অল্পবয়সিদের কি বাপ্তাইজিত হওয়া উচিত?
অল্পবয়সিদের কি বাপ্তাইজিত হওয়া উচিত?
“আমি খুবই আনন্দিত যে, আমার মেয়ে এখন যিহোবার একজন দাস আর আমি জানি যে, সে-ও খুবই আনন্দিত,” কার্লোস * নামে ফিলিপাইনের একজন খ্রিস্টান বাবা বলেন। গ্রিস থেকে আরেকজন বাবা লিখেছিলেন: “আমি ও আমার স্ত্রী আনন্দিত যে, আমাদের তিন ছেলে-মেয়েই কিশোর বয়সে যিহোবার সাক্ষি হিসেবে বাপ্তাইজিত হয়েছে। তারা আধ্যাত্মিকভাবে উন্নতি করছে এবং যিহোবার সেবা করে আনন্দ লাভ করছে।”
খ্রিস্টান বাবা-মাদের সন্তানরা যখন বাপ্তাইজিত হয়, তখন যদিও তাদের অত্যন্ত আনন্দিত হওয়ার কারণ থাকে কিন্তু মাঝে মাঝে এর সঙ্গে দুশ্চিন্তাও আসে। “আমি একইসঙ্গে অত্যন্ত আনন্দিত আবার উদ্বিগ্নও হয়েছিলাম,” একজন মা বলেছিলেন। কেন এই ধরনের মিশ্র অনুভূতি দেখা যায়? “আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, আমার ছেলে এখন থেকে যিহোবার কাছে পুরোপুরি নিকাশ দিতে বাধ্য।”
যিহোবার একজন বাপ্তাইজিত সাক্ষি হয়ে তাঁর সেবা করা হচ্ছে এমন এক লক্ষ্য, যা সমস্ত অল্পবয়সির থাকা উচিত। তা সত্ত্বেও, ঈশ্বর ভয়শীল বাবা-মায়েরা হয়তো ভাবতে পারে, ‘আমি জানি যে, আমার সন্তান যথেষ্ট উন্নতি করেছে কিন্তু সে কি অনৈতিক চাপগুলো প্রতিরোধ করার এবং যিহোবার সামনে শুদ্ধতা বজায় রাখার মতো যথেষ্ট দৃঢ়?’ অন্যেরা হয়তো নিজেদের এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পারে, ‘আমার সন্তান যদি বস্তুবাদিতার প্রলোভনের মুখোমুখি হয়, তখনও কি সে আনন্দ ও উদ্যোগ সহকারে যিহোবার সেবা করা চালিয়ে যাবে?’ তাহলে, বাইবেলের কোন নির্দেশনা বাবা-মাদেরকে তাদের সন্তানরা বাপ্তিস্মের জন্য প্রস্তুত কি না, সেই বিষয়টা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে?
শিষ্যত্ব—প্রধান চাহিদা
বাপ্তাইজিত হওয়ার একটা নির্দিষ্ট বয়স সম্বন্ধে উল্লেখ করার পরিবর্তে, ঈশ্বরের বাক্য সেই ব্যক্তিদের আধ্যাত্মিক অবস্থা সম্বন্ধে বর্ণনা করে, যারা সেই পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য যোগ্য। যিশু তাঁর অনুসারীদেরকে এই নির্দেশনা প্রদান করেছিলেন: “সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; . . . তাহাদিগকে বাপ্তাইজ কর।” (মথি ২৮:১৯) তাই, বাপ্তিস্ম হল সেই ব্যক্তিদের জন্য, যারা ইতিমধ্যেই খ্রিস্টের শিষ্য।
একজন শিষ্য হওয়ার অর্থ কী? শাস্ত্রের প্রতি অন্তর্দৃষ্টি (ইংরেজি) বইটি ব্যাখ্যা করে: “এই শব্দটি মূলত সেইসমস্ত ব্যক্তিকে নির্দেশ করে, যারা কেবল খ্রিস্টের শিক্ষাগুলো বিশ্বাসই করে না কিন্তু সেইসঙ্গে সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণ করে।” অপেক্ষাকৃত কমবয়সি ব্যক্তিরা কি খ্রিস্টের প্রকৃত শিষ্য হওয়ার জন্য যোগ্য? একজন বোন, যিনি ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ল্যাটিন আমেরিকায় মিশনারি হিসেবে সেবা করেছেন, তিনি নিজের ও তার দুই বোন সম্বন্ধে
লেখেন: “আমাদের এই বিষয়টা বোঝার মতো যথেষ্ট বয়স হয়েছিল যে, আমরা যিহোবাকে সেবা করতে চাই এবং পরমদেশে বাস করতে চাই। আমাদের উৎসর্গীকরণ আমাদেরকে সেই সময়ে দৃঢ় থাকতে সাহায্য করেছে, যখন আমরা যৌবনকালের প্রলোভনগুলোর মুখোমুখি হয়েছিলাম। অল্প বয়সে নিজেদের ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গ করেছি বলে আমরা আপশোস করি না।”আপনার সন্তান খ্রিস্টের একজন শিষ্য হয়েছে কি না, তা আপনি কীভাবে জানতে পারেন? বাইবেল বলে: “বালকও কার্য্য দ্বারা আপন পরিচয় দেয়, তাহার কর্ম্ম বিশুদ্ধ ও সরল কি না, জানায়।” (হিতো. ২০:১১) কিছু বিষয় বিবেচনা করুন, যেগুলো দেখায় যে, একজন অল্পবয়সি একজন শিষ্য হিসেবে ‘তাহার উন্নতি প্রত্যক্ষ’ হতে দিচ্ছে।—১ তীম. ৪:১৫.
