কেন সমাজচ্যুত করার ব্যবস্থাকে এক প্রেমপূর্ণ ব্যবস্থা বলা যায়?
“আমার ছেলেকে সমাজচ্যুত করা হয়েছে, এই ঘোষণাটা শোনার সঙ্গেসঙ্গে আমার পায়ের নীচ থেকে যেন মাটি সরে গিয়েছিল,” হুলিয়ান স্মরণ করে বলেন। “সে আমার বড়ো সন্তান আর আমরা দু-জন অনেক ঘনিষ্ঠ ছিলাম; আমরা একসঙ্গে অনেক কিছু করতাম। সে সবসময়ই উদাহরণযোগ্য সন্তান ছিল, কিন্তু হঠাৎ করেই সে এমন আচরণ শুরু করেছিল, যা মেনে নেওয়া যায় না। আমার স্ত্রী প্রায়ই কান্নাকাটি করত, কিন্তু তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার জানা ছিল না। আমরা নিজেদের বার বার এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছি, বাবা-মা হিসেবে আমরা কি কোনো দিক দিয়ে ব্যর্থ হয়েছি?”
কোনো খ্রিস্টানকে সমাজচ্যুত করার ফল যদি এতটাই কষ্টদায়ক হয়, তাহলে কীভাবে এটাকে এক প্রেমপূর্ণ ব্যবস্থা বলা যেতে পারে? এই ধরনের এক কঠিন পদক্ষেপ নেওয়ার পিছনে শাস্ত্রীয় কোন কারণ রয়েছে? আর কেন একজন ব্যক্তি সমাজচ্যুত হন?
যে-দুটো বিষয়ের জন্য সমাজচ্যুত করা হয়
দুটো বিষয়ের জন্য একজন যিহোবার সাক্ষিকে সমাজচ্যুত করা হয়ে থাকে। আর এই দুটো বিষয় একসঙ্গে প্রমাণিত হতে হবে। প্রথমত, একজন বাপ্তাইজিত সাক্ষি গুরুতর কোনো পাপ করেছেন। দ্বিতীয়ত, তিনি তার পাপের জন্য অনুতপ্ত নন।
যিহোবা আমাদের কাছ থেকে যদিও সিদ্ধতা দাবি করেন না, তবে তাঁর পবিত্রতার মানদণ্ড রয়েছে এবং তিনি আশা করেন তাঁর দাসেরা সেই মান অনুযায়ী চলবে। উদাহরণ স্বরূপ, যিহোবা আমাদের জোরালো পরামর্শ দেন যেন আমরা ব্যভিচার, প্রতিমাপূজা, চুরি, অন্যের ধন কেড়ে নেওয়া, নরহত্যা এবং মায়া বা প্রেতচর্চার মতো গুরুতর পাপ এড়িয়ে চলি।
আপনি কি এই বিষয়ে একমত নন, যিহোবার শুচি মানগুলো যুক্তিযুক্ত এবং সেগুলো আমাদের সুরক্ষা করে? আমাদের মধ্যে কেই-বা এমন শান্তিপ্রিয় ও সৎ লোকেদের মধ্যে বাস করতে চাইবেন না, যাদের উপর নির্ভর করা যায়? আমাদের আধ্যাত্মিক ভাই-বোনদের মাঝে আমরা এইরকম পরিবেশ খুঁজে পাই। আর তা সম্ভব হয়েছে কারণ আমরা ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গীকরণের সময় এই প্রতিজ্ঞা করি, আমরা তাঁর বাক্যে প্রাপ্ত নির্দেশনার সঙ্গে মিল রেখে জীবনযাপন করব।
কিন্তু, একজন বাপ্তাইজিত খ্রিস্টান যদি মানব দুর্বলতার কারণে গুরুতর কোনো পাপ করে ফেলেন, তাহলে? অতীতে যিহোবার বিশ্বস্ত দাসেরা এই ধরনের ভুল করেছিলেন কিন্তু ঈশ্বর তাদের একেবারে পরিত্যাগ করেননি। এক্ষেত্রে রাজা দায়ূদ এক সুপরিচিত উদাহরণ। দায়ূদ ব্যভিচার এবং হত্যা করেছিলেন; তা সত্ত্বেও ভাববাদী নাথন তাকে এই বার্তা জানিয়েছিলেন: ‘সদাপ্রভু আপনার পাপ দূর করিলেন।’
