অভ্যাসগুলি যা ঈশ্বর ঘৃণা করেন
পাঠ ১০
অভ্যাসগুলি যা ঈশ্বর ঘৃণা করেন
ঈশ্বর যে বিষয়গুলিকে মন্দ বলেন সে সম্বন্ধে আপনার কী মনে করা উচিত? (১)
কিধরনের যৌন আচরণ নীতিবিরুদ্ধ? (২)
এক খ্রীষ্টীয় ব্যক্তির কী অভিমত থাকা উচিত মিথ্যা বলা সম্বন্ধে? (৩) জুয়াখেলা সম্বন্ধে? (৩) চুরি করা সম্বন্ধে? (৩) দৌরাত্ম্য সম্বন্ধে? (৪) প্রেতচর্চা সম্বন্ধে? (৫) মত্ততা সম্বন্ধে? (৬)
কিভাবে একজন ব্যক্তি বদভ্যাসগুলি ছাড়তে পারে? (৭)
১. যা উত্তম তা ঈশ্বরের সেবকেরা ভালবাসে। কিন্তু যা মন্দ তাকেও তাদের অবশ্যই ঘৃণা করতে শিখতে হবে। (গীতসংহিতা ৯৭:১০) যার অর্থ কিছু কিছু অভ্যাস পরিত্যাগ করা যেগুলি ঈশ্বর ঘৃণা করেন। ঐ অভ্যাসগুলির কয়েকটি কী?
২. ব্যভিচার: বিবাহের পূর্বে যৌনমিলন, পারদারিকতা, পাশবিকতা, অজাচার এবং সমকামিতা সমস্তই ঈশ্বরের বিরুদ্ধে গুরুতর পাপ। (লেবীয় পুস্তক ১৮:৬; রোমীয় ১:২৬, ২৭; ১ করিন্থীয় ৬:৯, ১০) যদি কোন যুগল পুরুষ ও নারী বিবাহিত নয় অথচ একত্রে বাস করে, তাদের উচিত পৃথক হওয়া অথবা আইনত বিবাহ করা।—ইব্রীয় ১৩:৪.
৩. মিথ্যা বলা, জুয়াখেলা, চুরি করা: যিহোবা ঈশ্বর মিথ্যা বলতে পারেন না। (তীত ১:২) যারা তাঁর অনুমোদন চায় সেই ব্যক্তিদের অবশ্যই মিথ্যা বলা ত্যাগ করতে হবে। (হিতোপদেশ ৬:১৬-১৯; কলসীয় ৩:৯, ১০) যে কোন প্রকারের জুয়াখেলা লোভ দ্বারা সংক্রামিত। তাই খ্রীষ্টীয় ব্যক্তিরা কোন প্রকার জুয়াখেলাতেই অংশ নেয় না, যেমন লটারি, ঘোড়দৌড়, এবং বিঙ্গো। (ইফিষীয় ৫:৩-৫) আর খ্রীষ্টানগণ চুরি করে না। অপহৃত সম্পত্তি তারা জ্ঞানত ক্রয় করে না অথবা অনুমতি ছাড়া কোন বস্তু নেয় না।—যাত্রাপুস্তক ২০:১৫; ইফিষীয় ৪:২৮.
৪. ক্রোধী স্বভাব, দৌরাত্ম্য: অনিয়ন্ত্রিত ক্রোধ হিংসার কার্যাদিতে পরিচালিত করতে পারে। (আদিপুস্তক ৪:৫-৮) কোন দৌরাত্ম্যপরায়ণ ব্যক্তি ঈশ্বরের বন্ধু হতে পারে না। (গীতসংহিতা ১১:৫; হিতোপদেশ ২২:২৪, ২৫) মন্দ কার্যাদি যা হয়ত অন্যেরা আমাদের প্রতি করতে পারে তার প্রতিশোধ গ্রহণ অথবা মন্দের পরিশোধে মন্দ ফিরিয়ে দেওয়া নীতিবিরুদ্ধ।—হিতোপদেশ ২৪:২৯; রোমীয় ১২:১৭-২১.
৫. জাদুবিদ্যা ও প্রেতচর্চা: ব্যাধি সারাবার চেষ্টা করতে কিছু লোকে আত্মাদের শক্তিকে আহ্বান করে। অপর কিছু লোক শত্রুদের উপরে মায়াজাল বিস্তার করে তাদের ব্যাধিপীড়িত করতে অথবা এমনকি মৃত্যু ঘটাতে। এই সমস্ত অভ্যাসগুলির পিছনে শক্তি হল শয়তান। তাই খ্রীষ্টীয় ব্যক্তিরা এগুলির কোনটিতেই অবশ্যই অংশ নেবে না। (দ্বিতীয় বিবরণ ১৮:৯-১৩) মায়াজাল যা হয়ত অন্যেরা আমাদের উপরে বিস্তার করতে পারে তা থেকে সবদুচয়ে ভাল সুরক্ষা হল যিহোবার নিকটবর্তী থাকা।—হিদুতাপদেশ ১৮:১০.
৬. মত্ততা: অল্প মাত্রায় মদ্য, বিয়ার, অথবা অন্য কোন সুরাজাতীয় পানীয় গ্রহণ নীতিবিরুদ্ধ নয়। (গীতসংহিতা ১০৪:১৫; ১ তীমথিয় ৫:২৩) কিন্তু অধিক মাত্রায় মদ্যপান এবং মত্ততা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে অন্যায়। (১ করিন্থীয় ৫:১১-১৩; ১ তীমথিয় ৩:৮) অত্যধিক মদ্যপান আপনার স্বাস্থ্যহানি করতে এবং পরিবারে ভাঙ্গন আনতে পারে। এছাড়া এটি অন্যান্য প্রলোভনের সামনে খুব শীঘ্র আপনার নতিস্বীকার করার কারণস্বরূপও হতে পারে।—হিতোপদেশ ২৩:২০, ২১, ২৯-৩৫.
৭. ঈশ্বর যেগুলিকে মন্দ বলেছেন সেই বিষয়গুলি যে ব্যক্তিরা অভ্যাস করে তারা “ঈশ্বরের রাজ্যে অধিকার পাইবে না।” (গালাতীয় ৫:১৯-২১) যদি আপনি প্রকৃতই ঈশ্বরকে প্রেম করেন ও তাঁকে সন্তুষ্ট করতে চান, আপনি এই সকল অভ্যাস ছেড়ে দিতে পারেন। (১ যোহন ৫:৩) ঈশ্বর যাকে মন্দ বলেন তাকে ঘৃণা করতে শিখুন। (রোমীয় ১২:৯) যাদের ধার্মিক অভ্যাস রয়েছে সেই ব্যক্তিদের সঙ্গে মেলামেশা করুন। (হিতোপদেশ ১৩:২০) পরিপক্ব খ্রীষ্টীয় সঙ্গীরা সাহায্যের এক উৎস প্রমাণিত হতে পারে। (যাকোব ৫:১৪) সর্বোপরি, প্রার্থনার মাধ্যমে ঈশ্বরের সাহায্যের উপরে নির্ভর করুন।—ফিলিপীয় ৪:৬, ৭, ১৩.
[Pictures on page 20, 21]
মত্ততা, চুরি করা, জুয়াখেলা ও দৌরাত্ম্যের কার্যাদিকে ঈশ্বর ঘৃণা করেন