অধ্যায় ৯
“তোমরা ব্যভিচার হইতে পলায়ন কর”
“অতএব তোমরা পৃথিবীস্থ আপন আপন অঙ্গ সকল মৃত্যুসাৎ কর, যথা, বেশ্যাগমন, অশুচিতা, মোহ [“দেহলালসা,” জুবিলী বাইবেল], কুঅভিলাষ, এবং লোভ, এ ত প্রতিমাপূজা।” —কলসীয় ৩:৫.
১, ২. যিহোবার লোকেদের ক্ষতি করার জন্য বিলিয়ম কীভাবে ফন্দি এঁটেছিলেন?
একজন জেলে মাছ ধরার জন্য তার প্রিয় একটা জায়গায় গিয়েছেন। তিনি নির্দিষ্ট এক ধরনের মাছ ধরতে চান। তিনি একটা টোপ বাছাই করেন এবং তার বঁড়শি জলের মধ্যে ছুঁড়ে মারেন। কিছুক্ষণ পর, বঁড়শির সুতোতে টান পড়ে, ছিপ বেঁকে যায় এবং তিনি তার হাতের রিল ঘোরাতে থাকেন। তিনি হাসেন কারণ তিনি জানেন যে তিনি সঠিক টোপই বেছে নিয়েছেন।
২ খ্রিস্টপূর্ব ১৪৭৩ সালে, বিলিয়ম নামে এক ব্যক্তি একটা টোপ ফেলার জন্য অনেক চিন্তা করেছিলেন। তবে, তার মূল শিকার ছিল যিহোবার লোকেরা, যারা প্রতিজ্ঞাত দেশের একেবারে সীমান্তে, মোয়াব তলভূমিতে শিবিরস্থাপন করেছিল। বিলিয়ম নিজেকে যিহোবার একজন ভাববাদী বলে দাবি করতেন, কিন্তু আসলে তিনি একজন লোভী ব্যক্তি ছিলেন, যাকে ইস্রায়েলকে অভিশাপ দেওয়ার জন্য ভাড়া করা হয়েছিল। যাইহোক, যিহোবার হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বিলিয়ম ইস্রায়েলকে শুধু আশীর্বাদ করতেই সমর্থ ছিলেন। তার পুরস্কার লাভ করার ব্যাপারে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হয়ে বিলিয়ম এই যুক্তি করেছিলেন যে, তিনি হয়তো ঈশ্বরকে দিয়ে তাঁর নিজ লোকেদের শাপ দেওয়াতে পারবেন, যদি তাদেরকে কেবলমাত্র গুরুতর পাপ করার জন্য প্রলোভিত করা যায়। সেই লক্ষ্য মাথায় রেখে বিলিয়ম একটা টোপ ফেলেন আর তা হল মোয়াবের ছলনাময়ী যুবতীরা।—গণনাপুস্তক ২২:১-৭; ৩১:১৫, ১৬; প্রকাশিত বাক্য ২:১৪.
৩. বিলিয়মের ফঁন্দি কতটা সফল হয়েছিল?
৩ এই কৌশল কি কার্যকারী হয়েছিল? হ্যাঁ, কিছুটা। হাজার হাজার ইস্রায়েলীয় পুরুষ ‘মোয়াবের কন্যাদের সহিত ব্যভিচার করিবার’ দ্বারা সেই টোপ গিলেছিল। তারা এমনকী মোয়াবীয় দেবতাদের উপাসনা করতে শুরু করেছিল, যার মধ্যে উর্বরতা বা যৌনতার দেবতা ঘৃণ্য বাল্-পিয়োরও ছিল। এর ফলে প্রতিজ্ঞাত দেশের ঠিক সীমান্তের কাছাকাছি এসে ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে ২৪,০০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল। সেটা কত বড়ো দুঃখজনক ঘটনাই না ছিল!—গণনাপুস্তক ২৫:১-৯.
৪. কেন হাজার হাজার ইস্রায়েলীয় অনৈতিকতার শিকারে পরিণত হয়েছিল?
৪ কোন বিষয়টা এই বিপর্যয় ডেকে এনেছিল? অনেকে যিহোবার কাছ থেকে সরে পড়ার মাধ্যমে এক মন্দ হৃদয় গড়ে তুলেছিল, যে-ঈশ্বর তাদেরকে মিশর থেকে উদ্ধার করেছিলেন, প্রান্তরে প্রতিপালন করেছিলেন এবং তাদেরকে প্রতিজ্ঞাত দেশের সীমান্ত পর্যন্ত পরিচালিত করেছিলেন। (ইব্রীয় ৩:১২) এই বিষয়টা বিবেচনা করে প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “আর যেমন তাঁহাদের মধ্যে কতক লোক ব্যভিচার করিয়াছিল, এবং এক দিনে তেইশ হাজার লোক মারা পড়িল, আমরা যেন তেমনি ব্যভিচার না করি।” a—১ করিন্থীয় ১০:৮.