ঈশ্বর দায়ূদের পাপ ক্ষমা করেছিলেন কারণ দায়ূদ আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হয়েছিলেন। (গীত. ৩২:১-৫) বর্তমানে যিহোবার একজন দাস যদি অননুতপ্ত মনোভাব দেখান অথবা খারাপ কাজ করেই চলেন, তাহলে তাকে সমাজচ্যুত করা হয়। (প্রেরিত. ৩:১৯; ২৬:২০) যে-প্রাচীনরা বিচার সংক্রান্ত কমিটিতে সেবা করেন, তারা যদি একজন ব্যক্তির আন্তরিক অনুতাপ দেখতে না পান, তাহলে তারা সেই ব্যক্তিকে সমাজচ্যুত করেন।
একজন অন্যায়কারীকে সমাজচ্যুত করার সিদ্ধান্তটা, প্রথম প্রথম আমাদের কাছে চরম ধরনের, এমনকী নিষ্ঠুর এক কাজ বলে মনে হতে পারে, বিশেষভাবে সেই ব্যক্তির সঙ্গে যদি আমাদের ঘনিষ্ঠ
সম্পর্ক থাকে। তবে, এই ধরনের সিদ্ধান্ত যে প্রেমপূর্ণ, তা বিশ্বাস করার উপযুক্ত কারণ যিহোবার বাক্য থেকে পাওয়া যায়।সমাজচ্যুত করার ব্যবস্থা সকলের জন্য উপকারজনক হতে পারে
যিশু বলেছিলেন, “প্রজ্ঞা নিজ কর্ম্মসমূহ দ্বারা নির্দ্দোষ বলিয়া গণিত হয়।” (মথি ১১:১৯) একজন অননুতপ্ত অন্যায়কারীকে সমাজচ্যুত করার বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত, নির্দোষ বা উত্তম ফলাফল নিয়ে আসে। এই তিনটা বিষয় বিবেচনা করুন:
অন্যায়কারীদের সমাজচ্যুত করা যিহোবার নামের গৌরব নিয়ে আসে। আমরা যেহেতু যিহোবার নাম বহন করি, তাই আমাদের আচরণ নিশ্চিতভাবেই তাঁর নামের উপর প্রভাব ফেলে। (যিশা. ৪৩:১০) কোনো সন্তানের আচরণ যেমন তার বাবা-মায়ের জন্য সম্মান অথবা দুর্নাম নিয়ে আসতে পারে, ঠিক তেমনই যিহোবার লোকেদের উত্তম অথবা মন্দ উদাহরণ, যিহোবা সম্বন্ধে অন্য লোকেরা কেমন অনুভব করে, সেটার উপর কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলে। যিহোবার নাম বহনকারী লোকেরা যখন তাঁর নৈতিক মানগুলো নিখুঁতভাবে মেনে চলে, তখন ঈশ্বরের সুনাম বজায় থাকে। যিহিষ্কেলের সময়ে পরিস্থিতি অনেকটা এইরকম ছিল কারণ সেই সময়ে বিভিন্ন জাতির লোকেরা যিহোবাকে যিহুদিদের ঈশ্বর হিসেবে জানত।
আমরা যদি অনৈতিকতায় রত হই, তাহলে আমরা ঈশ্বরের পবিত্র নামের দুর্নাম নিয়ে আসতে পারি। প্রেরিত পিতর খ্রিস্টানদের পরামর্শ দিয়েছিলেন: “আজ্ঞাবহতার সন্তান বলিয়া তোমরা তোমাদের পূর্ব্বকার অজ্ঞানতাকালের অভিলাষের অনুরূপ হইও না, কিন্তু যিনি তোমাদিগকে আহ্বান করিয়াছেন, সেই পবিত্রতমের ন্যায় আপনারাও সমস্ত আচার ব্যবহারে পবিত্র হও; কেননা লেখা আছে, ‘তোমরা পবিত্র হইবে, কারণ আমি পবিত্র।’” (১ পিতর ১:১৪-১৬) শুদ্ধ ও পবিত্র আচরণ যিহোবার নামের প্রতি সম্মান নিয়ে আসে।
