সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়?

পোলিশ ও মিশরীয় প্রত্নতাত্ত্বিকের একটা দল মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ার প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গাটা খনন করে পেয়েছে। লস এঞ্জেলস টাইমস অনুসারে, দলটি ১৩টা বক্তৃতা দেওয়ার হল—সবগুলোই একই মাপের—খুঁজে পায়, যেগুলোতে একসঙ্গে ৫,০০০ জন ছাত্র-ছাত্রী বসতে পারত। এই হলগুলোতে, পত্রিকাটি বলে, “সিঁড়ির আকারে সারি সারি বেঞ্চ রয়েছে, যেগুলো কামরাগুলোর তিন দিকে দেওয়ালের গায়ে গায়ে নির্মাণ করা হয়েছে।” মাঝখানে রয়েছে উঁচু একটা আসন, সম্ভবত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের জন্য। “সমগ্র ভূমধ্যসাগরীয় এলাকার কোনো গ্রিক-রোমীয় অঞ্চলে এই প্রথম বিরাট এলাকা জুড়ে অবস্থিত বক্তৃতা দেওয়ার হলগুলো আবিষ্কৃত হয়েছে,” মিশরের সুপ্রীম কাউন্সিল অভ্‌ আ্যনটিকুইটিজ্‌ এর সভাপতি প্রত্নতাত্ত্বিক জেহি হাওয়েস বলেন। হাওয়েস এটাকে “সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়” বলে সংজ্ঞায়িত করেন।

রসুনের আইসক্রিম?

রসুন এর আরোগ্যকর গুণের জন্য বহুদিন ধরে প্রশংসিত হয়ে এসেছে। এখন উত্তর ফিলিপিনসের মারিয়ানো মারকোস স্টেট ইউনিভারসিটি “স্বাস্থ্যকর” কারণগুলোর জন্য রসুনের আইসক্রিম উৎপাদন করেছে, ফিলিপিন স্টার সংবাদপত্র রিপোর্ট করে। আশা করা হচ্ছে যে, এই নতুন উৎপাদিত দ্রব্যটি যারা দীর্ঘ দিনের পুরনো রোগগুলোতে ভুগছে, তাদেরকে হয়তো উপকৃত করতে পারে কারণ রসুন এই রোগগুলোকে উপশম করে বলে শোনা যায়। এগুলোর মধ্যে হল সর্দিকাশি, জ্বর, উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুসের রোগ, বাত, সাপের কামড়, দাঁতের যন্ত্রণা, যক্ষ্মা, হুপিং কাশি, শারীরিক ক্ষত এবং এমনকি টাক পড়া। তাই কেউ কি রসুনের আইসক্রিম চান?

সাদা কুমির খুঁজে পাওয়া গিয়েছে

“উড়িষ্যার ভিতরকনিকা ন্যাশনাল পার্কের বন্য আধিকারিকরা বার্ষিক কুমির গণনার সময়ে, ১৫টা বিরল সাদা কুমির খুঁজে পেয়েছে,” ভারতের সংবাদপত্র হিন্দু বলে। সাদা কুমিরগুলো একেবারেই বিরল এবং “পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।” বেআইনিভাবে শিকার করার দরুন, ওই অঞ্চলের নোনাজলের কুমিরগুলো ১৯৭০ দশকে প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার মুখে ছিল কিন্তু রাষ্ট্রসংঘের কার্যক্রমের সাহায্যে রাজ্য সরকার পার্কের ভিতরে এক কুমির-প্রতিপালন প্রকল্প স্থাপন করে। প্রচুর গরান গাছ, দূষণমুক্ত জল, পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ থাকায় এবং মানুষের আনাগোনা কম বলে এই প্রতিপালনের কার্যক্রম সফল হয়েছে। হিন্দু সংবাদপত্র অনুসারে, এখন সেই পার্কে এই বিরল সাদা কুমিরগুলোর সঙ্গে প্রায় ১,৫০০টা সাধারণ বর্ণের কুমির রয়েছে।

