সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“খ্রীষ্টান” শব্দের আসল মানে কি হারিয়ে যাচ্ছে?

“খ্রীষ্টান” শব্দের আসল মানে কি হারিয়ে যাচ্ছে?

“খ্রীষ্টান” শব্দের আসল মানে কি হারিয়ে যাচ্ছে?

 খ্রীষ্টান হওয়ার মানে কী? আপনাকে যদি কেউ এই প্রশ্ন করেন, তাহলে আপনি কী উত্তর দেবেন? কয়েকটা দেশের লোকেদের এই প্রশ্নটা করা হয়েছিল আর তারা একেক জন একেক রকম উত্তর দিয়েছিলেন। এই প্রশ্নের উত্তরে তারা কী বলেছিলেন তার কয়েকটা দেখুন:

“যীশুর কথা মেনে চলা ও তাঁর মতো হওয়া।”

“ভাল লোক হওয়া ও অন্যদের উপকার করা।”

“খ্রীষ্টকে প্রভু ও পরিত্রাতা বলে স্বীকার করা।”

“মিশায় যাওয়া, মালা প্রার্থনা করা এবং পবিত্র কমিনিউন নেওয়া।”

“খ্রীষ্টান হতে হলে আপনাকে গির্জায় যেতে হবে, আমি তা মনে করি না।”

এমনকি ডিকশনারিগুলোতেও খ্রীষ্টান শব্দের বিভিন্ন মানে দেওয়া আছে। একটা বই “খ্রীষ্টান” শব্দের দশটা মানে দিয়েছে। তার মধ্যে দুটো এরকম, খ্রীষ্টান মানে “যীশু খ্রীষ্টের ধর্মে বিশ্বাস করা ও তা পালন করা” এবং “একজন নম্র-ভদ্র ও সৎ লোক হওয়া।” তাই, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে অনেকেই খ্রীষ্টান শব্দের আসল মানে কী তা জানে না।

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার প্রবণতা

আজকে যারা নিজেদের খ্রীষ্টান বলে দাবি করেন তাদের মাঝেও আপনি অনেক বিষয়ে অমত দেখতে পাবেন। যেমন, বাইবেল ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে কিনা, ক্রমবিবর্তনের শিক্ষা ঠিক না ভুল, গির্জাগুলোর রাজনীতিতে জড়ানো উচিত কিনা এবং নিজের ধর্ম প্রচার করা উচিত কী উচিত না, সেই সম্বন্ধে তাদের ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। গর্ভপাত, সমকামিতা ও বিয়ে না করেই একসঙ্গে থাকা যায় কিনা এই নিয়েও নানা বিতর্ক আছে। অতএব, এই বিষয়টা খুবই স্পষ্ট যে এরা যুগের সঙ্গে তাল মিলয়ে চলতে চায়।

উদাহরণ হিসেবে, খ্রীষ্টীয়ান সেঞ্চুরি পত্রিকা বলে যে কিছুদিন আগে প্রটেস্টান্ট গির্জা পরিষদের সদস্যরা দাবি করেছেন যে একজন “সমকামী ব্যক্তি গির্জার পরিচালক বোর্ডের সদস্য হিসেবে কাজ করতে পারেন।” আর কিছু থিওলজিয়ান বলেন যে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস করা ততটা জরুরি নয়। দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমস্‌ বলে, তারা বিশ্বাস করেন যে যিহুদি, মুসলিম এবং অন্যান্য ধর্মের লোকেরাও “[খ্রীষ্টানদের মতো] স্বর্গে যেতে পারবেন।”

একজন মার্কস্‌বাদী যদি পুঁজিবাদকে, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী যদি একনায়কতন্ত্রকে অথবা পরিবেশ নিয়ে চিন্তা করেন এমন একজন যদি গাছপালা কেটে ফেলাকে সমর্থন করেন, তাহলে কী অবস্থা হবে তা একটু ভেবে দেখুন। আপনি হয়তো বলবেন, “তাহলে ওই ব্যক্তি মার্কস্‌বাদী কিংবা গণতন্ত্রকামী নন আর পরিবেশ নিয়েও তিনি চিন্তা করেন না।” হ্যাঁ, আপনার কথাই ঠিক। এরকমই, আজকে আপনি যদি খ্রীষ্টানদের দিকে তাকান, তাহলে দেখবেন যে তাদের মধ্যেও অনেক মতভেদ রয়েছে আর তারা যা বিশ্বাস করে সেগুলো খ্রীষ্টধর্মের প্রতিষ্ঠাতা, যীশু খ্রীষ্টের শিক্ষার সঙ্গে মেলে না। খ্রীষ্টানদের এই অবস্থা দেখে খ্রীষ্টধর্ম সম্বন্ধে কেমন ধারণা পাওয়া যায়?—১ করিন্থীয় ১:১০.

পরের প্রবন্ধে আমরা দেখব যে যুগের হাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে খ্রীষ্টের শিক্ষাকে বদলে ফেলার এক লম্বা ইতিহাস আছে। এই শিক্ষাকে যে বদলে ফেলা হচ্ছে সেই সম্বন্ধে ঈশ্বর এবং যীশু খ্রীষ্টের অনুভূতি কেমন? যে গির্জাগুলো খ্রীষ্টের শিক্ষা দেয় না তারা কি নিজেদের খ্রীষ্টান বলে দাবি করতে পারে? পরের প্রবন্ধে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া হবে।