শিষ্যত্বের প্রমাণ
আপনার সন্তান কি আপনার বাধ্য? (কল. ৩:২০) সে কি ঘরে তার জন্য নির্ধারিত টুকিটাকি কাজ করে থাকে? বাইবেল ১২ বছর বয়সি যিশু সম্বন্ধে বলে: “তিনি [তাঁর বাবা-মার] বশীভূত থাকিলেন।” (লূক ২:৫১) অবশ্য, বর্তমানে কোনো সন্তানই পুরোপুরিভাবে তার বাবা-মায়ের বাধ্য থাকবে না। কিন্তু, সত্য খ্রিস্টানদের “[যিশুর] পদচিহ্নের অনুগমন” করতে হয়। তাই, যে-অল্পবয়সিরা বাপ্তিস্মের ব্যাপারে আগ্রহী, তাদের এই সুনাম থাকা উচিত যে, তারা তাদের বাবা-মার বাধ্য।—১ পিতর ২:২১.
এই প্রশ্নগুলো বিবেচনা করুন: আপনার সন্তান কি পরিচর্যায় পূর্ণরূপে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে ‘প্রথমে রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করে’? (মথি ৬:৩৩) সে কি অন্যদের কাছে সুসমাচার জানাতে ইচ্ছুক নাকি পরিচর্যায় যাওয়ার জন্য এবং ঘরে ঘরে কথা বলার জন্য তাকে আপনার বার বার উৎসাহিত করতে হয়? সে কি অবাপ্তাইজিত প্রকাশক হিসেবে তার দায়িত্ব সম্বন্ধে সচেতন? ক্ষেত্রের পরিচর্যায় যে-আগ্রহী ব্যক্তিদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়, তাদের সঙ্গে পুনর্সাক্ষাৎ করার ব্যাপারে তার কি আকাঙ্ক্ষা রয়েছে? সে কি সহছাত্রছাত্রীদের ও শিক্ষকদের জানিয়েছে যে, সে একজন যিহোবার সাক্ষি?
মণ্ডলীর সভাগুলোতে যোগ দেওয়া কি তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়? (গীত. ১২২:১) সে কি প্রহরীদুর্গ অধ্যয়নে ও মণ্ডলীর বাইবেল অধ্যয়নে মন্তব্য করে আনন্দ পায়? সে কি উদ্যমের সঙ্গে ঐশিক পরিচর্যা বিদ্যালয়-এ অংশগ্রহণ করে?—ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫.
আপনার সন্তান কি স্কুলে অথবা অন্য কোনো জায়গায় ক্ষতিকর সংসর্গ এড়িয়ে চলার মাধ্যমে নৈতিকভাবে শুদ্ধ থাকার জন্য প্রচেষ্টা করে? (হিতো. ১৩:২০) সংগীত, চলচ্চিত্র, টেলিভিশনের অনুষ্ঠান, ভিডিও গেমস্ ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে সে কী ধরনের বাছাই করে থাকে? তার কথা ও কাজগুলো কি এই প্রমাণ দেয় যে, সে বাইবেলের নীতিগুলোর সঙ্গে মিল রেখে কাজ করতে চায়?