৫, ৬. কেন মোয়াব তলভূমিতে ইস্রায়েলের পাপ সম্বন্ধীয় বিবরণ আজকে আমাদের জন্য মূল্যবান?
৫ গণনাপুস্তক বইয়ের বিবরণে, আজকে ঈশ্বরের লোকেদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা রয়েছে, যারা আরও মহান প্রতিজ্ঞাত দেশের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। (১ করিন্থীয় ১০:১১) উদাহরণ স্বরূপ, যৌনতার প্রতি জগতের আসক্তি প্রাচীন মোয়াবীয়দের আসক্তির সমরূপ, তবে তা আরও ব্যাপক আকারে। অধিকন্তু, প্রতি বছর হাজার হাজার খ্রিস্টান অনৈতিকতার ফাঁদে পা দেয়—সেই একই টোপ, যেটা ইস্রায়েলীয়রা গিলেছিল। (২ করিন্থীয় ২:১১) আর সিম্রি, যিনি নির্লজ্জভাবে গর্বের সঙ্গে একজন মিদিয়নীয় স্ত্রীলোককে ইস্রায়েলের শিবিরে তার নিজের তাঁবুতে নিয়ে এসেছিলেন, তাকে অনুকরণ করে আজকে ঈশ্বরের লোকদের সঙ্গে মেলামেশা করে এমন কেউ কেউ আর এমনকী কিছু বাপ্তাইজিত খ্রিস্টানও খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর মধ্যে এক কলুষিত প্রভাব ফেলেছে।—গণনাপুস্তক ২৫:৬, ১৪; যিহূদা ৪.
৬ আপনি কি নিজেকে আধুনিক দিনের মোয়াব তলভূমিতে দেখতে পান? আপনি কি আপনার পুরস্কারকে—দীর্ঘপ্রতিক্ষীত নতুন জগৎকে—আসন্নপ্রায় বলে দেখতে পাচ্ছেন? যদি তা-ই হয়, তাহলে এই আজ্ঞায় মনোযোগ দেওয়ার মাধ্যমে ঈশ্বরের প্রেমে অবস্থিতি করার জন্য আপনার যথাসাধ্য করুন: “তোমরা ব্যভিচার হইতে পলায়ন কর।”—১ করিন্থীয় ৬:১৮.
ব্যভিচার কী?
৭, ৮. “ব্যভিচার” কী আর যারা তা করেই চলে, তারা কীভাবে যা বোনে তা কাটে?
৭ বাইবেলে যেমনটা ব্যবহৃত হয়েছে, “ব্যভিচার” (গ্রিক পরনিয়া) বলতে শাস্ত্রসম্মত বিবাহের বাইরে অবৈধ যৌনসম্পর্ককে বোঝায়। এর অন্তর্ভুক্ত পারদারিকতা, বেশ্যাবৃত্তি এবং অবিবাহিত ব্যক্তিদের মধ্যে যৌনসম্পর্ক (ও সেইসঙ্গে মৌখিক যৌনতা অর্থাৎ মুখের দ্বারা যৌনাঙ্গের অপব্যবহার এবং পায়ু যৌনতা অর্থাৎ পায়ু দ্বারা যৌনক্রিয়া) আর এমন ব্যক্তির যৌনাঙ্গের অপব্যবহার করা, যার সঙ্গে বিয়ে হয়নি। এ ছাড়া, এর অন্তর্ভুক্ত সমলিঙ্গের ব্যক্তিদের মধ্যে এই ধরনের কার্যকলাপ ও সেইসঙ্গে পশুগমন অর্থাৎ কোনো পশুর সঙ্গে যৌনসম্পর্ক করা অথবা কামোদ্দীপক উদ্দেশ্যে পশুর যৌনাঙ্গের অপব্যবহার করা। b
৮ শাস্ত্র এই ব্যাপারে একেবারে স্পষ্ট: যারা ব্যভিচার করেই চলে, তারা খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে থাকতে পারবে না এবং অনন্তজীবন লাভ করবে না। (১ করিন্থীয় ৬:৯, ১০; প্রকাশিত বাক্য ২২:১৫) অধিকন্তু, এমনকী এখনই তারা বিভিন্নভাবে নিজেদের জন্য অনেক ক্ষতি নিয়ে আসছে যেমন, নির্ভরতা ও আত্মসম্মান হারানো, বৈবাহিক মতপার্থক্য, এক দোষী বিবেক, অবাঞ্ছিত গর্ভ, রোগ ও এমনকী মৃত্যু। (পড়ুন, গালাতীয় ৬:৭, ৮.) কেন এমন একটা পথ বেছে নেবেন, যা অনেক দুর্দশায় পূর্ণ? দুঃখজনক যে, অনেকে যখন প্রথম ভুল পদক্ষেপ নেয়—যার সঙ্গে প্রায়ই পর্নোগ্রাফি জড়িত থাকে—তখন তারা ভয়াবহ পরিণতিগুলো সম্বন্ধে চিন্তা করে না
পর্নোগ্রাফি—প্রথম পদক্ষেপ
৯. পর্নোগ্রাফি কি অক্ষতিকর, যেমনটা কেউ কেউ দাবি করে থাকে? ব্যাখ্যা করুন।