তামাক, দারিদ্র এবং অসুস্থতা

“বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সতর্ক করে দেয় যে, ধূমপায়ীদের প্রায় ৮৪ শতাংশ ব্যক্তি দরিদ্র দেশগুলোতে বাস করে, যেখানে তামাক ও দরিদ্রতা এক জঘন্য চক্রে জড়িয়ে পড়েছে,” স্প্যানিশ সংবাদপত্র দিয়ারিও মেদিকো জানায়। এ ছাড়া প্রত্যেক দেশে, “যারা সবচেয়ে বেশি ধূমপান করে এবং তামাক সেবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সমস্যাগুলোর বেশির ভাগই ভোগ করে, তারা জনসংখ্যার সবচেয়ে দরিদ্র দলের অন্তর্ভুক্ত।” যদিও উন্নয়শীল দেশগুলোতে তামাক সেবন হ্রাস পেয়েছে কিন্তু পৃথিবীব্যাপী এটা “অসুস্থতার কারণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঝুঁকিপূর্ণ চতুর্থ কারণ” হয়ে দাঁড়িয়েছে, সংবাদপত্রটি রিপোর্ট করে। স্পেনে, যেখানে তামাকের কারণে বার্ষিক মৃত্যুর হার ৬০,০০০-এ পৌঁছেছে, সেখানে ধূমপান “অসুস্থতা, অক্ষমতা এবং অনিবার্য মৃত্যুর মুখ্য কারণ” হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চেহারা নিয়ে সমস্যা

“যুবক-যুবতীরা—এবং বিশেষ করে মেয়েরা—খুব অল্প বয়সেই তাদের চেহারা নিয়ে চিন্তিত আর এটা গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে আসতে পারে,” কানাডার গ্লোব ও মেইল সংবাদপত্র বলে। ১০ থেকে ১৪ বছরের মেয়েদেরকে তাদের খাওয়াদাওয়ার মনোবৃত্তি সম্বন্ধে প্রশ্ন করা হয়েছিল আর এক্ষেত্রে ২,২০০ জনেরও বেশি মেয়ে উত্তর দিয়েছিল। গ্লোব রিপোর্ট করে: “শতকরা ৭ জনেরও কম মেয়ে অত্যধিক মোটা কিন্তু শতকরা ৩১ জনেরও বেশি নিজেদেরকে ‘খুব মোটা’ বলে বর্ণনা করেছে এবং শতকরা ২৯ জন জানিয়েছে যে, তারা বর্তমানে খাওয়াদাওয়া মেনে চলছে।” কেন স্বাস্থ্যবতী মেয়েরা ওজন কমাতে চায়? সংবাদপত্র অনুসারে, এর জন্য উদাহরণযোগ্য প্রাপ্তবয়স্করাই অনেকটা দায়ী, যারা সবসময় খাওয়াদাওয়া মেনে চলে এবং যে-লোকেরা মোটা তাদেরকে উপহাস করে। “কিশোর-কিশোরীদের আচরণকে প্রভাবিত করতে প্রচারমাধ্যমও অবিরতভাবে উদাহরণযোগ্য খুবই রোগা ব্যক্তিদের তুলে ধরে এক বিরাট ভূমিকা পালন করে থাকে,” গ্লোব বলে। ডা. গেল মিক্‌ভে, টরোন্টো হস্‌পিটাল ফর্‌ সিক্‌ চিলড্রেন এর একজন গবেষক বিজ্ঞানী বলেন যে, ছেলেমেয়ে, বাবামা এবং শিক্ষকদের একইভাবে উপলব্ধি করা দরকার যে, “কৈশোরে অগ্রসর হওয়া ছেলেমেয়েদের জন্য ওজন বাড়া স্বাভাবিক ও আবশ্যক।”

যুদ্ধের শিকার অল্পবয়স্করা

রাষ্ট্রসংঘের শিশু তহবিল অনুমান করে যে, রুয়ান্ডার জাতিগত দাঙ্গাগুলোতে নিহত ৮,০০,০০০ লোকের মধ্যে ৩,০০,০০০ ছিল শিশু, জার্মান সংবাদপত্র লিপজিগার ফল্কস্‌জিটাং রিপোর্ট করে। অনুমান করা হয় যে, রুয়ান্ডায় ১,০০,০০০ এরও বেশি শিশু এমন পরিবারগুলোতে বাস করে যেখানে কোনো প্রাপ্তবয়স্কের তত্ত্বাবধান নেই। “তাদের রোজকার জীবন চরম দারিদ্রের দ্বারা জর্জরিত,” সংবাদপত্রটি বলে।

