পাঠ ২৪
স্বর্গদূত কারা এবং তারা কী করে থাকে?
যিহোবা চান যেন আমরা তাঁর স্বর্গীয় পরিবার সম্বন্ধে জানি। তাঁর পরিবারে স্বর্গদূতেরা রয়েছে, যাদের “ঈশ্বরের পুত্ত্রগণ” বলা হয়েছে। (ইয়োব ৩৮:৭) বাইবেল স্বর্গদূতদের বিষয়ে কী জানায়? তারা কি আমাদের সাহায্য করতে অথবা ক্ষতি করতে পারে? সমস্ত স্বর্গদূত কি যিহোবার পরিবারের অংশ? আসুন তা জানি।
১. স্বর্গদূত কারা?
যিহোবা পৃথিবী সৃষ্টি করার আগে স্বর্গদূতদের সৃষ্টি করেছিলেন। আমরা যেমন যিহোবাকে দেখতে পাই না, ঠিক তেমনই স্বর্গদূতদেরও দেখতে পাই না। (ইব্রীয় ১:১৪) লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি স্বর্গদূত রয়েছে এবং তারা একে অন্যের থেকে একেবারেই আলাদা। (প্রকাশিত বাক্য ৫:১১) তারা যিহোবার ‘কথার বাধ্য থেকে তাঁর আদেশ পালন করছে।’ (গীতসংহিতা ১০৩:২০, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন) প্রাচীন কালে যিহোবা কখনো কখনো স্বর্গদূতদের ব্যবহার করে তাঁর লোকদের বার্তা জানিয়েছিলেন, তাদের সাহায্য করেছিলেন এবং তাদের বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। কীভাবে বর্তমানে স্বর্গদূতেরা খ্রিস্টানদের সাহায্য করে? স্বর্গদূতেরা সেই ব্যক্তিদের খুঁজে পেতে খ্রিস্টানদের সাহায্য করে, যারা ঈশ্বর সম্বন্ধে জানতে চায়।
২. শয়তান কে এবং মন্দ স্বর্গদূতেরা কারা?
কিছু স্বর্গদূত যিহোবার প্রতি অবিশ্বস্ত হয়ে পড়েছিল। প্রথম যে-স্বর্গদূত যিহোবার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল, তাকে “দিয়াবল ও শয়তান বলা হয়। এ পৃথিবীতে বসবাসকারী সমস্ত লোককে ভ্রান্ত করে।” (প্রকাশিত বাক্য ১২:৯) শয়তান মানুষের উপর কর্তৃত্ব করতে চেয়েছিল আর তাই সে প্রথম মানব দম্পতি আদম ও হবাকে যিহোবার বিরুদ্ধে নিয়ে গিয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, সে অনেক স্বর্গদূতকেও যিহোবার বিরুদ্ধে নিয়ে গিয়েছিল। যিহোবার বিরুদ্ধে যাওয়া এই স্বর্গদূতদের মন্দ স্বর্গদূত বলা হয়েছে। যিহোবা শয়তানকে এবং মন্দ স্বর্গদূতদের স্বর্গে থাকতে দেননি। তাদের স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল এবং ভবিষ্যতে তাদের পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হবে।—পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ১২:৯, ১২.
৩. শয়তান এবং মন্দ স্বর্গদূতেরা কীভাবে লোকদের ভ্রান্ত করে?
শয়তান এবং মন্দ স্বর্গদূতেরা প্রেতচর্চার মাধ্যমে অনেক লোককে ভ্রান্ত করে থাকে। প্রেতচর্চা করার অর্থ হল, মন্দ স্বর্গদূতদের সঙ্গে যোগাযোগ করা। আর এটা করার কিছু উপায় হল, জ্যোতিষী এবং ওঝাদের কাছে যাওয়া, রাশিফল দেখা, ইত্যাদি। কিছু লোক চিকিৎসার জন্য এমন উপায়গুলো গ্রহণ করে, যেগুলো প্রেতচর্চার সঙ্গে জড়িত। আবার কিছু লোককে এটা বলে ভ্রান্ত করা হয় যে, তারা তাদের মৃত প্রিয়জনদের সঙ্গে কথা বলতে পারবে। a কিন্তু, যিহোবা আমাদের সাবধান করে বলেন: “তোমরা ভূতড়িয়াদের ও গুণীদের অভিমুখ হইও না, তাহাদের কাছে অন্বেষণ করিও না।” (লেবীয় পুস্তক ১৯:৩১) যিহোবা এইজন্য সাবধান করেন যেন আমরা মন্দ স্বর্গদূত এবং শয়তানের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি, কারণ এরা হল তাঁর শত্রু আর এরা আমাদের ক্ষতি করতে চায়।
গভীরভাবে গবেষণা করুন
স্বর্গদূতেরা কী করে? প্রেতচর্চা করার কোন কোন বিপদ রয়েছে? আর কীভাবে আমরা শয়তান এবং মন্দ স্বর্গদূতদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি? আসুন তা জানি।
৪. স্বর্গদূতেরা যিহোবা সম্বন্ধে জানতে লোকদের সাহায্য করে থাকে
স্বর্গদূতেরা সরাসরি লোকদের কাছে গিয়ে প্রচার করে না। এর পরিবর্তে, তারা আমাদের এমন ব্যক্তিদের খুঁজে পেতে সাহায্য করে, যারা ঈশ্বর সম্বন্ধে জানতে চায়। প্রকাশিত বাক্য ১৪:৬,৭ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
-
প্রচার করার জন্য কেন আমাদের স্বর্গদূতদের সাহায্য প্রয়োজন?