৯ অনেক দেশে পর্নোগ্রাফিকে সংবাদপত্র বিক্রয়ের স্টল, গানবাজনা এবং টেলিভিশনের মধ্যে ফলাও করে তুলে ধরা হয় আর এটা বলতে গেলে ইন্টারনেটের প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে। c এটা কি অক্ষতিকর বিষয়, যেমনটা কেউ কেউ দাবি করে থাকে? একেবারেই না! যারা পর্নোগ্রাফি দেখে থাকে, তারা অভ্যাসগত হস্তমৈথুনকারীতে পরিণত হতে পারে এবং ‘জঘন্য রিপু’ বা অনিয়ন্ত্রিত যৌনকামনা পোষণ করতে পারে, যার ফল হয়তো যৌনতা ও বিকৃত রুচির প্রতি আসক্তি, গুরুতর বৈবাহিক মতপার্থক্য আর এমনকী বিবাহবিচ্ছেদ। d (রোমীয় ১:২৪-২৭; ইফিষীয় ৪:১৯) একজন গবেষক যৌনতার প্রতি আসক্তিকে ক্যান্সারের সঙ্গে তুলনা করেন। “এটা বাড়তেই থাকে এবং ছড়াতে থাকে,” তিনি বলেন। “এটা খুব কমই হ্রাস পায় আর এটার সঙ্গে মোকাবিলা করা ও তা কাটিয়ে ওঠা খুবই কঠিন।”
১০. কোন কোন উপায়ে আমরা যাকোব ১:১৪, ১৫ পদে প্রাপ্ত নীতিটা কাজে লাগাতে পারি? (এ ছাড়া, “ নৈতিকভাবে শুচি থাকার জন্য যেভাবে আমি শক্তি পেয়েছিলাম” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।)
১০ যাকোব ১:১৪, ১৫ পদে লিপিবদ্ধ কথাগুলো বিবেচনা করুন, যেখানে লেখা আছে: “প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কামনা দ্বারা আকর্ষিত ও প্ররোচিত হইয়া পরীক্ষিত হয়। পরে কামনা সগর্ভা হইয়া পাপ প্রসব করে, এবং পাপ পরিপক্ব হইয়া মৃত্যুকে জন্ম দেয়।” তাই, আপনার মনে যদি কোনো মন্দ আকাঙ্ক্ষা প্রবেশ করে, তাহলে সেটা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য সঙ্গেসঙ্গে পদক্ষেপ নিন! উদাহরণ স্বরূপ, আপনি যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে যৌন উদ্দীপনামূলক চিত্র দেখে ফেলেন, তাহলে সঙ্গেসঙ্গে চোখ ফিরিয়ে নিন অথবা আপনার কম্পিউটার বন্ধ করে দিন বা টিভি চ্যানেল পরিবর্তন করুন। অনৈতিক আকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার এবং আপনাকে কাবু করে ফেলার আগেই এই আকাঙ্ক্ষার কাছে নতিস্বীকার করা এড়িয়ে চলার জন্য যা-কিছু প্রয়োজন, তার সবই করুন!—পড়ুন, মথি ৫:২৯, ৩০.
১১. মন্দ আকাঙ্ক্ষাগুলোর সঙ্গে লড়াই করার সময় কীভাবে আমরা যিহোবার উপর আমাদের নির্ভরতা দেখাতে পারি?
১১ আমাদের নিজেদের চেয়েও যিনি আমাদেরকে আরও বেশি ভালো জানেন, তিনি উত্তম কারণেই এই জোরালো পরামর্শ দিয়েছেন: “অতএব তোমরা পৃথিবীস্থ আপন আপন অঙ্গ সকল মৃত্যুসাৎ কর, যথা, বেশ্যাগমন, অশুচিতা, দেহলালসা, কুঅভিলাষ, এবং লোভ, এ ত প্রতিমাপূজা।” (কলসীয় ৩:৫) এটা ঠিক যে, তা করা কঠিন হতে পারে। কিন্তু, মনে রাখবেন যে, আমাদের এমন একজন প্রেমময় ও ধৈর্যশীল স্বর্গীয় পিতা রয়েছেন, যাঁর কাছে মিনতি করতে পারি। (গীতসংহিতা ৬৮:১৯) তাই, যখন মন্দ চিন্তাভাবনা আপনার মনে ঢোকে, তখন সত্বর তাঁর শরণাপন্ন হোন। ‘পরাক্রমের উৎকর্ষের [‘অসাধারণ মহাশক্তির,’ বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন]’ জন্য প্রার্থনা করুন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার জন্য নিজের মনকে বাধ্য করুন।—২ করিন্থীয় ৪:৭; ১ করিন্থীয় ৯:২৭; “ কীভাবে আমি এক মন্দ অভ্যাস ত্যাগ করতে পারি?” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।
১২. আমাদের “হৃদয়” কী আর কেন আমাদের তা রক্ষা করতে হবে?