দোভাষী ছেলেমেয়েদের লালনপালন করা

“ছেলেমেয়েদের যখন ধৈর্য ধরে ও চিন্তাভাবনা করে প্রতিপালন করা হয়, তখন বহুভাষী হওয়া তাদের জন্য, তাদের পরিবারগুলোর জন্য এবং সমাজের জন্য বিরাট সুযোগের এক উৎস হতে পারে,” মেক্সিকো শহরের সংবাদপত্র মিলেনো জানায়। বিভিন্ন গবেষণা এই “উপসংহারে এসেছে যে, যে-ছেলেমেয়েরা দুটো ভাষায় কথা বলে তারা স্কুলে যারা কেবল একটা ভাষায় কথা বলে তাদের চেয়ে আরও ভাল করে।” যখন তাদের ছেলেমেয়েরা একটা বাক্যে দুটো ভাষার শব্দগুলোকে মিশিয়ে ফেলে অথবা একটা ভাষার ব্যাকরণের নিয়মকে অন্য ভাষায় প্রয়োগ করে ভুল করে, তখন সেই নিয়ে বাবামায়েরা কখনো কখনো চিন্তিত হয়ে পড়ে। “কিন্তু এই ভুলগুলো খুবই তুচ্ছ বিষয় এবং সঙ্গে সঙ্গে অতিক্রম করা যায়,” একজন মনোবিজ্ঞানী, অধ্যাপক টোনি ক্লিন বলেন যিনি শিশুদের ভাষা বিকাশে বিশেষজ্ঞ। জন্ম থেকে যদি বাবা ও মা উভয়ের ভাষা শেখানো হয়, তা হলে দুটো ভাষাই ছেলেমেয়েরা স্বাভাবিকভাবে ধরে নেবে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, তারা ভাষাগুলো বলার সময় গুলিয়ে ফেলবে না।

পূর্বাভাস দেওয়া যায় না এমন অস্বাভাবিক ঢেউগুলো

বলা হয়ে থাকে যে, পৃথিবীতে প্রত্যেক সপ্তাহে কোথাও না কোথাও গড়ে দুটো বড় জাহাজ ডুবে যায়। এমনকি ২০০ মিটারেরও বেশি লম্বা বিশাল অয়েলট্যাঙ্কার এবং মালবাহী জাহাজগুলোও ডুবে গিয়েছে। মনে করা হয় যে, এইসব আকস্মিক দুর্ঘটনার অধিকাংশই অস্বাভাবিক ঢেউগুলোর কারণে ঘটেছে। মহাসাগরের প্রকাণ্ড ঢেউগুলো বিশাল সব জাহাজকে ডুবিয়ে দিতে সক্ষম, এই রিপোর্টগুলোকে নাবিকদের দ্বারা কথিত অতিরঞ্জিত গল্প বলে বহুদিন ধরে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের এক গবেষণা প্রকল্প এই ধরনের গল্পগুলোকে বিশ্বাস করেছে। প্রকাণ্ড ঢেউগুলোর বিষয় জানার জন্য উপগ্রহ থেকে রাডারের সাহায্যে নেওয়া মহাসাগরগুলোর বিভিন্ন ছবিকে খুঁটিয়ে দেখা হয়েছে। সুয়েটডয়েশে সাইটুং অনুসারে, প্রকল্পের প্রধান ব্যক্তি ভল্ফগ্যাঙ রোজেনটাল বলেন: “আমরা প্রমাণ করেছি যে, অস্বাভাবিক ঢেউগুলো অন্যেরা যেমনটা ভেবে থাকে, তার চেয়েও আরও বেশি সচরাচর ঘটে থাকে।” তিন সপ্তাহের মধ্যে, তার দল অন্তত দশটা ঢেউ শনাক্ত করেছিল। এই ধরনের ঢেউগুলো প্রায় খাড়া, ৪০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে এবং একটা জাহাজের ওপর জোরে আছড়ে পড়তে পারে, যার ফলে মারাত্মকভাবে জাহাজের ক্ষতি হতে পারে অথবা এমনকি জাহাজটা ডুবে যেতে পারে। খুব কম সংখ্যক জাহাজই এই ঢেউগুলো রুখতে সক্ষম হয়। “এখন আমাদের বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে যে, এই ঢেউগুলো সম্পর্কে পূর্বাভাস দেওয়া যায় কি না,” রোজেনটাল বলেন।