প্রশ্ন ২
আমি আমার শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে কেন এত চিন্তিত?
তুমি হলে কী করতে?
এই দৃশ্যটা কল্পনা করো: জুলিয়া যখনই নিজেকে আয়নায় দেখে, তখন একটা বিষয়ই তার নজরে পড়ে আর সেটা হল, সে মোটা। সে মনে মনে বলে, “আমাকে ওজন কমাতে হবে”—যদিও তার বাবা-মা ও বন্ধুবান্ধব তাকে “একেবারে রোগা” বলেই মনে করে।
সম্প্রতি, জুলিয়া “মাত্র কয়েক কেজি” ওজন কমানোর জন্য কড়া নিয়ম মেনে চলার কথা চিন্তা করেছে। সে কয়েক দিন না খেয়ে থাকবে . . .
জুলিয়ার মতো তোমারও যদি একই অনুভূতি হতো, তা হলে তুমি কী করতে?
একটু থেমে চিন্তা করো!
তোমার শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে চিন্তা করা দোষের কিছু নয়। আসলে, বাইবেলেও বেশ কয়েক জন নারী ও পুরুষের শারীরিক সৌন্দর্যের প্রশংসা করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন সারা, রাহেল, অবীগল, যোষেফ এবং দায়ূদ। বাইবেল বলে, অবীশগ নামে একজন নারী “অতি সুন্দরী” ছিলেন।—১ রাজাবলি ১:৪.
কিন্তু, অনেক তরুণ-তরুণী তাদের শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করে। এটা গুরুতর সমস্যা নিয়ে আসতে পারে। এই বিষয়গুলো বিবেচনা করো:
-
একটা গবেষণা অনুযায়ী, ৫৮ শতাংশ মেয়ে দাবি করে, তাদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, যেখানে আসলে মাত্র ১৭ শতাংশ মেয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টা সত্য।
-
আরেকটা গবেষণা অনুযায়ী ৪৫ শতাংশ মহিলা, যাদের ওজন আসলে স্বাভাবিকের চেয়ে কম, মনে করে, তারা অতিরিক্ত মোটা!
-
ওজন কমাতে গিয়ে কিছু তরুণ-তরুণী ক্ষুধামান্দ্য রোগের শিকার হয়েছে, যেটার লক্ষণ হল, খাবারের প্রতি মারাত্মক অরুচি আর এটা অনাহারে থাকার সমরূপ।
সবচেয়ে উত্তম পরিবর্তন!
প্রকৃতপক্ষে, একজন মানুষের ভিতরের ব্যক্তিত্বের দ্বারা নির্ধারণ করা যায়, সে আকর্ষণীয় কি না। রাজা দায়ূদের ছেলে অবশালোমের কথা বিবেচনা করো। বাইবেল বলে:
“অবশালোমের তুল্য সৌন্দর্য্যে অতি প্রশংসনীয় কেহ ছিল না; তাহার পায়ের তালু হইতে মাথার তালু পর্য্যন্ত নির্দ্দোষ ছিল।”—২ শমূয়েল ১৪:২৫.
কিন্তু, এই যুবক প্রচণ্ড গর্বিতমনা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী আর সেইসঙ্গে একজন প্রতারক ছিলেন! তাই, বাইবেল অবশালোম সম্বন্ধে উত্তম চিত্র তুলে ধরে না; বাইবেলে তাকে এমন এক ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, যিনি চরম আনুগত্যহীন মনোভাব ও সেইসঙ্গে প্রচণ্ড ঘৃণা প্রকাশ করেছিলেন।
উপযুক্ত কারণেই বাইবেল আমাদের এই উপদেশ দেয়:
নূতন মনুষ্যকে পরিধান করো।’—কলসীয় ৩:১০.
‘বাহ্য ভূষণ, তাহা নয়, কিন্তু হৃদয়ের গুপ্ত মনুষ্য তোমাদের ভূষণ হউক।’—১ পিতর ৩:৩, ৪.
যদিও নিজেকে সুন্দর দেখানোর মধ্যে দোষের কিছু নেই, কিন্তু তোমার শারীরিক সৌন্দর্যের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ভিতরের মনুষ্য বা তোমার ব্যক্তিত্ব। দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবের কথা চিন্তা করলে, সুঠাম দেহ অথবা সুন্দর ফিগার নয় বরং প্রশংসাযোগ্য গুণাবলি তোমাকে অন্যদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে! ফিলিসিয়া নামে একজন মেয়ে বলে, ‘যদিও সৌন্দর্য লোকেদের সহজেই আকৃষ্ট করে কিন্তু তোমার ভিতরের ব্যক্তিত্ব ও উত্তম গুণাবলি লোকেরা বেশি মনে রাখবে।’
নিজের প্রতি তোমার দৃষ্টিভঙ্গি
নিজের চেহারা দেখে তুমি কি প্রায়ই হতাশ হয়ে পড়ো?
শারীরিক কোনো ত্রুটি ঢাকার জন্য তুমি কি কখনো কসমেটিক সার্জারি করানোর কথা অথবা কড়া ডায়েট করার কথা চিন্তা করেছ?
যদি সম্ভব হতো, তা হলে তোমার শরীরে কোন কোন পরিবর্তন করতে? (যেগুলো প্রযোজ্য, সেগুলো বেছে নাও।)
-
উচ্চতা
-
ওজন
-
চুল
-
শারীরিক গঠন
-
মুখমণ্ডল
-
গায়ের রং
প্রথম দুটো প্রশ্নের ক্ষেত্রে তোমার উত্তর যদি হ্যাঁ হয় এবং তৃতীয়টার ক্ষেত্রে তুমি যদি তিনটে বা তারও বেশি বিষয় বাছাই করে থাকো, তা হলে মনে রাখবে: যদিও তুমি মনে করো তোমার চেহারা খারাপ, কিন্তু অন্যেরা হয়তো সেইরকম মনে করে না। তুমি যদি নিজের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখো, তা হলে তুমি হয়তো চরম পর্যায়ে চলে যাবে এবং নিজের চেহারা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তিত হয়ে পড়বে।—১ শমূয়েল ১৬:৭.