১২ বিজ্ঞ রাজা শলোমন লিখেছিলেন: “সমস্ত রক্ষণীয় অপেক্ষা তোমার হৃদয় রক্ষা কর কেননা তাহা হইতে জীবনের উদ্গম হয়।” (হিতোপদেশ ৪:২৩) আমাদের “হৃদয়” হল আমাদের ভিতরের ব্যক্তিত্ব—ঈশ্বরের চোখে একজন ব্যক্তি হিসেবে আমরা আসলে যেরকম। অধিকন্তু, আমাদের “হৃদয়” সম্বন্ধে ঈশ্বরের মূল্যায়নই নির্ধারণ করে যে, আমরা অনন্তজীবন লাভ করব কি করব না—অন্যেরা আমাদের কীভাবে দেখে তার দ্বারা নয়। এটা সহজ বিষয়, তবে সেইসঙ্গে গুরুতরও। বিশ্বস্ত ব্যক্তি ইয়োব যেন কোনো মহিলার দিকে অশোভনভাবে না তাকান, সেইজন্য তিনি তার চোখের সঙ্গে এক নিয়ম বা চুক্তি করেছিলেন। (ইয়োব ৩১:১) আমাদের জন্য কী এক চমৎকার উদাহরণ! একই মনোভাব দেখিয়ে একজন গীতরচক প্রার্থনা করেছিলেন: “অলীকতা-দর্শন হইতে আমার চক্ষু ফিরাও।”—গীতসংহিতা ১১৯:৩৭.
দীণার মূর্খতাপূর্ণ বাছাই
১৩. দীণা কে ছিলেন আর কেন তার বন্ধুবান্ধব বাছাই মূর্খতাপূর্ণ ছিল?
১৩তিন অধ্যায়ে আমরা যেমন দেখেছি যে, আমাদের বন্ধুবান্ধব আমাদের উপর জোরালো প্রভাব ফেলতে পারে, হতে পারে তা ভালো কিংবা মন্দ। (হিতোপদেশ ১৩:২০; পড়ুন, ১ করিন্থীয় ১৫:৩৩.) কুলপতি যাকোবের মেয়ে দীণার উদাহরণ বিবেচনা করুন। ছোটোবেলায় উত্তম প্রশিক্ষণ পাওয়ার পরও দীণা মূর্খতাপূর্ণভাবে কনানীয় মেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছিলেন। মোয়াবীয়দের মতো কনানীয়রাও অনৈতিকতার জন্য কুখ্যাত ছিল। (লেবীয় পুস্তক ১৮:৬-২৫) শিখিম, যিনি তার পিতৃকুলের মধ্যে “সর্ব্বাপেক্ষা সম্ভ্রান্ত” ব্যক্তি ছিলেন, তিনি ও সেইসঙ্গে কনানীয় পুরুষদের চোখে দীণাকে এমন একজন নারী বলে মনে হয়েছিল, যার সঙ্গে চাইলেই অনৈতিক যৌনসম্পর্ক করা যেতে পারে।—আদিপুস্তক ৩৪:১৮, ১৯.
১৪. কীভাবে দীণার বন্ধুবান্ধব বাছাইয়ের বিষয়টা দুঃখজনক ঘটনা ঘটিয়েছিল?
১৪ দীণা যখন শিখিমকে দেখেছিলেন, তখন তার মনে হয়তো যৌনসম্পর্ক করার বিষয়টা ছিল না। কিন্তু, শিখিম সেই কাজটা করেছিলেন, যেটাকে অধিকাংশ কনানীয় যৌন অনুভূতি জেগে উঠলে স্বাভাবিক বলে বিবেচনা করত। শেষ মুহূর্তে দীণার কোনো বাধাতেই লাভ হয়নি কারণ শিখিম ‘তাহাকে হরণ করিয়াছিলেন’ এবং ‘তাহাকে ভ্রষ্ট করিয়াছিলেন।’ মনে হয় পরে শিখিম দীণাকে ‘প্রেম করিয়াছিলেন’ কিন্তু তা দীণার প্রতি তিনি যা করেছিলেন, সেটাকে পরিবর্তন করে দেয়নি। (পড়ুন, আদিপুস্তক ৩৪:১-৪.) আর এর ফলে কেবল দীণা একাই কষ্টভোগ করেননি। তার বন্ধুবান্ধব বাছাইয়ের বিষয়টা এমন ঘটনাগুলোর সূত্রপাত ঘটিয়েছিল, যেগুলো তার সম্পূর্ণ পরিবারের উপর অপমান ও নিন্দা নিয়ে এসেছিল।—আদিপুস্তক ৩৪:৭, ২৫-৩১; গালাতীয় ৬:৭, ৮.
