উপদেশক ৫:১-২০
৫ তুমি যখন সত্য ঈশ্বরের গৃহে যাও, তখন তোমার পদক্ষেপের প্রতি খেয়াল রেখো। মূর্খ ব্যক্তিদের মতো বলি উৎসর্গ করার চেয়ে, সেখানে যা বলা হয়, তা শোনা আরও ভালো। কারণ মূর্খ ব্যক্তিরা জানে না, তারা যা করছে, তা মন্দ।
২ কথা বলার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো কোরো না কিংবা সত্য ঈশ্বরের সামনে চিন্তা না করেই কথা বোলো না। কারণ সত্য ঈশ্বর স্বর্গে রয়েছেন আর তুমি পৃথিবীতে। তাই, তোমার কথা যেন অল্প হয়।
৩ অনেক বেশি বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করার ফলে মানুষ স্বপ্ন দেখে আর মূর্খ ব্যক্তি যখন বকবক করে, তখন তার অনেক কথার মাধ্যমে মূর্খতা প্রকাশ হয়ে পড়ে।
৪ তুমি ঈশ্বরের কাছে কোনো অঙ্গীকার করলে সেটা পূর্ণ করতে দেরি কোরো না কারণ ঈশ্বর মূর্খ ব্যক্তিদের প্রতি সন্তুষ্ট হন না। তুমি যে-অঙ্গীকার করবে, সেটা পূর্ণ কোরো।
৫ অঙ্গীকার করে সেটা পূর্ণ না করার চেয়ে অঙ্গীকার না করাই ভালো।
৬ এমনটা যেন না হয় যে, তোমার মুখ তোমাকে দিয়ে পাপ করায় আর তুমি স্বর্গদূতের* সামনে বল যে, তোমার ভুল হয়ে গিয়েছে। তুমি তোমার কথার মাধ্যমে সত্য ঈশ্বরকে কেন রাগিয়ে তুলবে, যাতে তাঁকে তোমার হাতের কাজ ধ্বংস করে দিতে হয়?
৭ অনেক বেশি বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করার ফলে মানুষ স্বপ্ন দেখে। একইভাবে অনেক কথা বললে তা বৃথা হয়ে পড়ে। কিন্তু, তুমি সত্য ঈশ্বরকে ভয় করো।
৮ তুমি যদি তোমার প্রদেশে কোনো উচ্চপদস্থ আধিকারিককে* গরিবদের উপর অত্যাচার করতে দেখ আর ন্যায়বিচার এবং যা সঠিক, সেটার বিরুদ্ধে কাজ করতে দেখ, তা হলে অবাক হোয়ো না। কারণ তার উপরও কেউ রয়েছেন, যিনি তাকে দেখছেন। আর উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের* উপর আরও উচ্চপদস্থ আধিকারিক* রয়েছেন।
৯ জমি থেকে যে-লাভ হয়, সেটা তাদের সবার মধ্যে ভাগ করা হয় আর এমনকী রাজার প্রয়োজনও খেতের ফসলের দ্বারা মেটানো হয়।
১০ যে রুপো ভালোবাসে, সে কখনো রুপোর দ্বারা পরিতৃপ্ত হয় না আর যে ধনসম্পদ ভালোবাসে, সে নিজের উপার্জনের দ্বারা পরিতৃপ্ত হয় না। এটাও বৃথা।
১১ যখন ভালো বিষয় বৃদ্ধি পায়, তখন সেগুলো ভোগ করার লোকও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু, সেগুলোর মালিকের কোনো লাভ হয় না, সে শুধু দেখতে থাকে।
১২ যে পরিশ্রম করে, সে অল্প খাক অথবা বেশি, তার ভালো ঘুম হয়। কিন্তু, ধনী ব্যক্তির প্রচুর ধনসম্পদ তাকে ঘুমোতে দেয় না।
১৩ সূর্যের নীচে আমি খুবই দুঃখজনক এক বিষয়* দেখেছি: সঞ্চয় করা ধনসম্পদ নিজের মালিকেরই ক্ষতি করে।
১৪ লোকসানজনক কাজের কারণে তার ধনসম্পদ শেষ হয়ে যায় আর তার যখন ছেলে হয়, তখন তাকে দেওয়ার মতো তার কাছে কিছু থাকে না।
১৫ ঠিক যেভাবে একজন ব্যক্তি তার মায়ের গর্ভ থেকে উলঙ্গ অবস্থায় এসেছে, সেভাবেই সে উলঙ্গ অবস্থায় চলে যাবে আর যে-বিষয়গুলোর জন্য সে কঠোর পরিশ্রম করেছে, সেগুলোর মধ্যে কিছুই সে নিজের সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবে না।
১৬ এটাও খুবই দুঃখজনক এক বিষয়:* মানুষ যেভাবে এসেছে, সেভাবেই চলে যাবে। তাই, বাতাসের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে তার কী লাভ হয়?
১৭ শুধু তা-ই নয়, সে প্রতিদিন অন্ধকারে খায় আর সে খুব বিরক্ত থাকে, খুব অসুস্থ থাকে এবং খুব রেগে থাকে।
১৮ আমি দেখেছি, এটাই সঠিক ও উপযুক্ত: ঈশ্বর মানুষকে সূর্যের নীচে যে-অল্প কয়েক দিনের জীবন দিয়েছেন, তাতে মানুষ যেন খাওয়া-দাওয়া করে এবং পান করে ও সেইসঙ্গে নিজের কঠোর পরিশ্রমে আনন্দ খুঁজে পায় কারণ এটাই তার পুরস্কার।
১৯ শুধু তা-ই নয়, সত্য ঈশ্বর যখন মানুষকে ধনসম্পদ এবং বস্তুগত বিষয়সম্পত্তি দিয়েছেন ও সেইসঙ্গে সেগুলো উপভোগ করার ক্ষমতাও দিয়েছেন, তখন মানুষের সেই পুরস্কার গ্রহণ করা উচিত এবং নিজের কঠোর পরিশ্রমে আনন্দ করা উচিত। এটা ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া উপহার।
২০ তার জীবনের দিনগুলো এমনভাবে কেটে যাবে যে, সে বুঝতেও পারবে না।* কারণ সত্য ঈশ্বর তাকে সেই বিষয়গুলোতে ব্যস্ত রাখবেন, যেগুলো তার হৃদয়কে আনন্দিত করে।
পাদটীকাগুলো
^ বা “বার্তাবাহকের।”
^ বা “কর্মকর্তাকে।”
^ বা “কর্মকর্তাদের।”
^ বা “কর্মকর্তা।”
^ বা “আমি এক বড়ো বিপর্যয়।”
^ বা “এটাও এক বড়ো বিপর্যয়।”
^ বা “সে সেগুলো মনেও রাখবে না।”