পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল
পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল
কীসের ফলে ‘সর্ব্বজাতির মনোরঞ্জন বস্তু সকল’ সত্য উপাসনার ‘গৃহে’ আসছে?—হগয় ২:৭.
ভাববাদী হগয়ের মাধ্যমে যিহোবা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন: “আমি সর্ব্বজাতিকে কম্পান্বিত করিব; এবং সর্ব্বজাতির মনোরঞ্জন বস্তু সকল আসিবে; আর আমি এই গৃহ প্রতাপে পরিপূর্ণ করিব।” (হগয় ২:৭) ‘সর্ব্বজাতিকে কম্পান্বিত করিবার’ ফলে বিভিন্ন জাতির “মনোরঞ্জন বস্তু সকল”—সৎহৃদয়ের ব্যক্তিরা—কি সত্য উপাসনাকে গ্রহণ করে নিচ্ছে? উত্তরটা হচ্ছে, না।
যে-বিষয়টা জাতিগুলোকে কম্পান্বিত করে আর এই কম্পনের ফলে যা ঘটছে, তা বিবেচনা করুন। বাইবেল বলে যে, “জাতিগণ . . . কলহ করে লোকবৃন্দ . . . অনর্থক বিষয় ধ্যান করে।” (গীতসংহিতা ২:১) তাদের নিজেদের সার্বভৌমত্বকে টিকিয়ে রাখাই হচ্ছে সেই “অনর্থক বিষয়,” যা নিয়ে তারা “ধ্যান করে।” তাদের শাসনব্যবস্থার ওপর আসা হুমকি ছাড়া আর কোনোকিছুই তাদেরকে কম্পান্বিত করে না।
ঈশ্বরের প্রতিষ্ঠিত রাজ্য সম্বন্ধে যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা বিশ্বব্যাপী প্রচার কাজ জাতিগুলোর কাছে ঠিক এইরকমই এক হুমকি হয়ে উঠেছে। বস্তুতপক্ষে, যিশু খ্রিস্টের দ্বারা শাসিত ঈশ্বরের মশীহ রাজ্য “[মনুষ্যনির্মিত] সকল রাজ্য চূর্ণ ও বিনষ্ট” করতে যাচ্ছে। (দানিয়েল ২:৪৪) আমাদের প্রচার কাজে যে-বিচারের বার্তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তা জাতিগুলোকে কম্পান্বিত করছে। (যিশাইয় ৬১:২) আর প্রচার কাজ যত ব্যাপক ও যত বেশি করা হচ্ছে, সেই কম্পন তত বেশি তীব্রতর হচ্ছে। তা হলে, হগয় ২:৭ পদে ভবিষ্যদ্বাণীকৃত কম্পন আসলে কীসের চিহ্ন?
হগয় ২:৬ পদে আমরা পড়ি: “বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই কথা কহেন, আর এক বার, অল্পকালের মধ্যে, আমি আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীকে এবং সমুদ্র ও শুষ্ক ভূমিকে কম্পাম্বিত করিব।” এই পদ থেকে উদ্ধৃতি করে প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “তিনি এই প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, ‘আমি আর একবার কেবল পৃথিবীকে নয়, আকাশমণ্ডলকেও কম্পান্বিত করিব।’ এখানে ‘আর এক বার,’ এই শব্দে নির্দ্দিষ্ট হইতেছে, সেই কম্পমান সকল বিষয় নির্ম্মিত বলিয়া দূরীকৃত হইবে, যেন অকম্পমান বিষয় সকল [রাজ্য] স্থায়ী হয়।” (ইব্রীয় ১২:২৬, ২৭) হ্যাঁ, ঈশ্বরের তৈরি নতুন জগৎ আসার জন্য বর্তমান সমগ্র বিধিব্যবস্থাকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য কম্পান্বিত করা হবে।
জাতিগুলো কম্পান্বিত হচ্ছে বলে যে সৎহৃদয়ের লোকেরা সত্য উপাসনার প্রতি আকৃষ্ট হয়, তা কিন্তু নয়। যে-কাজটা তাদেরকে যিহোবা ও তাঁর উপাসনার দিকে আকৃষ্ট করছে, সেই একই কাজের ফলে জাতিগুলো কম্পান্বিত হচ্ছে আর সেটা হল ঈশ্বরের প্রতিষ্ঠিত রাজ্যের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী প্রচার কাজ। “অনন্তকালীন সুসমাচার” ঘোষণা সঠিক প্রবণতাসম্পন্ন লোকেদের সত্য ঈশ্বরের উপাসনার দিকে আকৃষ্ট করে।—প্রকাশিত বাক্য ১৪:৬, ৭.
রাজ্যের বার্তা হচ্ছে, বিচার ও পরিত্রাণের বার্তা। (যিশাইয় ৬১:১, ২) বিশ্বব্যাপী এই বার্তা প্রচারের দুটো ফলাফল রয়েছে: জাতিগুলোকে কম্পান্বিত করা এবং যিহোবাকে গৌরব করার জন্য জাতিগুলোর মনোরঞ্জন বস্তু সকলের আসা।