আপনার সন্তান বাইবেল সম্বন্ধে কতটা ভালোভাবে জানে? পারিবারিক উপাসনার সন্ধ্যায় সে যা শিখে থাকে, তা কি সে নিজের ভাষায় বলতে পারে? সে কি বাইবেলের মৌলিক সত্যগুলো ব্যাখ্যা করতে পারে? (হিতো. ২:৬-৯) সে কি আগ্রহ সহকারে বাইবেল পড়ে এবং বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস শ্রেণীর দ্বারা প্রকাশিত প্রকাশনা অধ্যয়ন করে? (মথি ২৪:৪৫) সে কি বাইবেলের বিভিন্ন শিক্ষা ও পদ সম্বন্ধে প্রশ্ন করে?
এই প্রশ্নগুলো হয়তো আপনাকে আপনার সন্তানের আধ্যাত্মিক উন্নতি সম্বন্ধে মূল্যায়ন করতে সাহায্য করবে। এই বিষয়গুলো বিবেচনা করার পর, আপনি হয়তো এই উপসংহারে আসতে পারেন যে, বাপ্তাইজিত হওয়ার আগে তার
কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি করা উচিত। কিন্তু, তার জীবনধারা যদি শিষ্যত্ব গ্রহণের প্রমাণ দেয় এবং সে যদি সত্যিই তার জীবন ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গ করে থাকে, তাহলে আপনি হয়তো এইরকম মনে করতে পারেন যে, তাকে বাপ্তাইজিত হতে দেওয়া যায়।অল্পবয়সিরা যিহোবার প্রশংসা করতে পারে
ঈশ্বরের অনেক দাস তাদের কিশোর বয়সে বা তারও আগে বিশ্বস্ততা এবং আনুগত্য প্রদর্শন করেছে। যোষেফ, শমূয়েল, যোশিয় ও যিশুর কথা চিন্তা করুন। (আদি. ৩৭:২; ৩৯:১-৩; ১ শমূ. ১:২৪-২৮; ২:১৮-২০; ২ বংশা. ৩৪:১-৩; লূক ২:৪২-৪৯) আর ফিলিপের চার মেয়ে, যারা ভবিষ্যদ্বাণী করত, তাদেরকে নিশ্চয়ই অল্পবয়স থেকেই উত্তম প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।—প্রেরিত ২১:৮, ৯.
গ্রিসের একজন সাক্ষি বলেন: “আমি ১২ বছর বয়সে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলাম। আমি আমার সিদ্ধান্তের কারণে কখনো আপশোস করিনি। তখন থেকে ২৪ বছর পার হয়ে গিয়েছে, যার মধ্যে ২৩ বছরই আমি পূর্ণসময়ের সেবা করে কাটিয়েছি। যিহোবার প্রতি আমার ভালোবাসা আমাকে সবসময় যৌবনকালের বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে সাহায্য করেছে। এখন আমার যেরকম শাস্ত্রীয় জ্ঞান রয়েছে, তা ১২ বছর বয়সে ছিল না। কিন্তু, আমি জানতাম যে, আমি যিহোবাকে ভালোবাসি এবং চিরকাল তাঁর সেবা করতে চাই। আমি আনন্দিত যে, তিনি আমাকে ক্রমাগত তাঁর সেবা করে চলায় সাহায্য করেছেন।”
প্রকৃতই শিষ্যত্বের প্রমাণ দেয় এমন একজন ব্যক্তি, তা তিনি অল্পবয়সি অথবা বয়স্ক, যা-ই হোন না কেন, তার বাপ্তাইজিত হওয়া উচিত। প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “লোকে হৃদয়ে বিশ্বাস করে, ধার্ম্মিকতার জন্য, এবং মুখে স্বীকার করে, পরিত্রাণের জন্য।” (রোমীয় ১০:১০) খ্রিস্টের একজন অল্পবয়সি শিষ্য যখন বাপ্তিস্মের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তখন সে ও তার বাবা-মা উভয়েই বিশেষ কিছু সম্পাদন করে। কোনো কিছুই যেন আপনাকে অথবা আপনার সন্তানকে আপনাদের সামনে যে-আনন্দ রয়েছে, তা থেকে বঞ্চিত করতে না পারে।
[পাদটীকা]
^ কিছু নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
[৫ পৃষ্ঠার বাক্স]
বাপ্তিস্ম সম্বন্ধে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি
কোনো কোনো বাবা-মা তাদের সন্তানদের বাপ্তিস্মকে এমন এক উপকারজনক পদক্ষেপ হিসেবে দেখে থাকে, যেটার সঙ্গে ঝুঁকি জড়িত রয়েছে—অনেকটা ড্রাইভিং লাইসেন্স লাভ করার মতো। কিন্তু, বাপ্তিস্ম ও পবিত্র সেবা কি কখনো একজন ব্যক্তির ভবিষ্যৎ সাফল্যকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে? এক্ষেত্রে বাইবেলের উত্তর হল, না। হিতোপদেশ ১০:২২ পদ বলে: “সদাপ্রভুর আশীর্ব্বাদই ধনবান করে, এবং তিনি তাহার সহিত মনোদুঃখ দেন না।” আর প্রেরিত পৌল অল্পবয়সি তীমথিয়ের উদ্দেশে এই কথা লিখেছিলেন: “বাস্তবিকই ভক্তি, সন্তোষযুক্ত হইলে, মহালাভের উপায়।”—১ তীম. ৬:৬.
