প্রহরীদুর্গ পত্রিকার সহজ সংস্করণ কেন শুরু করা হয়েছিল?
প্রহরীদুর্গ পত্রিকার সহজ সংস্করণ কেন শুরু করা হয়েছিল?
দশকের পর দশক ধরে, সমগ্র পৃথিবীর নারী ও পুরুষরা প্রহরীদুর্গ পত্রিকায় প্রকাশিত বাইবেলভিত্তিক তথ্যের প্রতি উপলব্ধি দেখিয়েছে এবং সেগুলো থেকে উপকৃত হয়েছে। ২০১১ সালের জুলাই মাসে এই পত্রিকার প্রথম সহজ অধ্যয়ন সংস্করণ সংখ্যা ইংরেজি ভাষায় প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই সংখ্যায় ব্যাখ্যা করা হয়েছিল: “এই নতুন সংস্করণ এক বছর পরীক্ষামূলকভাবে ছাপানো হবে, যদি সাহায্যকারী হয়, তবে নিয়মিতভাবে তা প্রকাশ করা হবে।”
তাই, এখন আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করা হচ্ছে, আমরা নিয়মিতভাবে এটা প্রকাশ করে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ছাড়া, ভবিষ্যতে ফ্রেঞ্চ, পর্তুগিজ এবং স্প্যানিশ ভাষাতেও সহজ সংস্করণ পাওয়া যাবে।
যে-কারণে এটা সাহায্যকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে
সহজ সংস্করণ পাওয়ার পর, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বেশ কয়েক জন ব্যক্তি জানিয়েছে: “ভাইবোনেরা এখন প্রকৃতপক্ষেই প্রহরীদুর্গ পত্রিকার অর্থ পুরোপুরি বুঝতে পারছে।” আরেকটা চিঠিতে বলা হয়েছিল: “আগে যে-সময়টা শব্দের এবং অভিব্যক্তিগুলোর অর্থ খুঁজে বের করার জন্য ব্যয় করা হতো, সেই সময়টা এখন উল্লেখিত শাস্ত্রপদগুলোর প্রতি এবং কীভাবে সেগুলো শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সেই বিষয়ে বোধগম্যতা অর্জনের জন্য ব্যবহার করা যাচ্ছে।”
আমেরিকায় বিশ্ববিদ্যালয় উত্তীর্ণ একজন ছাত্রী বলেন: “উচ্চশিক্ষার কঠিন ভাষা বলার এবং লেখার জন্য আমি ১৮ বছর ব্যয় করেছি। আমি জটিলভাবে কথা বলার এবং চিন্তা করার অভ্যাস গড়ে তুলেছিলাম, যেটা আসলে একেবারে অপ্রয়োজনীয়।” আমি উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম, আমি যেভাবে কথা বলি এবং চিন্তা করি তাতে অনেক বড়ো পরিবর্তন করতে হবে। এখন একজন কার্যকারী সুসমাচার প্রচারক হয়ে তিনি লেখেন: “প্রহরীদুর্গ পত্রিকার সহজ সংস্করণ অনেক সাহায্যকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে। বিভিন্ন বিষয়কে
সহজে তুলে ধরার ক্ষেত্রে এই পত্রিকার ভাষা আমার জন্য এক চমৎকার উদাহরণ।”ইংল্যান্ডের একজন বোন, যিনি ১৯৭২ সালে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন, তিনি প্রহরীদুর্গ পত্রিকার সহজ সংস্করণ সম্বন্ধে বলেন: “আমি যখন এই সংস্করণের প্রথম সংখ্যাটি পড়েছিলাম, তখন আমার মনে হয়েছিল, যিহোবা যেন আমার কাঁধে হাত রেখে পাশে বসে আছেন আর আমরা একসঙ্গে এটা পড়ছি। বিষয়টা আমার কাছে এইরকম ছিল, যেন একজন বাবা তার ছোটো সন্তানকে রাতে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়ার আগে গল্প পড়ে শোনাচ্ছেন।”
আমেরিকার বেথেলের একজন বোন, যিনি প্রায় ৪০ বছর হয় বাপ্তিস্ম নিয়েছেন, তিনি বলেছিলেন, সহজ সংস্করণ কখনো কখনো তাকে নতুন অন্তর্দৃষ্টি লাভ করতে সাহায্য করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর (ইংরেজি) সংখ্যায় “কিছু অভিব্যক্তির ব্যাখ্যা” শিরোনামের বাক্সে ইব্রীয় ১২:১ পদে প্রাপ্ত ‘সাক্ষিমেঘ’ অভিব্যক্তিটি সম্বন্ধে বর্ণনা করতে গিয়ে এভাবে বলা হয়েছিল: “তাদের সংখ্যা এত বেশি যে, তা গণনা করা যায় না।” তিনি বলেছিলেন: “এটা সেই পদের ওপর আমার বোধগম্যতাকে আলোকিত করেছিল।” সাপ্তাহিক সভা সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন: “এমনকী একটা বাচ্চা যখন সরাসরি সহজ সংস্করণ থেকে উত্তর দেয়, তখন সেই উত্তর অধিকাংশ ব্যক্তির হাতে থাকা প্রহরীদুর্গ পত্রিকার সাধারণ সংস্করণের কথাগুলো থেকে আলাদা হয়। তাই, সেই বাচ্চার উত্তর শ্রোতাদের কাছে নতুন বলে মনে হয়।”
