সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

ঈশ্বর কি আপনাকে ধনসম্পদ দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন?

ঈশ্বর কি আপনাকে ধনসম্পদ দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন?

ঈশ্বর কি আপনাকে ধনসম্পদ দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন?

‘ঈশ্বর চান যেন আপনি ধনী হন—গ্যারেজে কয়েকটা গাড়ি থাকে, সফল ব্যাবসা থাকে। তাঁর ওপর পুরোপুরি বিশ্বাস রাখুন আর আপনার যত টাকাপয়সা রয়েছে, তাঁকে দিন।’

ব্রাজিলের একটি খবরের কাগজ অনুসারে, কয়েকটা নির্দিষ্ট ধর্মীয় দল উপরোক্ত বার্তাটি ছড়াচ্ছে। এই বার্তাটিকে অনেকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে, নিজেদের খ্রিস্টান বলে দাবি করে এমন লোকেদের মধ্যে করা জরিপ সম্বন্ধে টাইম পত্রিকা রিপোর্ট করে: “৬১% লোক বিশ্বাস করে যে, ঈশ্বর চান যেন লোকেরা ধনী হয়। আর ৩১% . . . লোক এই ব্যাপারে একমত যে, আপনি যদি ঈশ্বরকে আপনার টাকাপয়সা দেন, তাহলে ঈশ্বরও আপনাকে আরও বেশি দেবেন।”

এই ধরনের বিশ্বাস, যেগুলো প্রায়ই সফল হওয়ার ধর্মমত হিসেবে পরিচিত, সেগুলো বিশেষ করে ব্রাজিলের মতো ল্যাটিন-আমেরিকার দেশগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে আর লোকেরা দলে দলে সেই গির্জাগুলোতে যাচ্ছে, যেগুলো ঈশ্বরের কাছ থেকে বস্তুগত আশীর্বাদের বিষয়ে প্রতিজ্ঞা করে। কিন্তু, যারা ঈশ্বরকে সেবা করে, তাদেরকে কি ঈশ্বর আসলেই ধনসম্পদ দেওয়ার বিষয়ে প্রতিজ্ঞা করেন? অতীতে ঈশ্বরের সব দাসই কি ধনী ছিল?

এটা ঠিক যে, ইব্রীয় শাস্ত্র-এ আমরা প্রায়ই দেখি, ঈশ্বর যাদের আশীর্বাদ করেছিলেন, তারা বস্তুগত দিক দিয়ে ধনী ছিল। উদাহরণস্বরূপ, দ্বিতীয় বিবরণ ৮:১৮ পদে আমরা পড়ি: “তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে স্মরণে রাখিবে, কেননা . . . তিনিই তোমাকে ঐশ্বর্য্য লাভের সামর্থ্য দিলেন।” এই কথাগুলো ইস্রায়েলীয়দের আশ্বাস দিয়েছিল যে, তারা যদি ঈশ্বরের বাধ্য হয়, তাহলে তিনি তাদেরকে এক সমৃদ্ধিশীল জাতি করে তুলবেন।

কিন্তু, ব্যক্তি বিশেষদের বিষয়ে কী বলা যায়? বিশ্বস্ত ব্যক্তি ইয়োব ছিলেন প্রচুর ধনী এবং শয়তান তাকে নিঃস্ব করে ফেলার পর, যিহোবা ইয়োবকে “দ্বিগুণ” ধনসম্পদ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। (ইয়োব ১:৩; ৪২:১০) অব্রাহামও একজন ধনী ব্যক্তি ছিলেন। আদিপুস্তক ১৩:২ পদ বলে যে, তিনি “পশুধনে ও স্বর্ণ রৌপ্যে অতিশয় ধনবান্‌ ছিলেন।” যখন প্রাচ্যের চার জন রাজার জোটবাহিনী অব্রাহামের ভাইপো লোটকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তখন অব্রাহাম “আপন গৃহজাত তিন শত আঠার জন অভ্যস্ত দাসকে লইয়া . . . গেলেন।” (আদিপুস্তক ১৪:১৪) অব্রাহামের গৃহে অস্ত্র বহন করতে সমর্থ ৩১৮ জন “অভ্যস্ত দাসকে” নিশ্চয়ই এক বিরাট সংখ্যা বলা যায়। এত বড়ো এক পরিবারের ভরণপোষণ করার ব্যাপারে তার সামর্থ্য ইঙ্গিত করে যে, তিনি খুবই ধনী ব্যক্তি ছিলেন, যার প্রচুর মেষপাল ও গোপাল ছিল।

হ্যাঁ, অতীতে ঈশ্বরের বেশ কয়েক জন বিশ্বস্ত দাস—অব্রাহাম, ইস্‌হাক, যাকোব, দায়ূদ, শলোমন হল মাত্র কয়েক জনের নাম, যারা—ধনী ছিল। কিন্তু, তার মানে কি এই যে, যারা তাঁকে সেবা করবে, তাদের প্রত্যেককে ঈশ্বর ধনী করবেন? অন্যদিকে, কেউ যদি দরিদ্র হয়, তাহলে তার মানে কি এই যে, তার ওপর ঈশ্বরের আশীর্বাদ নেই? পরের প্রবন্ধ এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করবে। (w০৯ ০৯/০১)