১৫, ১৬. কীভাবে আমরা প্রকৃত প্রজ্ঞা পেতে পারি? (এ ছাড়া, “ ধ্যানের জন্য শাস্ত্রপদ” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।)
১৫ দীণা যদি কোনো মূল্যবান শিক্ষা শিখে থাকেন, তাহলে তিনি তা দুঃখজনক উপায়ে শিখেছিলেন। যারা যিহোবাকে ভালোবাসে ও তাঁর বাধ্য হয়, তাদের জীবনের শিক্ষাগুলো দুঃখজনক উপায়ে শেখার প্রয়োজন নেই। কারণ তারা ঈশ্বরের কথা মনোযোগের সঙ্গে শোনে ও তারা “জ্ঞানীদের সহচর” হওয়া বেছে নেয়। (হিতোপদেশ ১৩:২০ক) এভাবে তারা “সমস্ত উত্তম পথ” বুঝতে পারে এবং অপ্রয়োজনীয় সমস্যা ও কষ্টগুলো এড়াতে পারে।—হিতোপদেশ ২:৬-৯; গীতসংহিতা ১:১-৩.
১৬ ঈশ্বরীয় প্রজ্ঞা সেইসমস্ত ব্যক্তিরা লাভ করতে পারে, যারা এর জন্য আকাঙ্ক্ষা করে আর সেইসঙ্গে অবিরত প্রার্থনা এবং নিয়মিতভাবে ঈশ্বরের বাক্য ও বিশ্বস্ত দাসের দ্বারা জোগানো বিষয়বস্তু অধ্যয়ন করার মাধ্যমে সেই আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী কাজ করে। (মথি ২৪:৪৫; যাকোব ১:৫) এ ছাড়া, নম্রতাও গুরুত্বপূর্ণ, যা শাস্ত্রীয় পরামর্শে স্বেচ্ছায় মনোযোগ দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। (২ রাজাবলি ২২:১৮, ১৯) উদাহরণ স্বরূপ, একজন খ্রিস্টান হয়তো সাধারণভাবে এটা মেনে নিতে পারেন যে, তার হৃদয় বঞ্চক ও অপ্রতিকার্য বা বেপরোয়া। (যিরমিয় ১৭:৯) কিন্তু, তিনি যদি এমন কোনো পরিস্থিতির মুখোমুখি হন, যেখানে তিনি উত্তম বিচারবুদ্ধি ব্যবহার করছেন না, তখন কি তিনি নির্দিষ্ট ও প্রেমময় পরামর্শ এবং সাহায্য গ্রহণ করার জন্য যথেষ্ট নম্র হন?
১৭. এমন একটা পরিস্থিতি সম্বন্ধে বর্ণনা করুন, যা একটা পরিবারে উত্থাপিত হতে পারে আর দেখান যে, কীভাবে একজন বাবা তার মেয়ের সঙ্গে যুক্তি করতে পারেন।
১৭ এই পরিস্থিতিটা একটু কল্পনা করুন। একজন বাবা তার মেয়েকে একজন খ্রিস্টান যুবকের সঙ্গে অভিভাবকবিহীন বাইরে যেতে অনুমতি দেন না। তাই, সেই মেয়েটি বলে: “কিন্তু বাবা, তুমি কি আমাকে বিশ্বাস করো না? আমরা অন্যায় কিছু করব না!” সে হয়তো যিহোবাকে ভালোবাসে এবং তার হয়তো সদুদ্দেশ্য রয়েছে কিন্তু সে কি ‘[ঈশ্বরীয়] প্রজ্ঞা-পথে চলিতেছে’? সে কি ‘ব্যভিচার হইতে পলায়ন করিতেছে’? নাকি সে মূর্খের মতো ‘নিজ হৃদয়কে বিশ্বাস করিতেছে’? (হিতোপদেশ ২৮:২৬) আপনি হয়তো আরও নীতি সম্বন্ধে চিন্তা করতে পারেন, যেগুলো এই বাবা ও তার মেয়েকে এই বিষয়ে যুক্তি করতে সাহায্য করবে।—দেখুন, হিতোপদেশ ২২:৩; মথি ৬:১৩; ২৬:৪১.
যোষেফ ব্যভিচার থেকে পলায়ন করেছিলেন
১৮, ১৯. যোষেফের জীবনে কোন প্রলোভন এসেছিল আর তিনি সেটার সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করেছিলেন?