বেথেলের আরেক জন বোন লিখেছিলেন: “আমি অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে মণ্ডলীতে ছোটোদের উত্তর শোনার জন্য অপেক্ষা করে থাকি। প্রহরীদুর্গ পত্রিকার সহজ সংস্করণ তাদেরকে দৃঢ়তার সঙ্গে উত্তর দিতে সাহায্য করছে। তাদের কথাগুলো আমাকে অনেক উৎসাহিত করে।”
১৯৮৪ সালে বাপ্তিস্ম নিয়েছেন এমন একজন বোন সহজ সংস্করণের জন্য তার উপলব্ধি প্রকাশ করে বলেন: “আমার মনে হয়, এগুলো আমার জন্যই লেখা হয়েছে। এটা পড়ে আমি সহজেই বিষয়বস্তু বুঝতে পারি। এখন আমার এই আস্থা রয়েছে যে, আমি প্রহরীদুর্গ অধ্যয়নের সময় উত্তর দিতে পারব।”
বাবা-মায়েদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান এক হাতিয়ার
সাত বছর বয়সি এক সন্তানের মা মন্তব্য করেছিলেন: “প্রহরীদুর্গ অধ্যয়নের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তাকে বিভিন্ন বাক্যের অর্থ বুঝিয়ে দিতে হতো, যেটা করার জন্য সত্যিই দীর্ঘ সময় লাগত এবং তা ক্লান্তিকরও ছিল।” এই সহজ সংস্করণ কীভাবে সাহায্য করেছিল? তিনি লিখেছিলেন: “আমি অবাক হয়ে যাই যে, সে পড়ায় অংশ নিতে পারে আর যা পড়ছে সত্যিই সেটার অর্থ বুঝতে পারে। যেহেতু শব্দগুলো কঠিন নয় এবং বাক্যগুলোও ছোটো ছোটো, তাই সে আর ঘাবড়ে যায় না। সে আমার সাহায্য ছাড়াই সভার জন্য উত্তর প্রস্তুত করতে শুরু করেছে এবং অধ্যয়নের পুরো সময়টাতে পত্রিকার ওপর মনোযোগ দিতে পারছে।”
নয় বছর বয়সি এক মেয়ের মা লিখেছিলেন: “আগে আমাদেরকে তার উত্তর প্রস্তুত করার সময় সাহায্য করতে হতো। এখন সে নিজেই উত্তর প্রস্তুত করতে পারে। ব্যাখ্যা করার অথবা তথ্যগুলো বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আমাদের খুব কম সময়ই ব্যয় করতে হয়। যেহেতু সে বিষয়গুলো বুঝতে পারে, তাই এখন সে সত্যিই প্রহরীদুর্গ অধ্যয়ন উপভোগ করে থাকে।”
অল্পবয়সিরা কেমন অনুভব করে?
অনেক অল্পবয়সি মনে করে যে, প্রহরীদুর্গ পত্রিকার সহজ সংস্করণটি বিশেষভাবে তাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। বারো বছর বয়সী রেবেকা অনুরোধ করে বলেছিল: “দয়া করে নতুন সংস্করণটি প্রকাশ করা বন্ধ করে দেবেন না!” সে আরও বলেছিল: “‘কিছু অভিব্যক্তির ব্যাখ্যা’ নামের অংশটি আমি অনেক পছন্দ করি। ছোটোদের জন্য এটা অনেক সহজ।”
সাত বছর বয়সি নিকোলেট একইরকম অনুভব করে: “প্রহরীদুর্গ বোঝা আমার জন্য অনেক কঠিন ছিল। এখন আমি নিজে নিজেই আরও বেশি উত্তর দিতে পারি।” নয় বছর বয়সি এমা লিখেছিল: “এটা আমাকে এবং আমার ছয় বছর বয়সি ভাইকে অনেক সাহায্য করে থাকে। আমরা এখন আরও অনেক ভালোভাবে বুঝতে পারি! আপনাদের ধন্যবাদ!”
তাই, অনেকেই প্রহরীদুর্গ পত্রিকার এমন এক সংস্করণ থেকে উপকৃত হচ্ছে, যেটা সহজবোধ্য শব্দ এবং সহজসরল বাক্য ব্যবহার করে থাকে। এটা অনেকের চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে, তাই ১৮৭৯ সাল থেকে প্রকাশিত সাধারণ সংস্করণের মতো মূল্যবান ব্যবস্থার পাশাপাশি এটাও ক্রমাগত ছাপানো হবে।
[৩০ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]
“আগে যে-সময়টা শব্দের এবং অভিব্যক্তিগুলোর অর্থ খুঁজে বের করার জন্য ব্যয় করা হতো, সেই সময়টা এখন উল্লেখিত শাস্ত্রপদগুলোর প্রতি এবং কীভাবে সেগুলো শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সেই বিষয়ে বোধগম্যতা অর্জনের জন্য ব্যবহার করা যাচ্ছে”
[৩১ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]
“আমি অবাক হয়ে যাই যে, সে পড়ায় অংশ নিতে পারে আর যা পড়ছে সত্যিই সেটার অর্থ বুঝতে পারে”