কিন্তু, একজন যিহোবার সাক্ষি যদি খারাপ কাজ করে চলেন, তাহলে তার বন্ধুবান্ধব ও পরিচিত ব্যক্তিরা সম্ভবত সেই আচরণ সম্বন্ধে জানবে। সমাজচ্যুত করার ব্যবস্থা দেখায় যে, যিহোবার এমন শুচি লোকেরা রয়েছে, যারা সেই পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য শাস্ত্রীয় নির্দেশনার প্রতি বাধ্য থাকে। একবার একজন অপরিচিত ব্যক্তি সুইজারল্যান্ডের একটা কিংডম হলে সভাতে আসেন এবং বলেন, তিনি মণ্ডলীর একজন সদস্য হতে চান। তার বোনকে অনৈতিক কাজের জন্য সমাজচ্যুত করা হয়েছে। তিনি বলেন, তিনি এমন একটা সংগঠনে যোগ দিতে চান, যেখানে “মন্দ আচরণকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না।”
সমাজচ্যুত করার ব্যবস্থা শুচি খ্রিস্টীয় মণ্ডলীকে সুরক্ষা করে। প্রেরিত পৌল করিন্থীয়দেরকে তাদের মাঝে স্বেচ্ছাকৃত পাপীদের থাকতে দেওয়ার বিপদ সম্বন্ধে সাবধান করে দিয়েছিলেন। তিনি এই ধরনের ব্যক্তিদের খারাপ প্রভাবকে তাড়ির সঙ্গে তুলনা করেন, যেটার কারণে সুজির তাল ফুলে উঠতে পারে। “অল্প তাড়ী সূজীর সমস্ত তাল তাড়ীময় করিয়া ফেলে,” তিনি বলেন। তারপর তিনি তাদের এই পরামর্শ দেন: “তোমরা আপনাদের মধ্য হইতে সেই দুষ্টকে বাহির করিয়া দেও।”
স্পষ্টতই, পৌল যে-‘দুষ্ট’ ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেছিলেন, তিনি খোলাখুলিভাবে অনৈতিক কাজে রত ছিলেন। আর মণ্ডলীর অন্য সদস্যরা এমনকী তার আচরণকে ন্যায্য প্রতিপন্ন করতে শুরু করেছিল। (১ করি. ৫:১, ২) এই ধরনের গুরুতর পাপ প্রশ্রয় দেওয়া হলে, অন্য খ্রিস্টানরা তাদের লম্পটতাপূর্ণ নগরের অনৈতিক রীতিনীতিগুলো অনুসরণ করার জন্য প্ররোচিত হতো। স্বেচ্ছাকৃত পাপ উপেক্ষা করা ঐশিক মানগুলোর প্রতি এক শিথিল মনোভাব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ইন্ধন জোগায়। (উপ. ৮:১১) এ ছাড়া, অননুতপ্ত পাপীরা “ব্যাঘাতক [জলাচ্ছন্ন শৈল, পাদটীকা]” হয়ে উঠতে পারে এবং মণ্ডলীতে অন্যদের বিশ্বাসরূপ নৌকা ভেঙে ফেলতে পারে।
সমাজচ্যুত করার ব্যবস্থা একজন অন্যায়কারীকে চেতনা ফিরে পেতে সাহায্য করে। একবার যিশু একজন যুবকের কথা বলেছিলেন, যে তার বাবার ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছিল এবং উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া তার সমস্ত সম্পদ অনৈতিক জীবনযাপন করে অপচয় করে ফেলেছিল। অপব্যয়ী পুত্র তিক্ত অভিজ্ঞতা লাভ করার মাধ্যমে শিখতে পেরেছিল, তার পিতার বাড়ির বাইরে জীবন অসার ও নির্দয়। সেই পুত্র অবশেষে