১৮ যোষেফ ছিলেন খুব ভালো একজন যুবক, যিনি ঈশ্বরকে ভালোবাসতেন ও ব্যভিচার থেকে পলায়ন করেছিলেন। তিনি ছিলেন দীণার সৎভাই। (আদিপুস্তক ৩০:২০-২৪) ছোটো থাকতে যোষেফ নিজে তার দিদির নির্বুদ্ধিতার পরিণাম দেখেছিলেন। কোনো সন্দেহ নেই যে, এই স্মৃতিগুলো ও সেইসঙ্গে ঈশ্বরের প্রেমে অবস্থিতি করার বিষয়ে যোষেফের আকাঙ্ক্ষা, তাকে মিশরে একজন দাস হিসেবে থাকাকালীন সুরক্ষা করেছিল। সেখানে তার প্রভুর স্ত্রী “দিন দিন” তাকে প্রলোভিত করার চেষ্টা করেছিলেন। যোষেফকে তার প্রভু একজন দাস হিসেবে নিয়ে এসেছিলেন আর দাসদের এই স্বাধীনতা ছিল না যে, তারা চাইলেই যখন-তখন তাদের প্রভুর কাজ ত্যাগ করতে পারবে। তাই, যোষেফকে সেই পরিস্থিতি বিজ্ঞতা এবং সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়েছিল। আর পোটীফরের স্ত্রীকে বার বার না বলার এবং অবশেষে তার কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে তিনি তা করেছিলেন।—পড়ুন, আদিপুস্তক ৩৯:৭-১২.
১৯ একটু চিন্তা করুন: যোষেফ যদি সেই নারীকে নিয়ে কল্পনা করতেন অথবা যৌনতার বিষয় নিয়ে দিবাস্বপ্ন দেখেই চলতেন, তাহলে তিনি কি তার নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখতে পারতেন? খুব সম্ভবত, না। পাপপূর্ণ চিন্তাভাবনা করে চলার পরিবর্তে যোষেফ যিহোবার সঙ্গে তার সম্পর্ককে মূল্যবান বলে গণ্য করেছিলেন, যা পোটীফরের স্ত্রীর প্রতি বলা তার কথাগুলোর মধ্যে স্পষ্ট হয়েছিল। “আমার প্রভু” তিনি বলেছিলেন, “সমুদয়ের মধ্যে কেবল আপনাকেই আমার অধীনা করেন নাই, কারণ আপনি তাঁহার ভার্য্যা। অতএব আমি কিরূপে এই মহা দুষ্কর্ম্ম করিতে ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করিতে পারি?”—আদিপুস্তক ৩৯:৮, ৯.
২০. কীভাবে যিহোবা যোষেফের ক্ষেত্রে বিষয়গুলো কৌশলে পরিচালনা করেছিলেন?
২০ যিহোবা যখন যুবক যোষেফকে তার পরিবার থেকে দূরে থাকা সত্ত্বেও দিনের পর দিন তার নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখতে দেখেছিলেন, তখন তিনি নিশ্চয়ই কত আনন্দিত হয়েছিলেন, তা একটু কল্পনা করুন। (হিতোপদেশ ২৭:১১) পরবর্তী সময়ে, যিহোবা বিষয়গুলোকে কৌশলে পরিচালনা করেছিলেন, যার ফলে যোষেফ কেবল কারাগার থেকে মুক্তিই লাভ করেননি কিন্তু সেইসঙ্গে মিশরের প্রধানমন্ত্রী ও খাদ্য প্রশাসকও হয়েছিলেন! (আদিপুস্তক ৪১:৩৯-৪৯) গীতসংহিতা ৯৭:১০ পদের কথাগুলো কতই-না সত্য: “হে সদাপ্রভু-প্রেমিকগণ, দুষ্টতাকে ঘৃণা কর তিনি আপন সাধুবর্গের [“অনুগত ব্যক্তিদের,” NW] প্রাণ রক্ষা করেন, দুষ্টগণের হস্ত হইতে তাহাদিগকে উদ্ধার করেন”!
২১. কীভাবে আফ্রিকার একজন অল্পবয়সি ভাই নৈতিক দিক দিয়ে সাহসের পরিচয় দিয়েছিলেন?
২১ একইভাবে আজকে, ঈশ্বরের অনেক দাস দেখায় যে, তারা ‘মন্দকে ঘৃণা করে ও উত্তমকে ভালবাসে।’ (আমোষ ৫:১৫) আফ্রিকার একজন অল্পবয়সি ভাই স্মরণ করে বলে যে, সহপাঠী একজন মেয়ে এই ভাইকে নির্লজ্জভাবে বলেছিল যে, ভাই যদি তাকে অঙ্ক পরীক্ষার সময় সাহায্য করে, তাহলে সেটার বিনিময়ে সে তার সঙ্গে যৌনসম্পর্ক করবে। “আমি সঙ্গেসঙ্গে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলাম,” সে বলে। “নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখার মাধ্যমে আমি আমার মর্যাদা ও আত্মসম্মান বজায় রেখেছি, যা সোনা ও রুপো থেকেও আরও বেশি মূল্যবান।” এটা ঠিক যে, পাপ হয়তো “ক্ষণিক সুখভোগ” দান করতে পারে কিন্তু এই ধরনের ক্ষণস্থায়ী উত্তেজনা প্রায়ই অনেক কষ্ট নিয়ে আসে। (ইব্রীয় ১১:২৫) অধিকন্তু, যিহোবার বাধ্য হওয়ার ফলে যে-স্থায়ী সুখ আসে, সেটার সঙ্গে তুলনা করলে সেগুলো একেবারেই তুচ্ছ।—হিতোপদেশ ১০:২২.