এটা ঠিক যে, যিহোবার সেবা করা সহজ নয়। যিরমিয় ঈশ্বরের ভাববাদী হিসেবে কাজ করার সময় অনেক কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও, তিনি সত্য ঈশ্বরের উপাসনা সম্বন্ধে এই কথা লিখেছিলেন: “তোমার বাক্য সকল আমার আমোদ ও চিত্তের হর্ষজনক ছিল; কেননা হে সদাপ্রভু, বাহিনীগণের ঈশ্বর, আমার উপরে তোমার নাম কীর্ত্তিত।” (যির. ১৫:১৬) যিরমিয় জানতেন যে, ঈশ্বরের সেবা করাই তার আনন্দের উৎস ছিল। শয়তানের জগৎ হল দুঃখকষ্টের উৎস। এই পার্থক্যটা যাতে সন্তানরা বুঝতে পারে, সেইজন্য বাবা-মাদেরকে তাদের সন্তানদের সাহায্য করতে হবে।—যির. ১:১৯.
[৬ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]
আমার সন্তানের কি বাপ্তিস্ম নেওয়ার আগে আরেকটু অপেক্ষা করা উচিত?
কখনো কখনো, এমনকী ছেলে-মেয়েরা যখন বাপ্তিস্ম নেওয়ার যোগ্য থাকে, তখনও তাদের বাবা-মায়েরা হয়তো সিদ্ধান্ত নেয় যে, আরেকটু অপেক্ষা করা উচিত। তারা হয়তো কোন কোন যুক্তি দেখাতে পারে?
আমি ভয় পাই যে, আমার সন্তান যদি বাপ্তিস্ম নেয়, তাহলে পরে সে হয়তো কোনো গুরুতর পাপ করে ফেলতেও পারে আর সমাজচ্যুত হয়ে যেতে পারে। এটা বিশ্বাস করা কি যুক্তিসংগত যে, একজন অল্পবয়সি যদি বাপ্তিস্ম নেওয়ার আগে অপেক্ষা করে, তাহলে তাকে তার আচরণের জন্য ঈশ্বরের কাছে নিকাশ দিতে হবে না? শলোমন অল্পবয়সিদের উদ্দেশে এই কথাগুলো বলেছিলেন: “জানিও, ঈশ্বর [তোমার কাজ সকল] ধরিয়া তোমাকে বিচারে আনিবেন।” (উপ. ১১:৯) আর পৌল সুনির্দিষ্টভাবে কোনো বয়স সম্বন্ধে উল্লেখ করেননি, যখন তিনি এই কথা বলেছিলেন: “আমাদের প্রত্যেক জনকে ঈশ্বরের কাছে আপন আপন নিকাশ দিতে হইবে।”—রোমীয় ১৪:১২.