তার চেতনা ফিরে পেয়েছিল, অনুতপ্ত হয়েছিল এবং পরিবারে ফিরে আসার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিল। (লূক ১৫:১১-২৪) যিশুর বর্ণনায় একজন প্রেমময় পিতা সম্বন্ধে তুলে ধরা হয়েছে, যিনি তার পুত্রের মন পরিবর্তনের ফলে অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছিলেন। আর তা আমাদেরকে যিহোবার অনুভূতি বুঝতে সাহায্য করে। “দুষ্ট লোকের মরণে আমার সন্তোষ নাই; বরং দুষ্ট লোক যে আপন পথ হইতে ফিরিয়া বাঁচে, [ইহাতেই আমার সন্তোষ]।”
একইভাবে সমাজচ্যুত ব্যক্তিরা, যারা এখন আর তাদের আধ্যাত্মিক পরিবার অর্থাৎ খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর সদস্য নন, তারা হয়তো একসময় উপলব্ধি করবেন, তারা কী হারিয়েছেন। তাদের পাপপূর্ণ কাজের তিক্ত ফল এবং আগে তারা যিহোবা ও তাঁর লোকেদের সঙ্গে যে-উত্তম সম্পর্ক উপভোগ করতেন, সেই আনন্দপূর্ণ দিনগুলোর অভিজ্ঞতা, হয়তো তাদের চেতনা ফিরে পেতে সাহায্য করবে।
গীত. ১৪১:৫) উদাহরণ হিসেবে চিন্তা করুন: একজন পর্বতারোহী এক কনকনে ঠাণ্ডার দিনে প্রচণ্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তিনি হাইপোথারমিয়ায় আক্রান্ত হন অর্থাৎ তার শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমে যায় আর এর ফলে তিনি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। তিনি যদি তুষারের উপর ঘুমিয়ে পড়েন, তাহলে তিনি মারা যাবেন। উদ্ধারকারী দলের জন্য অপেক্ষা করার সময়, তাকে জাগিয়ে রাখার জন্য তার সঙ্গী বার বার তার গালে চড় মারেন। ঠাণ্ডার মধ্যে চড়ের আঘাত হয়তো কাঁটার মতো বিঁধতে পারে। কিন্তু সেটা তার জীবন বাঁচাতে পারে। একইভাবে, দায়ূদ বুঝতে পেরেছিলেন, তার ভালোর জন্য একজন ধার্মিক ব্যক্তি এমনভাবে সংশোধন করতে পারেন, যা ব্যথা দিতে পারে।
কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ করার জন্য প্রেম এবং দৃঢ়তা প্রয়োজন। “ধার্ম্মিক লোক আমাকে প্রহার করুক, সেটী দয়া; সে আমাকে অনুযোগ করুক, তাহা মস্তকের তৈল,” গীতরচক দায়ূদ বলেছিলেন। (অনেক ক্ষেত্রে, সমাজচ্যুত করার ফলে অন্যায়কারী এমন শাসন লাভ করেন, যা তার প্রয়োজন ছিল। শুরুতে উল্লেখিত হুলিয়ানের ছেলে প্রায় দশ বছর পর তার জীবনধারা শুচি করেছিলেন, মণ্ডলীতে ফিরে এসেছিলেন এবং এখন একজন প্রাচীন হিসেবে সেবা করছেন। তিনি স্বীকার করেন, “সমাজচ্যুত হওয়ায় আমি নিজের জীবনযাপনের করুণ পরিণতি স্বচক্ষে দেখতে পেরেছি। আমার এইরকম শাসনই প্রয়োজন ছিল।”
সমাজচ্যুত ব্যক্তিদের সঙ্গে যেভাবে প্রেমপূর্ণ উপায়ে আচরণ করা যায়