করুণাময় ঈশ্বরের কাছ থেকে সাহায্য গ্রহণ করুন
২২, ২৩. (ক) কোনো খ্রিস্টান যদি গুরুতর পাপ করে থাকেন, তাহলে কেন তার পরিস্থিতি আশাহীন নয়? (খ) একজন অন্যায়কারী কোন সাহায্য পেতে পারেন?
২২ অসিদ্ধ হওয়ায় আমরা সকলে মাংসিক আকাঙ্ক্ষাগুলোকে বশে রাখার ও ঈশ্বরের দৃষ্টিতে যা সঠিক, তা করার জন্য লড়াই করি। (রোমীয় ৭:২১-২৫) যিহোবা এই সম্বন্ধে অবগত আছেন, “আমরা যে ধূলিমাত্র, ইহা তাঁহার স্মরণে আছে।” (গীতসংহিতা ১০৩:১৪) তবে, মাঝে মাঝে কোনো খ্রিস্টান হয়তো গুরুতর পাপ করে ফেলতে পারেন। তার পরিস্থিতি কি আশাহীন? কখনোই না! এটা ঠিক যে, অন্যায়কারী হয়তো তিক্ত ফলভোগ করতে পারেন, যেমনটা রাজা দায়ূদ করেছিলেন। তা সত্ত্বেও, ঈশ্বর সবসময়ই সেই ব্যক্তিদের প্রতি “ক্ষমাবান্,” যারা অনুতপ্ত হয় এবং নিজেদের পাপ “স্বীকার” করে।—গীতসংহিতা ৮৬:৫; যাকোব ৫:১৬; পড়ুন, হিতোপদেশ ২৮:১৩.
২৩ অধিকন্তু, ঈশ্বর সদয়ভাবে খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে ‘মনুষ্যদিগের নানা বর’ বা দানরূপ মানুষদের—যোগ্য এবং একইসঙ্গে সাহায্য করতে ইচ্ছুক এমন পরিপক্ব আধ্যাত্মিক পালকদের—প্রদান করেছেন। (ইফিষীয় ৪:৮, ১২; যাকোব ৫:১৪, ১৫) তাদের লক্ষ্য হল একজন অন্যায়কারীকে ঈশ্বরের সঙ্গে তার সম্পর্ককে পুনর্স্থাপন করতে এবং সেই বিজ্ঞ ব্যক্তির বাক্যানুসারে ‘বুদ্ধি উপার্জ্জন করিতে’ সাহায্য করা, যাতে তিনি সেই পাপ পুনরায় না করেন।—হিতোপদেশ ১৫:৩২.
‘বুদ্ধি উপার্জ্জন করুন’
২৪, ২৫. (ক) হিতোপদেশ ৭:৬-২৩ পদে বর্ণিত যুবক কীভাবে দেখিয়েছিল যে, সে “বুদ্ধিবিহীন”? (খ) কীভাবে আমরা ‘বুদ্ধি উপার্জ্জন করিতে’ পারি?
২৪ বাইবেল “বুদ্ধিবিহীন” লোকেদের এবং যারা ‘বুদ্ধি উপার্জ্জন করে,’ তাদের বিষয়ে বলে। (হিতোপদেশ ৭:৭) আধ্যাত্মিক অপরিপক্বতা এবং ঈশ্বরের পরিচর্যায় অনভিজ্ঞতার দরুন একজন “বুদ্ধিবিহীন” ব্যক্তি হয়তো উত্তম বিচার করতে ব্যর্থ হতে পারেন। হিতোপদেশ ৭:৬-২৩ পদে বলা যুবকের মতো তিনি হয়তো আরও সহজেই গুরুতর পাপের শিকারে পরিণত হতে পারেন। কিন্তু যিনি ‘বুদ্ধি উপার্জ্জন করেন,’ তিনি নিয়মিত ও প্রার্থনাপূর্বক ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন করার মাধ্যমে ভিতরের ব্যক্তিত্বের প্রতি গভীর মনোযোগ দেন। আর তার অসিদ্ধ অবস্থায় যতদূর সম্ভব, তিনি ঈশ্বরের অনুমোদন অনুযায়ী তার চিন্তাভাবনা, আকাঙ্ক্ষা, আবেগ ও জীবনের লক্ষ্যগুলোকে সমন্বয় করে থাকেন। এভাবে তিনি ‘আপন প্রাণকে প্রেম করেন’ অথবা নিজের জন্য আশীর্বাদ নিয়ে আসেন এবং ‘মঙ্গল পান।’—হিতোপদেশ ১৯:৮.