বাপ্তাইজিত এবং অবাপ্তাইজিত উপাসক, উভয়েই যিহোবার কাছে নিকাশ দিতে বাধ্য। ভুলে যাবেন না যে, যিহোবা তাঁর দাসদেরকে ‘তাহাদের শক্তির অতিরিক্ত পরীক্ষা ঘটিতে না দিয়া’ সুরক্ষা করে থাকেন। (১ করি. ১০:১৩) যতক্ষণ পর্যন্ত তারা “প্রবুদ্ধ” থাকে এবং প্রলোভনের সঙ্গে লড়াই করে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই ব্যক্তিরা সমর্থনের জন্য ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করতে পারে। (১ পিতর ৫:৬-৯) একজন খ্রিস্টান মা লেখেন: “যে-সন্তানরা বাপ্তিস্ম নিয়েছে, তাদের এই জগতের মন্দ বিষয়গুলো থেকে দূরে থাকার আরও বেশি কারণ রয়েছে। আমার ছেলে, যে ১৫ বছর বয়সে বাপ্তিস্ম নিয়েছিল, সে মনে করে যে, বাপ্তিস্ম হচ্ছে এক সুরক্ষা। ‘আপনি যিহোবার আইনের বিপরীত কোনো কিছু করার কথা চিন্তা করবেন না,’ সে বলে। বাপ্তিস্ম হচ্ছে ধার্মিকতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে এক জোরালো প্রেরণা।”
আপনি যদি আপনার কথা ও উদাহরণের মাধ্যমে সন্তানদেরকে যিহোবার বাধ্য হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি এই আস্থা রাখতে পারেন যে, তারা বাপ্তাইজিত হওয়ার পরও তাঁর বাধ্য থাকবে। হিতোপদেশ ২০:৭ পদ বলে: “যে ধার্ম্মিক আপন সিদ্ধতায় চলে, তাহার পরে তাহার সন্তানগণ ধন্য।”
আমি প্রথমে দেখতে চাই যে, আমার সন্তান নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্যে পৌঁছেছে। অল্পবয়সিদের কাজ করতে শেখা উচিত, যাতে পরবর্তী সময়ে তারা স্বাবলম্বী হতে পারে। কিন্তু, তাদেরকে এমন এক জীবনধারা গ্রহণ করার ব্যাপারে উৎসাহিত করার মধ্যে বিপদ রয়েছে, যা সত্য উপাসনার পরিবর্তে শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ওপর কেন্দ্রীভূত। যে-“বীজ” অর্থাৎ রাজ্যের বাক্য বৃদ্ধি লাভ করে না, সেটার বিষয়ে যিশু বলেছিলেন: “আর যে কাঁটাবনের মধ্যে উপ্ত, এ সেই যে সেই বাক্য শুনে, আর সংসারের চিন্তা ও ধনের মায়া সেই বাক্য চাপিয়া রাখে, তাহাতে সে ফলহীন হয়।” (মথি ১৩:২২) আধ্যাত্মিক লক্ষ্যকে তুচ্ছ করে জাগতিক লক্ষ্যকে প্রাধান্য দেয় এমন এক জীবনের জন্য করা বিভিন্ন পরিকল্পনা, ঈশ্বরের সেবা করার ব্যাপারে একজন অল্পবয়সির আকাঙ্ক্ষাকে নষ্ট করে দিতে পারে।
যে-অল্পবয়সিরা বাপ্তিস্মের জন্য যোগ্য কিন্তু যাদের বাবা-মায়েরা এই বিষয়ে একমত নয়, তাদের সম্বন্ধে মন্তব্য করতে গিয়ে একজন অভিজ্ঞ প্রাচীন বলেছিলেন: “একজন অল্পবয়সিকে বাপ্তাইজিত হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া আধ্যাত্মিক উন্নতির গতিকে থামিয়ে দিতে পারে আর সেইসঙ্গে নিরুৎসাহিতার দিকে পরিচালিত করতে পারে।” আর একজন ভ্রমণ অধ্যক্ষ লিখেছিলেন: “একজন অল্পবয়সি হয়তো নিজেকে আধ্যাত্মিকভাবে অরক্ষিত অথবা নগণ্য বলে মনে করা শুরু করতে পারে। সে হয়তো কোনো কিছু সম্পাদনের এক অনুভূতি লাভ করার জন্য জগতের ওপর নির্ভর করতে পারে।”
[চিত্র]
বিশ্ববিদ্যালয়কে কি অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত?
[৩ পৃষ্ঠার চিত্র]
একজন অল্পবয়সি শিষ্যত্বের প্রমাণ দিতে পারে
[৩ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]
সভাগুলোর জন্য প্রস্তুতি এবং সভাগুলোতে অংশগ্রহণ
[৪ পৃষ্ঠার চিত্র]
বাবা-মায়ের প্রতি বাধ্যতা
[৪ পৃষ্ঠার চিত্র]
পরিচর্যায় অংশগ্রহণ
[৪ পৃষ্ঠার চিত্র]
ব্যক্তিগত প্রার্থনা