যিশাইয় ৩৮:১-২২

৩৮  সেই সময় হিষ্কিয় অসুস্থ হয়ে পড়লেন এবং তার মৃত্যু প্রায় ঘনিয়ে এল। তখন আমোসের ছেলে ভাববাদী যিশাইয় তার কাছে এলেন এবং তাকে বললেন, “যিহোবা এই কথা বলেন: ‘তুমি তোমার পরিবারকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দাও কারণ তুমি সুস্থ হবে না, তুমি মারা যাবে।’” ২  এই কথা শুনে হিষ্কিয় দেওয়ালের দিকে মুখ ঘোরালেন এবং যিহোবার কাছে এই প্রার্থনা করতে লাগলেন: ৩  “হে যিহোবা, আমি তোমার কাছে অনুরোধ করছি, দয়া করে স্মরণ করো, কীভাবে আমি বিশ্বস্ততার সঙ্গে এবং সম্পূর্ণ হৃদয় দিয়ে তোমার সামনে সঠিক পথে চলেছি। আমি সবসময় তোমার চোখে যা সঠিক, তা-ই করেছি।” এই কথা বলে হিষ্কিয় ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলেন। ৪  তখন যিশাইয়ের কাছে যিহোবার এই বার্তা এল: ৫  “তুমি হিষ্কিয়ের কাছে ফিরে যাও আর তাকে বলো, ‘তোমার পূর্বপুরুষ দায়ূদের ঈশ্বর যিহোবা এই কথা বলেন: “আমি তোমার প্রার্থনা শুনেছি, তোমার চোখের জল দেখেছি। আমি তোমার আয়ু ১৫ বছর বাড়িয়ে দেব। ৬  আমি তোমাকে এবং এই নগরকে অশূরের রাজার হাত থেকে উদ্ধার করব এবং এই নগরকে রক্ষা করব।” ৭  যিহোবা আপনাকে একটা চিহ্ন দেবেন, যেটার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন, তিনি যা বলেছেন, সেটা তিনি পূর্ণও করবেন। যিহোবা বলেন: ৮  “আহসের সিঁড়ির* উপর সূর্যের যে-ছায়া ইতিমধ্যেই এগিয়ে গিয়েছে, সেটাকে আমি দশ ধাপ পিছিয়ে দেব।”’” তখন সিঁড়ির উপর সূর্যের যে-ছায়া ইতিমধ্যেই এগিয়ে গিয়েছিল, সেটা দশ ধাপ পিছিয়ে গেল। ৯  যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের লেখা,* যেটা তিনি অসুস্থ হওয়ার এবং নিজের অসুস্থতা থেকে সেরে ওঠার পর লিখেছিলেন। ১০  আমি বললাম: “আমার জীবনের মাঝখানে,আমাকে কবরের* দরজা দিয়ে ভিতরে যেতে হবে। আমি আমার জীবনের বাকি বছরগুলো থেকে বঞ্চিত হব।” ১১  আমি বললাম: “আমি যাঃকে* দেখব না, না, আমি জীবিত লোকদের মাঝে থেকে* যাঃকে দেখব না। আমি আর মানুষকে দেখব নাকারণ আমি মৃত লোকদের সঙ্গে থাকব। ১২  মেষপালকের তাঁবুর মতোইআমার থাকার জায়গা উপড়ে ফেলা হয়েছে এবং আমার কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হয়েছে। যেভাবে তাঁতি কাপড় বুনে সেটাকে গুটিয়ে রাখে, সেভাবেই আমি আমার জীবনকে গুটিয়ে ফেলেছি। তিনি আমাকে তাঁতের সুতোর মতো কেটে ফেলেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তুমি আমাকে কষ্ট দিয়ে থাক। ১৩  আমি সকাল পর্যন্ত নিজেকে শান্ত করি। তিনি সিংহের মতোই আমার সমস্ত হাড় ভাঙতে থাকেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তুমি আমাকে কষ্ট দিয়ে থাক। ১৪  বাতাসি ও বুলবুল* পাখির মতো আমি কিচিরমিচির করতে থাকি,ঘুঘু পাখির মতো আমি ডাকতে থাকি। উপরের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমার চোখ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। ‘হে যিহোবা, আমি প্রচণ্ড কষ্টের মধ্যে রয়েছি,আমাকে সাহায্য করো!’* ১৫  আমি আর কী বলব? তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমি আমার প্রচণ্ড কষ্টের কারণেআমার জীবনকালে নম্রভাবে* চলব। ১৬  ‘হে যিহোবা, এগুলোর* দ্বারা প্রত্যেক মানুষ বেঁচে থাকেআর এগুলোর দ্বারাই আমি বেঁচে রয়েছি। তুমি আমাকে আমার স্বাস্থ্য ফিরিয়ে দেবে এবং আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে। ১৭  দেখো! শান্তির পরিবর্তে আমার মধ্যে প্রচণ্ড তিক্ততা ছিল,কিন্তু তুমি আমাকে খুব ভালোবাস বলেধ্বংসের গর্ত থেকে আমাকে উদ্ধার করেছ। তুমি আমার সমস্ত পাপ তোমার পিছনে ফেলে দিয়েছ।* ১৮  কারণ কবর* তোমার গৌরব করতে পারে না,মৃত্যু তোমার প্রশংসা করতে পারে না। যারা গর্তে নেমে যায়, তারা তোমার বিশ্বস্ততার কাজগুলোর জন্য অপেক্ষা করতে পারে না। ১৯  জীবিত লোকেরা, হ্যাঁ, জীবিত লোকেরাই তোমার প্রশংসা করতে পারে,ঠিক যেভাবে আজ আমি করতে পারছি। একজন বাবা তার ছেলেদের তোমার বিশ্বস্ততার কাজগুলোর বিষয়ে শেখাতে পারে। ২০  হে যিহোবা, আমাকে রক্ষা করো,যাতে আমি সারাজীবন ধরে তোমার গৃহে, যিহোবার গৃহেঅন্যদের সঙ্গে তারওয়ালা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে আমার গানগুলো গাইতে পারি।’” ২১  তারপর, যিশাইয় রাজার দাসদের বললেন: “শুকনো ডুমুরের একটা তাল* নিয়ে এসো এবং রাজার ফোঁড়ার উপরে তা লাগাও, যাতে তিনি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।” ২২  হিষ্কিয় জিজ্ঞেস করেছিলেন: “আমি যে যিহোবার গৃহে যাব, সেটার চিহ্ন কী?”

পাদটীকাগুলো

সম্ভবত, এই সিঁড়িকে সূর্যঘড়ির মতোই সময় নির্ধারণ করার জন্য ব্যবহার করা হত।
বা “রচনা।”
ইব্রীয়, শিওল। শব্দকোষ দেখুন।
“যাঃ” হল যিহোবা নামের সংক্ষিপ্ত রূপ।
আক্ষ., “জীবিতদের দেশে।”
বা সম্ভবত, “সারস।”
আক্ষ., “আমার জামিনদার হও।”
বা “গম্ভীরভাবে।”
অর্থাৎ ঈশ্বরের কথা ও কাজগুলো।
বা “তোমার দৃষ্টি থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছ।”
ইব্রীয়, শিওল। শব্দকোষ দেখুন।
অনেক ডুমুর চেপে তৈরি করা চাক।