বাইবেলের দৃষ্টিভঙ্গি
বিয়ের আগে যৌন ক্রিয়াকলাপ বিয়ের আগে যৌন ক্রিয়াকলাপ
বিয়ের আগে যৌন ক্রিয়াকলাপে রত হওয়া কি ভুল?
“ফলতঃ ঈশ্বরের ইচ্ছা এই, . . . যেন তোমরা ব্যভিচার হইতে দূরে থাক।”—১ থিষলনীকীয় ৪:৩, ৪.
লোকেরা যা বলে
কিছু সংস্কৃতিতে নিজেদের মধ্যে সম্মতি রয়েছে এমন অবিবাহিত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে যৌন ক্রিয়াকলাপে রত হওয়াকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়। আবার কোনো কোনো জায়গায় অবিবাহিত অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে কিছু ধরনের শারীরিক ঘনিষ্ঠতাকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বাইবেল যা বলে
বাইবেল বিয়ের বাইরে যৌন ক্রিয়াকলাপকে বোঝানোর জন্য “ব্যভিচার” শব্দটি ব্যবহার করে। ঈশ্বর চান, তাঁর উপাসকরা ‘ব্যভিচার হইতে দূরে থাকিবে।’ (১ থিষলনীকীয় ৪:৩, ৪) ব্যভিচারকে পারদারিকতা, মায়া বা প্রেতচর্চা, মত্ততা, প্রতিমাপূজা, নরহত্যা এবং চুরির মতো গুরুতর এক পাপ হিসেবে তালিকাবদ্ধ করা হয়েছে।—১ করিন্থীয় ৬:৯, ১০; প্রকাশিত বাক্য ২১:৮.
যে-কারণে এটা গুরুত্বপূর্ণ
একটা কারণ হল, বাইবেল সতর্ক করে “ব্যভিচারীদের . . . বিচার ঈশ্বর করিবেন।” (ইব্রীয় ১৩:৪) এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা হল, যৌন নৈতিকতার বিষয়ে ঈশ্বরের আইনের প্রতি বাধ্য থেকে আমরা প্রমাণ দিই যে, আমরা যিহোবা ঈশ্বরকে ভালোবাসি। (১ যোহন ৫:৩) ফল স্বরূপ, তিনি তাঁর আজ্ঞা পালনকারীদের আশীর্বাদ করেন।—যিশাইয় ৪৮:১৮.
অবিবাহিত ব্যক্তিদের জন্য যেকোনো ধরনের শারীরিক ঘনিষ্ঠতায় রত হওয়া কি অনৈতিক বিষয়?
“কিন্তু বেশ্যাগমনের ও সর্ব্বপ্রকার অশুদ্ধতার বা লোভের নামও যেন তোমাদের মধ্যে না হয়।”—ইফিষীয় ৫:৩.
লোকেরা যা বলে
অনেক লোক মনে করে, অবিবাহিত যুগলরা যৌনমিলন না করে শারীরিকভাবে কিছুটা ঘনিষ্ঠ হলে, তাতে দোষের কিছু নেই।
বাইবেল যা বলে
অনৈতিক যৌন অভ্যাস সম্পর্কে আলোচনা করার সময়, বাইবেল শুধুমাত্র ব্যভিচারের বিষয়েই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে “অশুচি ক্রিয়া” এবং “লম্পটাচার” সম্বন্ধেও উল্লেখ করে। (২ করিন্থীয় ১২:২১) স্পষ্টতই, শারীরিক ঘনিষ্ঠতার বিভিন্ন ধরন রয়েছে, যেগুলো বিয়ের বাইরে প্রকাশ করা হলে তা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে অসন্তোষজনক, এমনকী তাতে যদি যৌনমিলন জড়িত না-ও থাকে।
যৌনতার বিষয়ে বাইবেলের সাধারণ বার্তাটা হল, শারীরিক ঘনিষ্ঠতা এমন একজন পুরুষ ও নারীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, যারা একে অন্যের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ। এ ছাড়া, বাইবেল ‘কামাভিলাষকে’ অনুমোদন করে না। (১ থিষলনীকীয় ৪:৫) এর অর্থ কী? এমন একটা উদাহরণ বিবেচনা করুন, যা পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই সমভাবে প্রযোজ্য: একজন মেয়ে হয়তো তার প্রেমিকের সঙ্গে যৌনমিলন না করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ। কিন্তু, তারপরও সে হয়তো তার প্রেমিকের সঙ্গে অন্য ধরনের শারীরিক ঘনিষ্ঠতায় রত হয়। তা করার মাধ্যমে, তারা আসলে এমন কিছুর জন্য অভিলাষ বা কামনা করছে, যা তাদের অধিকারে নেই। তাই, তারা ‘কামাভিলাষের’ দোষে দোষী। যৌনতার প্রতি এই ধরনের লোভকে বাইবেলে নিন্দা করা হয়েছে।—ইফিষীয় ৫:৩-৫.
কীভাবে আপনি যৌন অনৈতিকতা এড়িয়ে চলতে পারেন?
“তোমরা ব্যভিচার হইতে পলায়ন কর।”—১ করিন্থীয় ৬:১৮.
যে-কারণে এটা গুরুত্বপূর্ণ
বাইবেল অনুযায়ী, যারা বিয়ের আগেই যৌন ক্রিয়াকলাপে রত হয়, তারা ঈশ্বরের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব হারানোর ঝুঁকির মুখে রয়েছে।—কলসীয় ৩:৫, ৬.
বাইবেল যা বলে
বাইবেল লোকেদের পরামর্শ দেয়, যেন তারা ‘ব্যভিচার হইতে পলায়ন করে।’ (১ করিন্থীয় ৬:১৮) এর অর্থ হল, একজন ব্যক্তির এমন যেকোনো কিছু থেকে যতদূর সম্ভব দূরে থাকা উচিত, যা তাকে যৌন অনৈতিকতার দিকে প্রলুব্ধ করতে পারে। (হিতোপদেশ ২২:৩) উদাহরণ স্বরূপ, নৈতিকভাবে শুচি থাকতে হলে একজন ব্যক্তির জন্য এমন সঙ্গীসাথির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মেলামেশা এড়িয়ে চলা অতীব গুরুত্বপূর্ণ, যারা যৌন ক্রিয়াকলাপের বিষয়ে ঈশ্বরীয় নীতি উপেক্ষা করে। বাইবেল সতর্ক করে বলে: “জ্ঞানীদের সহচর হও, জ্ঞানী হইবে; কিন্তু যে হীনবুদ্ধিদের বন্ধু, সে ভগ্ন হইবে।”—হিতোপদেশ ১৩:২০.
এ ছাড়া, মনকে অনৈতিক চিন্তাভাবনা দ্বারা পরিতৃপ্ত করাও অশোভন যৌন আচরণ করার দিকে পরিচালিত করতে পারে। (রোমীয় ৮:৫, ৬) তাই, সেইসমস্ত সংগীত, ভিডিও, ছাপানো বিষয়বস্তু অথবা এমন যেকোনো কিছু এড়িয়ে চলা বিজ্ঞতার কাজ, যেগুলো যৌন ক্রিয়াকলাপকে অনুপযুক্তভাবে তুলে ধরে অথবা কোনো না কোনোভাবে এমন যৌন আচরণ করার জন্য উৎসাহিত করে, যা ঈশ্বরের অসন্তোষ নিয়ে আসে।—গীতসংহিতা ১০১:৩. (g১৩-E ০৯)