নহিমিয় ৬:১-১৯

 পরে সন্‌বল্লট, টোবিয়, আরবীয় গেশম্‌ এবং আমাদের বাকি শত্রুরা জানতে পারল যে, আমি নগরের পুরো প্রাচীর নির্মাণ করে ফেলেছি আর প্রাচীরের সমস্ত ভাঙা অংশ মেরামত করে ফেলেছি (যদিও তখনও পর্যন্ত আমি নগরের দরজার পাল্লাগুলো লাগাইনি)। ২  তখন সন্‌বল্লট ও গেশম্‌ সঙ্গেসঙ্গে আমাকে এই বার্তা পাঠাল: “আমরা তোমার সঙ্গে দেখা করতে চাই। এসো, আমরা একটা সময় ঠিক করি এবং ওনো উপত্যকার সমভূমিতে অবস্থিত একটা গ্রামে দেখা করি।” কিন্তু, তারা আসলে আমার ক্ষতি করতে চাইছিল। ৩  তাই, আমি আমার লোক পাঠিয়ে তাদের বললাম: “আমি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজে ব্যস্ত রয়েছি। আমি তোমাদের কাছে যেতে পারব না। আমি যদি যাই, তা হলে এই কাজ থেমে যাবে।” ৪  তারা চার বার আমার কাছে একই বার্তা পাঠাল আর প্রতি বার আমি একই উত্তর দিলাম। ৫  তখন সন্‌বল্লট তার পরিচারকের মাধ্যমে পঞ্চম বার আমাকে সেই একই বার্তা পাঠাল। তার হাতে একটা খোলা চিঠি ছিল। ৬  তাতে লেখা ছিল: “আশেপাশের জাতির লোকেরা বলাবলি করছে আর গেশম্‌ও বলছে, তুমি ও যিহুদিরা রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার পরিকল্পনা করছ। আর সেইজন্যই তুমি নগরের প্রাচীর নির্মাণ করছ। আর একথাও শোনা যাচ্ছে, তুমি যিহুদিদের রাজা হতে চাও। ৭  তুমি নিজের জন্য ভাববাদীদেরও নিযুক্ত করেছ, যারা পুরো জেরুসালেমে তোমার বিষয়ে এই কথা ঘোষণা করছে, ‘যিহূদায় একজন নতুন রাজা এসেছে!’ এই কথা রাজার কানে গিয়ে তো পৌঁছাবেই। তাই এসো, আমরা একসঙ্গে কথা বলি আর এই বিষয়টার মীমাংসা করি।” ৮  কিন্তু, আমি উত্তরে তাকে বললাম: “তুমি যা-কিছু বলছ, সেগুলো একেবারে মিথ্যা। এই সবই তোমার মনগড়া কথা।” ৯  আসলে, আমাদের ভয় দেখানোর জন্য এই বিষয়গুলো করা হয়েছিল। তারা ভেবেছিল, আমাদের হাত যদি দুর্বল হয়ে যায়, তা হলে আমাদের কাজ শেষ হবে না। তাই হে ঈশ্বর, আমার হাত সবল করো। ১০  পরে আমি শময়িয়ের বাড়িতে গেলাম, যিনি দলায়ের ছেলে এবং মহেটবেলের নাতি। শময়িয় নিজের ঘরে লুকিয়ে ছিল। সে আমাকে বলল: “শত্রুরা তোমাকে হত্যা করতে আসছে। এসো, আমরা একটা সময় ঠিক করে সত্য ঈশ্বরের গৃহে, তাঁর মন্দিরের ভিতরে মিলিত হই। আমরা মন্দিরের দরজা বন্ধ করে ভিতরে লুকিয়ে থাকব। আজ রাতেই তারা তোমাকে হত্যা করতে আসছে।” ১১  কিন্তু আমি বললাম: “আমি কি ভীতু যে, পালিয়ে গিয়ে লুকিয়ে থাকব? আর আমার মতো একজন সাধারণ ব্যক্তি যদি মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করে, তা হলে তাকে কি হত্যা করা হবে না? না, আমি মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করব না!” ১২  আমি বুঝে গিয়েছিলাম, ঈশ্বর শময়িয়কে পাঠাননি বরং টোবিয় ও সন্‌বল্লট টাকার বিনিময়ে তাকে দিয়ে কাজ করাচ্ছিল। ১৩  তাদের কথামতো সে আমাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছিল এবং আমাকে দিয়ে পাপ করাতে চেয়েছিল, যাতে শত্রুরা আমার বদনাম করার এবং আমাকে দোষারোপ করার সুযোগ পায়। ১৪  হে আমার ঈশ্বর, তোমার কাছে বিনতি করছি, তুমি টোবিয় ও সন্‌বল্লটের মন্দ কাজগুলো ভুলে যেয়ো না। আর ভাববাদিনী নোয়দিয়া এবং বাকি ভাববাদীরা আমাকে বার বার ভয় দেখানোর যে-চেষ্টা করেছে, সেটাও ভুলে যেয়ো না। ১৫  ইলূল* মাসের ২৫তম দিনে প্রাচীর নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে গেল। সেটা নির্মাণ করতে মোট ৫২ দিন লাগল। ১৬  যখন আমাদের শত্রুরা এবং আশেপাশের দেশের লোকেরা এই বিষয়টা জানতে পারল, তখন তারা খুবই লজ্জিত* হল। তারা বুঝে গিয়েছিল, আমরা আমাদের ঈশ্বরের সাহায্যেই এই কাজ শেষ করতে পেরেছি। ১৭  সেই সময় যিহূদার উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা টোবিয়কে অনেক চিঠি লিখত আর টোবিয়ও তাদের চিঠির উত্তর দিত। ১৮  অনেক যিহুদি টোবিয়কে সমর্থন করার দিব্য করেছিল কারণ সে আরহের ছেলে শখনিয়ের জামাই ছিল। আর টোবিয়ের ছেলে যিহোহাননও মশুল্লমের মেয়েকে বিয়ে করেছিল। মশুল্লম বেরিখিয়ের ছেলে ছিল। ১৯  এই যিহুদিরা সবসময় আমার কাছে টোবিয়ের বিষয়ে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলত। আর আমি তাদের যা-কিছু বলতাম, তারা সঙ্গেসঙ্গে সেই খবর টোবিয়কে জানিয়ে দিত। আর তারপর টোবিয় আমাকে ভয় দেখানোর জন্য চিঠি পাঠাত।

পাদটীকাগুলো

পরিশিষ্টের খ১৫ দেখুন।
আক্ষ., “তারা নিজেদের চোখে ছোটো হয়ে গেল।”