এক নাবিকের কাছ থেকে শিক্ষা
এক নাবিকের কাছ থেকে শিক্ষা
খোলা সমুদ্রের বুকে একা নাবিকের জন্য নৌকা চালিয়ে যাওয়া খুবই ক্লান্তিকর। আর হাল বাইতে বাইতে নাবিক এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে যে সে দিক ভুল করে বিপদ ডেকে আনতে পারে। কিন্তু এমন সময় কে তাকে সঙ্গ দেবে? নঙ্গর। নঙ্গর সমুদ্রে ফেলা হলে এটা নৌকাকে ভুল পথে যেতে দেয় না। কারণ এটা মাটির এত গভীরে গেঁথে যায় যে হাওয়া বা সমুদ্রের ঢেউ কিছুই নৌকাকে টলাতে পারে না। আর তাই নঙ্গর ফেলে নাবিক কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে নিতে ও ক্লান্তি দূর করতে পারে। তাহলে আপনি বুঝতে পারছেন যে একজন নাবিকের জন্য নঙ্গর কতই না দরকারী!
আজ আমরা যিহোবার উপাসকদের নাবিকের সঙ্গে তুলনা করতে পারি। একজন নাবিককে যেমন সমুদ্রে নৌকা চালিয়ে যাওয়ার সময় অনেক অনেক বিপদের মুখোমুখি হতে হয়, তেমনি যিহোবার উপাসকেরাও আজকে এই জগতে অনবরত চাপের মুখোমুখি হন আর ক্লান্ত হয়ে পড়েন। এই কথা মনে রেখেই হয়তো যীশু একবার তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন যে: “তোমরা বিরলে এক নির্জ্জন স্থানে আসিয়া কিছু কাল বিশ্রাম কর।” (মার্ক ৬:৩১) আজকে কেউ কেউ হয়তো রোজকার জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কখনও কখনও কয়েক সপ্তা ছুটি নিয়ে কিংবা শনি-রবিবারের ছুটিতে পরিবারের সবাই মিলে কোথাও বেড়িয়ে আসতে চান। আর এটা সবাইকে খুবই তরতাজা করে। কিন্তু প্রশ্ন হল এই সময়েও কি আমরা ঈশ্বরের লোক হয়েই থাকি বা তাঁর থেকে দূরে সরে যাই? এমন কোন নঙ্গর কি আছে যা আমাদের ভেসে না যেতে বরং অটল থাকতে সাহায্য করবে?
যিহোবা ঈশ্বর আমাদের তাঁর বাক্য বাইবেল দিয়ে আমাদের সাহায্যের ব্যবস্থা করেছেন। আমরা যদি এর থেকে সাহায্য পেতে চাই, তাহলে আমাদের রোজ বাইবেল পড়া দরকার। আর বাইবেল পড়ে আমরা যিহোবার খুব কাছে আসতে পারব, তাঁর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক গভীর হবে আর আমরা কখনও ভেসে যাব না। এছাড়া বাইবেলে তিনি আমাদের জন্য যে পরামর্শ দিয়েছেন তা আমাদের শয়তানের ফাঁদ ও চাপের মোকাবিলা করতে ও অটল থাকতে শক্তি দেয়। রোজ বাইবেল পড়া, এমনকি যখন আমরা হয়তো ছুটি কাটাচ্ছি, আমাদের যিহোবার পথে শক্ত রাখার জন্য নঙ্গরের কাজ করে।—যিহোশূয় ১:৭, ৮; কলসীয় ২:৭.
গীতরচক আমাদেরকে মনে করিয়ে দেন যে “ধন্য সেই ব্যক্তি” যে “সদাপ্রভুর ব্যবস্থায় আমোদ করে, তাঁহার ব্যবস্থা দিবারাত্র ধ্যান করে।” (গীতসংহিতা ১:১, ২) আমরা যদি রোজ ঈশ্বরের বাক্য বাইবেল পড়ি, তাহলে আমরা “ধন্য” বা সুখী হব, কারণ তা আমাদেরকে তরতাজা করবে এবং সত্যে চলতে সাহায্য করবে।