২৫ নিজেকে জিজ্ঞেস করুন: ‘আমি কি এই বিষয়ে পূর্ণরূপে দৃঢ়প্রত্যয়ী যে, ঈশ্বরের মানগুলো সঠিক? আমি কি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সেগুলো মেনে চলার ফলে সর্বোত্তম সুখ আসবে?’ (গীতসংহিতা ১৯:৭-১০; যিশাইয় ৪৮:১৭, ১৮) আপনার যদি এমনকী বিন্দুমাত্র সন্দেহ থেকে থাকে, তাহলে সেটা দূর করার চেষ্টা করুন। ঈশ্বরের আইনগুলো উপেক্ষা করার পরিণতিগুলো নিয়ে ধ্যান করুন। অধিকন্তু, সত্যের সঙ্গে মিল রেখে জীবনযাপন করার এবং আপনার মনকে গঠনমূলক চিন্তাভাবনা—সত্য, ন্যায্য, বিশুদ্ধ, প্রীতিজনক এবং সদ্গুণযুক্ত বিষয়গুলো—দ্বারা পূর্ণ করার মাধ্যমে ‘আস্বাদন করিয়া দেখুন, সদাপ্রভু মঙ্গলময়।’ (গীতসংহিতা ৩৪:৮; ফিলিপীয় ৪:৮, ৯) আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, আপনি যত বেশি তা করবেন, ঈশ্বরের প্রতি আপনার প্রেম তত বেশি বৃদ্ধি পাবে, তিনি যে-বিষয়গুলো ভালোবাসেন, সেগুলো ভালোবাসবেন এবং তিনি যেগুলো ঘৃণা করেন, সেগুলো ঘৃণা করবেন। যোষেফ কোনো অতিমানব ছিলেন না। তা সত্ত্বেও, তিনি ‘ব্যভিচার হইতে পলায়ন করিতে’ সমর্থ হয়েছিলেন কারণ তিনি যিহোবাকে অনেক বছর ধরে তাকে গঠন করতে ও তার মধ্যে ঈশ্বরকে খুশি করার আকাঙ্ক্ষা গড়ে তুলতে দিয়েছিলেন। আপনার বেলায়ও যেন তা সত্য হয়।—যিশাইয় ৬৪:৮.
২৬. পরে কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা হবে?
২৬ আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদের প্রজনন অঙ্গগুলো তৈরি করেছেন আর তা নিছক রোমাঞ্চিত হওয়ার খেলনা হিসেবে নয়, বরং আমরা যেন বংশবৃদ্ধি করতে পারি ও বিবাহের মধ্যে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক উপভোগ করতে পারি। (হিতোপদেশ ৫:১৮) বিয়ে সম্বন্ধে ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গি পরের দুটো অধ্যায়ে আলোচনা করা হবে।
a গণনাপুস্তক বইয়ে যে-সংখ্যা দেওয়া হয়েছে, সেটার মধ্যে স্পষ্টতই বিচারকদের দ্বারা হত ‘লোকদের সমস্ত অধ্যক্ষ’ ছিল, যাদের সংখ্যা হয়তো ১,০০০ জন এবং তারাও অন্তর্ভুক্ত, যারা সরাসরি যিহোবার দ্বারা হত হয়েছিল।—গণনাপুস্তক ২৫:৪, ৫.
b অশুচিতা ও স্বৈরিতার অর্থ সম্বন্ধে আলোচনা করার জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত ২০০৬ সালের ১৫ জুলাই প্রহরীদুর্গ পত্রিকার “পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল” দেখুন।
c এখানে ব্যবহৃত “পর্নোগ্রাফি” শব্দটা চিত্রের মাধ্যমে, লিখিতভাবে অথবা টেলিফোনের মাধ্যমে রেকর্ডকৃত কিংবা সরাসরি কথাবার্তায় যৌন উদ্দীপনামূলক বিষয়বস্তুর বর্ণনাকে নির্দেশ করে, যা যৌন উত্তেজনাকে জাগিয়ে তোলার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়। পর্নোগ্রাফির অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, যৌন উদ্দীপনামূলক ভঙ্গিমায় একজন ব্যক্তির ছবি থেকে শুরু করে দু-জন বা তারও বেশি ব্যক্তির মধ্যে সবচেয়ে নোংরা ধরনের যৌনক্রিয়ার চিত্র বা বর্ণনা।
d হস্তমৈথুন সম্বন্ধে পরিশিষ্টের “হস্তমৈথুনের অভ্যাস কাটিয়ে উঠুন” শিরোনামের প্রবন্ধে আলোচনা করা হয়েছে।