তিনি জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পেয়েছেন
রাজ্য ঘোষণাকারীরা বিবৃতি দেয়
তিনি জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পেয়েছেন
যিশু তাঁর মেষদের জানেন। (যোহন ১০:১৪) তিনি তাদেরকেই তাঁর অনুসারী হওয়ার জন্য আকর্ষণ করেন, যাদের ভালো মনোভাব রয়েছে এবং যারা শান্তি ও ন্যায়বিচার ভালোবাসে। এমন ব্যক্তিরাই তাদের জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পাবে, ঠিক যেমন বেলজিয়ামের একজন মহিলা খুঁজে পেয়েছিলেন। তিনি তার কাহিনিটা আমাদের বলেছেন:
“প্রথম বার যখন যিহোবার সাক্ষিরা আমার দরজায় কড়া নাড়ে, সেই সময়ে আমি এতটাই হতাশ ছিলাম যে, আমি আমার জীবন শেষ করে দেওয়ার চিন্তা করছিলাম। যখন সাক্ষিরা আমাকে বাইবেল থেকে দেখায় যে, এই পৃথিবীর সমস্ত মন্দতা একসময় শেষ হবে, তা শুনে আমার অনেক ভালো লাগে। কিন্তু তারা যখন দেখায় যে, তা ঈশ্বর করবেন, সেটা আমার একদমই ভালো লাগেনি। আসলে চার্চের ভণ্ডামিগুলোর কারণে আমি আট বছর আগেই চার্চ ছেড়ে দিই। কিন্তু সাক্ষিরা আমাকে বাইবেল থেকে যা দেখায়, তা বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আমার ছিল। আর আমি ধীরে ধীরে বুঝতে পারি যে, ঈশ্বর ছাড়া বেঁচে থাকা আসলে কঠিন।
“দুঃখের বিষয় হল, কিছু সময় পর সাক্ষিদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আমি একদমই ভেঙে পড়ি। আমি দিনে দুই প্যাকেট সিগারেট খাওয়া শুরু করি এবং ড্রাগও নিতে শুরু করি। আমার এক নিকট আত্মীয়, যিনি ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন, তার সঙ্গে কথা বলার আমার খুব ইচ্ছা হয়। আর এভাবে আমি প্রেতচর্চার সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ি। এই কারণে, একদিন রাতে আমি যখন একা ছিলাম, তখন আমি মন্দ স্বর্গদূতদের আক্রমণের শিকার হই। আমি অনেক ভয় পাই, কিন্তু এখানেই এর শেষ হয়নি। এই ধরনের আক্রমণ মাসের পর মাস ধরে চলতে থাকে। রোজ রাতে আমি চরম আতঙ্কে থাকতাম এবং আমি কোনোভাবেই একা থাকতে চাইতাম না।
“আমি প্রায়ই হাঁটতে যেতাম। আমি রোজ যে-পথে হাঁটতাম, সেই পথ না নিয়ে, একদিন আমি অন্য এক পথ নিই। হাঁটতে হাঁটতে একসময় আমি দেখি যে, একটা বড়ো এলাকাজুড়ে নির্মাণ কাজ চলছে আর সেখানে অনেক লোক একটা জায়গায় ভিড় করেছে। তা দেখে আমি একটু অবাক হই। কাছে গিয়ে জানতে পারি যে, সেখানে যিহোবার সাক্ষিরা তাদের কিংডম হল নির্মাণ করছে। তখন আমার মনে পড়ে যে, যিহোবার সাক্ষিরা আমার বাড়িতে আসত। আর আমি ভাবতে শুরু করি যে, সারা পৃথিবীর লোকেরা যদি যিহোবার সাক্ষিদের মতো হত, তা হলে কত ভালো হত।
“আমি সত্যিই চেয়েছিলাম যে, যিহোবার সাক্ষিরা আবার আমার বাড়িতে আসুক। তাই আমি সেই কিংডম হল তৈরির কাজে যারা সাহায্য করছিল, তাদের মধ্যে কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলি। এ বিষয়ে আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনাও করি আর ঠিক দশ দিন পর আমি সেই ব্যক্তিকে আমার দরজায় পাই, যিনি প্রথম বার আমার বাড়িতে এসেছিলেন। তিনি আমাকে আবারও বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করতে বলেন এবং তাতে আমি খুশিমনে রাজি হই। একই সঙ্গে তিনি আমাকে কিংডম হলের সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। আমি তাতেও রাজি হই। সেখানে গিয়ে আমি যা দেখলাম, তা যেন একটা স্বপ্ন! আমি তো এমন ব্যক্তিদেরই খুঁজছিলাম, যারা খুশিমনে একটা পরিবারের মতো একে অন্যকে ভালোবাসা দেখায়। অবশেষে আমি তাদের খুঁজে পেলাম!
“তখন থেকে আমি প্রতিটা সভাতেই যোগ দিই। প্রায় তিন সপ্তাহ পর, আমি আমার সিগারেট খাওয়ার বদভ্যাস বন্ধ করে দিই। আমি আমার জ্যোতিষবিদ্যার সব বই এবং প্রেতচর্চার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত গানের সমস্ত রেকর্ড নষ্ট করে দিই। মন্দ স্বর্গদূতেরা যে আমার উপর থেকে তাদের নিয়ন্ত্রণ ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলছে, তা আমি অনুভব করি। আমি বাইবেল থেকে যিহোবার উচ্চমান সম্বন্ধে শিখি এবং খুব দ্রুত সেই অনুযায়ী আমার জীবন পরিবর্তন করি। তিন মাস পরেই আমি প্রচার কাজ করতে শুরু করি। ঠিক ছয় মাস পর আমি বাপ্তিস্ম নিই এবং এর দু-দিন পরেই আমি সহায়ক অগ্রগামীর কাজ শুরু করি।
“যিহোবা আমার জন্য যা-কিছু করেছেন, সেই সমস্ত কিছুর জন্য আমি তাঁকে ধন্যবাদ দিই। অবশেষে, আমি আমার জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পেয়েছি। সত্যিই, যিহোবার নাম হল এক দৃঢ় দুর্গ, যেখানে আমি আশ্রয় ও সুরক্ষা পেয়েছি। (হিতোপদেশ ১৮:১০) এখন আমি গীতরচকের মতো একইরকম অনুভব করি, যিনি গীতসংহিতা ৮৪:১০ পদে বলেন: “তোমার প্রাঙ্গণে এক দিনও সহস্র দিন অপেক্ষা উত্তম; বরং আমার ঈশ্বরের গৃহের গোবরাটে দাঁড়াইয়া থাকা আমার বাঞ্ছনীয়, তবু দুষ্টতার তাম্বুতে বাস করা বাঞ্ছনীয় নয়।””
বেলজিয়ামের এই মহিলার হৃদয় নম্র ছিল বলে তিনি তার জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পেয়েছিলেন। একইভাবে, আপনিও যদি সঠিক হৃদয় নিয়ে যিহোবা ঈশ্বরকে খোঁজেন, তা হলে আপনিও তাঁকে খুঁজে পাবেন।