বিচারকর্তৃগণের বিবরণ ১৮:১-৩১
১৮ সেই সময় ইজরায়েলে কোনো রাজা ছিল না। ইজরায়েলের বংশগুলোর মাঝে দান বংশকে উত্তরাধিকার হিসেবে যে-এলাকা দেওয়া হয়েছিল, সেটা তাদের জন্য যথেষ্ট ছিল না আর তাই তারা নিজেদের জন্য আরও এলাকা খুঁজতে লাগল।
২ তারা সরা ও ইষ্টায়োল থেকে তাদের বংশের পাঁচ জন যোগ্য পুরুষকে বেছে নিল আর দেশের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য তাদের পাঠাল। তারা বলল: “যাও, দেশের খোঁজখবর নিয়ে এসো।” তখন তারা বেরিয়ে পড়ল আর তারা ইফ্রয়িমের পার্বত্য এলাকায় মীখার বাড়িতে রাত কাটাল।
৩ তারা যখন মীখার বাড়ির কাছে ছিল, তখন তারা লেবীয় যুবকটির গলার স্বর* চিনতে পারল। তারা তার কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করল: “তুমি এখানে কী করছ? কে তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছে?”
৪ সেই লেবীয় তাদের জানাল, মীখা তার জন্য কী কী করেছে আর বলল: “তিনি আমাকে বেতন দিয়ে তার যাজক হিসেবে রেখেছেন।”
৫ তারা সেই লেবীয়কে বলল: “দয়া করে আমাদের বিষয়ে ঈশ্বরকে জিজ্ঞেস করো, আমরা যে-কাজের জন্য বের হয়েছি, সেই কাজে আমরা সফল হব কি না।”
৬ সেই লেবীয় তাদের বলল: “নিশ্চিন্তে যাও। যিহোবা তোমাদের সঙ্গে রয়েছেন।”
৭ তখন সেই পাঁচ জন যাত্রা করে লয়িশে পৌঁছাল। তারা দেখল, সেখানকার লোকেরা সীদোনীয়দের মতোই স্বনির্ভরশীল এবং তারা শান্তিতে বাস করছে। তাদের আক্রমণের কোনো ভয় ছিল না আর কোনো অত্যাচারী ব্যক্তি তাদের দেশ আক্রমণ করছিল না। তাদের নগরটা সীদোন থেকে অনেক দূরে অবস্থিত ছিল আর অন্য লোকদের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক ছিল না।
৮ সেই পুরুষেরা যখন তাদের ভাইদের কাছে সরা ও ইষ্টায়োলে ফিরে এল, তখন তাদের ভাইয়েরা তাদের জিজ্ঞেস করল: “বলো, তোমরা কী খবর এনেছ?”
৯ তারা বলল: “দেশটা খুব সুন্দর। এসো, আমরা গিয়ে তাদের আক্রমণ করি। আমরা এখনই সেই দেশ দখল করে নিতে পারি, দেরি করে লাভ কী?
১০ তোমরা নিজেদের চোখেই দেখতে পারবে, সেই দেশটা কত বড়ো। সেখানকার লোকদের আক্রমণের কোনো ভয় নেই। ঈশ্বর সেই এলাকা তোমাদের হাতে সমর্পণ করেছেন। তিনি তোমাদের এমন একটা জায়গা দিয়েছেন, যেখানে কোনো কিছুর অভাব নেই।”
১১ তারপর, দান বংশের ৬০০ জন পুরুষ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হল আর তারা সরা ও ইষ্টায়োল থেকে রওনা হল।
১২ তারা যিহূদার কিরিয়ৎ-যিয়ারীমে গেল আর সেখানে শিবির স্থাপন করল। তাই, আজও সেই জায়গার নাম মহনে-দান* আর সেটা কিরিয়ৎ-যিয়ারীমের পশ্চিম দিকে অবস্থিত।
১৩ সেখান থেকে তারা ইফ্রয়িমের পার্বত্য এলাকায় গেল আর মীখার বাড়িতে এসে পৌঁছাল।
১৪ যে-পাঁচ জন পুরুষ লয়িশের খোঁজখবর নিতে গিয়েছিল, তারা তাদের ভাইদের বলল: “তোমরা জান, এই বাড়িতে একটা এফোদ,* একটা খোদাই করা মূর্তি, একটা ছাঁচে ঢালা মূর্তি এবং কয়েকটা কুলদেবতার মূর্তি রয়েছে? এখন ভেবে দেখো, কী করবে।”
১৫ তখন তারা সেখানে থামল। সেই পাঁচ জন পুরুষ মীখার বাড়িতে এল, যেখানে সেই লেবীয় যুবক বাস করত আর তারা তার খোঁজখবর নিল।
১৬ সেইসময় দান বংশের ৬০০ জন পুরুষ, যারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে ছিল, তারা দরজার কাছে দাঁড়িয়ে রইল।
১৭ সেই পাঁচ জন পুরুষ বাড়িতে ঢুকে এফোদ, খোদাই করা মূর্তি, ছাঁচে ঢালা মূর্তি এবং কুলদেবতাদের মূর্তিগুলো নিয়ে নিল। (যাজক সেই ৬০০ জন পুরুষের সঙ্গে দরজায় দাঁড়িয়ে ছিল, যারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে ছিল।)
১৮ তারা যখন মীখার বাড়ি থেকে এফোদ, খোদাই করা মূর্তি, ছাঁচে ঢালা মূর্তি এবং কুলদেবতাদের মূর্তিগুলো উঠিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছিল, তখন সেই যাজক তাদের বলল: “তোমরা এ কী করছ?”