-
স্বর্গদূতেরা সৎহৃদয়ের ব্যক্তিদের খুঁজে পেতে আমাদের সাহায্য করে। এটা জেনে কি আপনি উৎসাহিত হন? কেন?
৫. প্রেতচর্চা থেকে দূরে থাকুন
শয়তান এবং মন্দ স্বর্গদূতেরা হল যিহোবার শত্রু আর তারা আমাদেরও শত্রু। লূক ৯:৩৮-৪২ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
-
মন্দ স্বর্গদূতেরা লোকদের সঙ্গে কী করে?
প্রেতচর্চার সঙ্গে জড়িত সমস্ত বিষয় থেকে আমরা দূরে থাকতে চাই। দ্বিতীয় বিবরণ ১৮:১০-১২ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
-
মন্দ স্বর্গদূতেরা কোন কোন উপায়ে আমাদের ভ্রান্ত করে এবং আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে? আপনার এলাকায় লোকেরা কোন কোন উপায়ে প্রেতচর্চা করে থাকে?
-
যিহোবা আমাদের প্রেতচর্চা করতে বারণ করেন। আপনার কি মনে হয়, এটা সঠিক? কেন আপনি তা মনে করেন?
ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
-
প্যালেসার মেয়ের হাতে তাবিজের মতো যে-জিনিসটা বাঁধা ছিল, সেটা থেকে তার কি কোনো ক্ষতি হচ্ছিল? কেন আপনার তা মনে হয়?
-
মন্দ স্বর্গদূতদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্যালেসাকে কী করতে হত?
সত্য খ্রিস্টানেরা সবসময় মন্দ স্বর্গদূতদের দৃঢ়তার সঙ্গে প্রতিরোধ করে এসেছে। প্রেরিত ১৯:১৯ এবং ১ করিন্থীয় ১০:২১ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
-
প্রেতচর্চার সঙ্গে জড়িত সমস্ত কিছু নষ্ট করে দেওয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ বলে আপনি মনে করেন?
৬. শয়তান এবং তার মন্দ স্বর্গদূতদের বিরুদ্ধে আপনি জয়ী হতে পারেন
মন্দ স্বর্গদূতেরা শয়তানের অধীনে রয়েছে। কিন্তু, বিশ্বস্ত স্বর্গদূতেরা মীখায়েলের অধীনে রয়েছে। মীখায়েল হল, প্রধান স্বর্গদূত এবং যিশুর অপর নাম। মীখায়েল কতটা শক্তিশালী, তা জানার জন্য প্রকাশিত বাক্য ১২:৭-৯ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
-
কে বেশি শক্তিশালী, মীখায়েল এবং তাঁর স্বর্গদূতেরা, না কি শয়তান এবং তার মন্দ স্বর্গদূতেরা?
-
যিশুকে যারা অনুসরণ করে, তাদের কি শয়তান এবং তার মন্দ স্বর্গদূতদের ভয় পাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে?
শয়তান এবং তার মন্দ স্বর্গদূতদের বিরুদ্ধে আপনি জয়ী হতে পারেন। যাকোব ৪:৭ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
-
শয়তান এবং তার মন্দ স্বর্গদূতদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আপনি কী করতে পারেন?
কেউ কেউ বলে থাকে: “ভূতপ্রেত বলে কিছু নেই, আমরা তো শুধু মজা করার জন্য এই ধরনের সিনেমা দেখি আর গেম খেলি।”
-
কেন এইরকম চিন্তা করা বিপদজনক?
সারাংশ
বিশ্বস্ত স্বর্গদূতেরা আমাদের সাহায্য করে থাকে। শয়তান এবং তার মন্দ স্বর্গদূতেরা হল, যিহোবার শত্রু আর তারা প্রেতচর্চার মাধ্যমে লোকদের ভ্রান্ত করে।
পুনরালোচনা
-
স্বর্গদূতেরা কীভাবে লোকদের যিহোবা সম্বন্ধে জানতে সাহায্য করে থাকে?
-
শয়তান কে এবং মন্দ স্বর্গদূতেরা কারা?
-
প্রেতচর্চা থেকে কেন আপনি দূরে থাকতে চাইবেন?
আরও জানুন
কেন আমরা বলতে পারি, যিশুই হলেন প্রধান স্বর্গদূত মীখায়েল? আসুন তা জানি।
কেন আমরা বলতে পারি, শয়তান আমাদের মধ্যে থাকা কোনো খারাপ গুণ নয়, বরং একজন বাস্তব ব্যক্তি? আসুন তা জানি।
কীভাবে একজন মহিলা মন্দ স্বর্গদূতদের ফাঁদ থেকে নিজেকে মুক্ত করেছিলেন, তা পড়ে দেখুন।
“তিনি জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পেয়েছেন” (প্রহরীদুর্গ, জুলাই ১, ১৯৯৩, ইংরেজি)
কীভাবে শয়তান প্রেতচর্চার মাধ্যমে লোকদের বোকা বানায়? তা জানুন।
“প্রেতচর্চা সম্বন্ধে সত্যটা কী?” (অনন্তজীবনে যাওয়ার পথ, খন্ড ৫, ইংরেজি)