৃষ্ঠার চিত্র]
এদের পাগুলো একে অন্যের সঙ্গে আটকে একটা সেতু গঠন করছে
[সৌজন্যে]
© Tim Brown/www.infiniteworld.org