১৯ তারা বলল: “একদম চুপ! চুপচাপ আমাদের সঙ্গে চলো আর আমাদের পরামর্শদাতা* ও যাজক হও। তুমিই বলো, তুমি কি শুধুমাত্র এক জন ব্যক্তির পরিবারের যাজক হয়ে থাকতে চাও, না কি ইজরায়েলের পুরো এক বংশের এবং সেই বংশের সমস্ত পরিবারের যাজক হতে চাও?”
২০ তাদের কথা শুনে যাজক আনন্দিত হল। সে এফোদ, খোদাই করা মূর্তি এবং কুলদেবতাদের মূর্তিগুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে চলে গেল।
২১ দানের লোকেরা তাদের পথ ধরে চলতে লাগল আর তারা তাদের সন্তান, পশুপাল এবং মূল্যবান জিনিসগুলো সবচেয়ে প্রথমে রাখল আর তারা নিজেরা পিছন পিছন চলল।
২২ তারা কিছু দূর যেতে-না-যেতেই মীখা এবং তার প্রতিবেশীরা একত্রিত হল আর দানীয়দের পিছু ধাওয়া করল। দানীয়দের কাছে পৌঁছে
২৩ তারা চিৎকার করে তাদের ডাকল। দানীয়েরা পিছনে ঘুরে মীখাকে দেখতে পেয়ে বলল: “কী হয়েছে? তুমি এত লোক নিয়ে এসেছ কেন?”
২৪ তখন মীখা বলল: “আমি যে-দেবতাদের মূর্তিগুলো বানিয়েছিলাম, তোমরা সেগুলো নিয়ে নিয়েছ আর তোমরা আমার যাজককেও নিয়ে নিয়েছ। আমার সব কিছু লুট করার পর এখন জিজ্ঞেস করছ, ‘কী হয়েছে?’”
২৫ দানীয়েরা বলল: “একদম চেঁচাবে না! নাহলে আমাদের বদমেজাজি লোকেরা কিন্তু তোমাদের আক্রমণ করবে আর তুমি এবং তোমার পরিবারের লোকেরা মারা পড়বে।”
২৬ এই বলে দানের লোকেরা আবার তাদের পথ ধরে যেতে লাগল আর মীখা ঘুরে তার বাড়ি ফিরে গেল কারণ সে দেখল, দানের লোকেরা তার চেয়ে বেশি শক্তিশালী।
২৭ দানের লোকেরা মীখার মূর্তিগুলো এবং তার যাজককে নিয়ে লয়িশে এসে পৌঁছাল, যেখানকার বাসিন্দারা শান্তিতে বাস করছিল এবং যাদের কোনো আক্রমণের ভয় ছিল না। দানীয়েরা তলোয়ার দিয়ে তাদের মেরে ফেলল আর তাদের নগর পুড়িয়ে দিল।
২৮ তাদের বাঁচানোর মতো কেউ ছিল না কারণ তাদের নগর সীদোন থেকে অনেক দূরে অবস্থিত ছিল আর বাকি লোকদের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক ছিল না। লয়িশ সেই উপত্যকায়* অবস্থিত ছিল, যেটা বৈৎ-রহোব নামক এলাকায় পড়ত। তারপর, দানীয়েরা সেই নগরটা পুনর্নির্মাণ করল আর সেখানে বাস করল।
২৯ তারা সেই নগরের নাম পরিবর্তন করে সেটার নাম তাদের পূর্বপুরুষের নাম অনুযায়ী দান রাখল, যিনি ইজরায়েলের ছেলে ছিলেন। কিন্তু, আগে সেই নগরের নাম ছিল লয়িশ।
৩০ এরপর, দানীয়েরা সেই খোদাই করা মূর্তি স্থাপন করল আর তারা মোশির ছেলে গের্শোমের বংশধর যোনাথন এবং তার ছেলেদের দান বংশের যাজক হিসেবে নিযুক্ত করল। তারা ততদিন পর্যন্ত যাজক হয়ে রইল, যতদিন না দেশের লোকদের বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হল।
৩১ তারা মীখার দ্বারা খোদাই করা যে-মূর্তি স্থাপন করেছিল, সেটা ততদিন পর্যন্ত থাকল, যতদিন শীলোতে সত্য ঈশ্বরের গৃহ* রইল।
পাদটীকাগুলো
^ বা “যুবকটির কথা বলার ধরণ।”
^ অর্থ, “দানের শিবির।”
^ যাত্রাপুস্তক ২৫:৭ পদের পাদটীকা দেখুন।
^ আক্ষ., “বাবা।”
^ বা “নীচু সমভূমিতে।”
^ বা “পবিত্র তাঁবু।”