এটা ঠিক, সমাজচ্যুত হওয়া আধ্যাত্মিক ক্ষতি নিয়ে আসে কিন্তু সেটা যে এক অপূরণীয় ক্ষতি, এমন নয়। সমাজচ্যুত করার ব্যবস্থা যেন এর উদ্দেশ্য পূর্ণ করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের সকলের ভূমিকা রয়েছে।
প্রাচীনরা, যারা সমাজচ্যুত করার সিদ্ধান্ত জানানোর মতো কঠিন কাজ করে থাকেন, তাদের যিহোবার প্রেম প্রতিফলিত করার প্রচেষ্টা করতে হবে। তারা যখন সেই ব্যক্তিকে তাদের সিদ্ধান্ত জানান, তখন তারা সদয় ও স্পষ্টভাবে তাকে সেই পদক্ষেপগুলো সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করেন, যেগুলো তাকে মণ্ডলীতে পুনর্বহাল হতে সাহায্য করবে। যে-সমাজচ্যুত ব্যক্তিরা তাদের পথ পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে কিছু প্রমাণ দিয়ে থাকেন, তারা কীভাবে যিহোবার কাছে ফিরে আসতে পারেন, তাদেরকে সেটা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য প্রাচীনরা নির্দিষ্ট সময় পর পর সেই ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন। *
পরিবারের সদস্যরা সমাজচ্যুত করার সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেখানোর মাধ্যমে মণ্ডলীর প্রতি এবং অন্যায়কারীর প্রতি প্রেম দেখাতে পারেন। হুলিয়ান বলেন, “সমাজচ্যুত হওয়ার পরও সে আমারই ছেলে, কিন্তু তার জীবনধারা আমাদের মধ্যে এক বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।”
মণ্ডলীর সকলে সমাজচ্যুত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ এবং কথাবার্তা বলা এড়িয়ে চলার মাধ্যমে নীতির দ্বারা পরিচালিত প্রেম দেখাতে পারেন। (১ করি. ৫:১১; ২ যোহন ১০, ১১) এভাবে, যিহোবা প্রাচীনদের মাধ্যমে অন্যায়কারীকে যে-শাসন প্রদান করেছেন, সেটাকে তারা আরও কার্যকরী করে তোলেন। এ ছাড়া, সমাজচ্যুত ব্যক্তির পরিবার গভীরভাবে দুঃখার্ত থাকে আর তাই মণ্ডলীর সদস্যরা তাদের প্রতি আরও বেশি প্রেম দেখাতে এবং তাদের সমর্থন করতে পারেন। আর মণ্ডলীর সদস্যদের আচরণ থেকে তারা যেন এইরকম ইঙ্গিত না পায়, সহবিশ্বাসীদের সঙ্গে মেলামেশা থেকে তারাও বহিষ্কৃত।
হুলিয়ান উপসংহারে বলেন, “সমাজচ্যুত করার ব্যবস্থা আমাদের প্রয়োজন আর এটা যিহোবার মান অনুসারে জীবনযাপন করার ক্ষেত্রে আমাদের সাহায্য করে। যদিও এই কারণে অনেক কষ্ট লাগে, কিন্তু পরিশেষে তা উত্তম ফল নিয়ে আসে। আমি যদি আমার ছেলের খারাপ আচরণকে প্রশ্রয় দিতাম, তাহলে সে কখনোই ফিরে আসতে পারত না।”
^ অনু. 24 ১৯৯২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ১৭-১৯ পৃষ্ঠা দেখুন।